বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও দলটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেছেন, ‘আমরা বেগম খালেদা জিয়ার বিশ্বাসী আইনজীবী। তিনি আমাদের বিশ্বাস করেন। বিদেশি আইনজীবীর বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।’
‘অন্যদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করাকে চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ হবে।’ খালেদা জিয়ার মামলায় পরামর্শক হিসেবে আইনজীবী লর্ড কার্লাইলকে নিয়োগ দেয়ার খবর প্রকাশের পর তাকে উদ্দেশ্য করে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের এমন মন্তব্যের পর অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন মঙ্গলবার এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার মামলার বিষয়ে আগামী ১৩ জুলাই দিল্লীতে সংবাদ সম্মেলন করে লর্ড কার্লাইলের বক্তব্য দেয়ার খবর সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, ‘আইনজীবী হিসেবে এটা চরম বেয়াদবি হবে। ভিন্ন কোনো দেশের ব্যাপারে পয়সার বিনিময়ে যদি অন্য কোনো দেশের আইনজীবী এমন বক্তব্য দেন। একজন বিট্রিশ আইনজীবী অর্থের বিনিময়ে অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে নিয়ে বক্তব্য রাখা চরম ধৃষ্টতার বিষয়।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘লর্ড কার্লাইলের সঙ্গে আমার কোনো দিন দেখা হয়নি, আলোচনাও হয়নি। কাজেই তাকে আমি জানি না। সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি পত্রিকায় এসেছে। তাছাড়া কার্লাইল তো এখনও সংবাদ সম্মেলন করেননি। যতক্ষণ পর্যন্ত সংবাদ সম্মেলন না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমি মনে করি অ্যাটর্নি জেনারেলের এ কথা বলা ঠিক হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কার্লাইল কী বলে সেটা তো আগে শুনতে হবে। কথা না শুনে আগেই যদি বলে দেয় ‘ধৃষ্টতাপূর্ণ’, তাহলে বুঝতে হবে আমি ডোর ওপেন করে দিচ্ছি। তিনি কী বলবেন সেটা আগে দেখি না। বলার আগে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। টাকার বিনিময়ে তিনি এটা করছেন, সেটা কি অ্যাটর্নি জেনারেল দেখেছেন? তাহলে বুঝতে হবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ ড্রিলের (চুক্তি) সঙ্গে ছিলেন। আমি তো দেখিনি, আমি বলবো কিভাবে?’
খালেদা জিয়ার মামলার পরামর্শক হিসেবে লর্ড কার্লাইলকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে কিনা সে বিষয়ে তার কিছু জানা নেই উল্লেখ করে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে আইনগতভাবে বেগম খালেদা জিয়ার মামলার লড়ে যাচ্ছি। এর বাইরে কিছু না। আর এটা জানি, সরকার খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জেল খানায় আটকায় রাখতে চায়। আমরা আইনগতভাবে তাকে বের করতে চাই।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য ব্রিটিশ আইনজীবী লর্ড কার্লাইলকে নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে গত ২০ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে জানায় বিএনপি। তবে আমি বলছি, এ ধরনের মামলা পৃথিবীতে প্রথম।
খালেদা জিয়া আদালতের ব্যাকেশন এবং সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে মুক্তি পাচ্ছেন কিনা? -এমন প্রশ্নের জবাবে জয়নুল আবেদীন বলেন, আমরা মনে করি বাংলাদেশে যে আইন আছে, এই আইনে খালেদা জিয়াকে একদিন আটকে রাখার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন এই ধরনের কোনো মামলা হয়নি। এখানে যা করা হয়েছে, তা ক্ষমতার অপব্যাবহার করার অভিযোগে মামলা। এখানে ক্ষমতার অপব্যাবহার কী করা হয়েছে আপিলে তা দেখাব। কাজেই আমরা মনে করি, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে। আমাদের সঙ্গে আদারর্স (অন্যান্য) কোনো বিষয়ে কথা হয়নি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা প্রেস বিফ্রিং করে জানিয়েছেন তাকে (লর্ড কার্লাইল) পরামর্শক হিসেবে নিয়োগে দেয়া হয়েছে। আমি শুনিনি, আপনার কাছেই এই প্রথম সংবাদটি শুনলাম। আমাদের সঙ্গে কোনো বিদেশি আইনজীবীর বিষয়ে কথা বলা হয়নি। আমরা জানিও না।