মাদকের গডফাদারকে নিয়ে ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’: রাজশাহী-১ আসনে বিএনপি প্রার্থীকে ঘিরে তীব্র বিতর্ক

স্টাফ রিপোর্টার:  ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) মো. শরীফ উদ্দিনকে ঘিরে তৃণমূল নেতাকর্মীদের ক্ষোভ ও আন্দোলন দিন দিন তীব্র হচ্ছে। প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই তাকে বাদ দিয়ে নতুন করে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে প্রতিদিনই বিক্ষোভ-সমাবেশে মাঠে নেমেছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
সর্বশেষ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তানোর উপজেলা সদরে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। মেজর জেনারেল (অব.) মো. শরীফ উদ্দিন এবং মনোনয়নবঞ্চিত অ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেকের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।
অভিযোগ উঠেছে, ঘোষিত প্রার্থী শরীফ উদ্দিন ঢাকায় অবস্থানরত। তিনি এলাকায় এক সময়ের আলোচিত “মাদকের গডফাদার” হিসেবে পরিচিত নওশাদ জামাতকে সঙ্গে নিয়ে ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছেন।
এতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা মনে করছেন, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার মতো অসঙ্গত ও প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে সাথে রাখা রাজনৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য। এমনকি মনোনয়ন প্রত্যাশায় মাঠে যারা ছিলেন, তাদের কাছে যাননি প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া শরীফ উদ্দিন। এমনকি মনোনয়ন বঞ্চিতদের কর্মী সমর্থকদের আস্থায় নিতে না পারায় সংকটে পড়েছেন শরীফ উদ্দিন।
প্রার্থী ঘোষণার পর আরও একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। অভিযোগ রয়েছে—বিগত সময়ে শরীফ উদ্দিন বিএনএম-এ যোগদান করেন এবং তার অনুসারীরা আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে আওয়ামীপ্রীতিভাবাপন্ন আচরণ করে এসেছেন। এসব কারণে তৃণমূল নেতারা তাকে দলের প্রতি অনুগত ও নিবেদিতপ্রাণ হিসেবে দেখতে নারাজ।
৫ আগস্ট ২০২৪ পরবর্তী সময়েও শরীফ উদ্দিনের ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বসহ দলের আদর্শবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগের নথিপত্র স্থানীয় নেতারা দলীয় সভায় উপস্থাপন করেছেন বলেও জানা গেছে।
এছাড়া অ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেকের ওপর হামলা
সংবিধান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার এবং অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে বিএনপি ঘোষিত “রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা” প্রচারণার অংশ হিসেবে তানোর-গোদাগাড়ীতে লিফলেট বিতরণে নামে বিএনপির একটি টিম। এ সময় রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজানের নির্দেশে অ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেকের ওপর বর্বরোচিত হামলা ও সাংগঠনিক কাজে বাধাদানের অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনাও ঘোষিত প্রার্থীর অনুসারীদের দলবিরোধী কর্মকাণ্ডের উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন তৃণমূল নেতারা।
জানা গেছে, মিজান বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা ও হত্যা মামলার আসামি এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে আতাতে যুক্ত ছিলেন। গত ১৭ বছরে তিনি অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে ।
তৃণমূল নেতাকর্মীরা দাবি করছেন—দলের দুঃসময়ে শরীফ উদ্দিন এলাকায় ছিলেন না, কর্মীদের পাশে দাঁড়াননি। বর্তমানে তার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা খুবই সীমিত। এ ধরনের প্রার্থী নিয়ে মাঠে গেলে বিএনপি এ আসনে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে পারে এবং আসন হারানোর ঝুঁকি বাড়বে।
তারা দীর্ঘদিন দলের সঙ্গে থাকা, মাঠে সক্রিয়, সাংগঠনিকভাবে গ্রহণযোগ্য অ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেককে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ভাষ্য—তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত প্রার্থী টিকিয়ে রাখলে আসনটি ঝুঁকির মুখে পড়বে।

Next Post

বাঘায় জোরপূর্বক দোকানঘর দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

বুধ নভে. ২৬ , ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় জোরপূর্বক দোকানঘর দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই ভুক্তভোগীর পরিবার । বুধবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১২ টায় তার নিজ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ভুক্তভোগী হলেন, বাঘা উপজেলার খুদি ছয়ঘাটি গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে সোহেল রানা, তিনি তার দোকানঘর উদ্ধার চেয়ে এই সংবাদ সম্মেলন […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links