অনিয়ম দুর্নীতি করে ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পশ্চিমাঞ্চলের সিএমও এমতেয়াজ ।

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ব্লিচিং পাউডার, ভিম পাউডার কেনার নামে সরকারি অর্থ তোছরুপের হোতা পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে হাসপাতালের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গত প্রায় দুই মাস ধরে অফিস করছেন না। এতে করে থমকে গেছে হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুদক এই কর্মকর্তার কার্যক্রমের বিষয়ে তদন্তে নামায় তিনি ভয়ে অফিসে আসছেন না। সর্বশেষ গতকাল সোমবারও তিনি অফিস করেননি। তাঁর কার্যালয় রাজশাহী রেলওয়ে হাসপাতালে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তিনি ছুটিতে আছেন নাকি কোনো কাজে বাইরে আছেন সেটিও নিশ্চিত করতে পারেনি হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট কেউ।

এ নিয়ে চরম ক্ষোভও দেখা দিয়েছে এ হাসপাতালের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে। তবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপকের দপ্তর সূত্র মতে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ছুটিতে নাই। কিন্তু তিনি কেন অফিস করেননি সেটি জানে না জিএম’র দপ্তরও। তবে এরই মধ্যে গত সোমবার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এএসএম এমতেয়াকে বদলির একটি আদেশ পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে দপ্তরে এসে পৌঁছে। তাঁকে পূর্বাঞ্চলে বদলি করা হয় বলেও নিশ্চিত করা হয়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের দপ্তর থেকে।

রেলওয়ে মেডিক্যালের ১০ কোটি টাকার কাজের চাহিদা পত্র সহ ইজিপি টেন্ডারের নামে পছন্দ মত ঠিকাদারকে কাজ বাগিয়ে দেওয়ার নানা অভিযোগ বরাবর তার উপর পড়েই আছে । তবুও সে অনিয়ম দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত করছেন সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরটিকে । মাসে দুই একদিন অফিস করলেও, তা রেলওয়ে অফিসার্স মেস ছিল চেম্বার । যেখানে বসেই চালাতেন অনিয়মের নানা অপকর্ম ।

সূত্র মতে, গত ২২ নভেম্বর শেষ অফিস করেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এএসএম এমতেয়াজ। এরপর থেকে তিনি আর অফিসে আসেননি। এমনকি নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের বেতন-ভাতাও তুলতে আসনেনি তিনি রাজশাহীতে। তার বেতন-ভাতা কি হয়েছে সেটিও জানেন না সংশ্লিষ্ট কেউ। তিনি বেতন-ভাতা তুলেছেন নাকি তাঁকে নিয়ে গিয়ে কেউ দিয়ে এসেছেন সে সম্পর্কেও কেউ অকিবহাল নেই। এই অবস্থায় হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম পর্যায় থমকে রয়েছে। ২২ নভেম্বরের আগেও তিনি অনিয়মিত অফিস করতেন। এই অবস্থায় থমকে গেছে হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম। এরই মধ্যে গত সোমবার রেল দপ্তর থেকে ওই কর্মকর্তাকে পূর্বাচঞ্চল রেলওয়ে বদলির নির্দেশপত্র এসে পৌঁছে।

রেলওয়ে সূত্র মতে, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের আওতায় সর্বমোট ২৩১টি স্টেশন আছে। এর মধ্যে ৯২টি বন্ধ হয়ে গেছে। আর ৫৮টি ক্ষয়িষ্ণু। এসব স্টেশনে কর্মকর্তাই তেমন নাই। তবে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন এখনো রয়েছে প্রায় ৫০টির মতো। এই ৫০টির মধ্যে ১০টি স্টেশন পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা করা হয় পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার আওতায়। বাকি ৪০টি স্টেশন রয়েছে প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণাধিন ট্রাফিকের আওতায়। এসব স্টেশন পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার নামে বছরের পর বছর ধরে গত ২০১৭ সাল থেকে ২১০৯ সাল পর্যন্ত স্যানেটারির যাবতীয় মালামাল কেনার নামে অন্তত ১০ কোটি টাকা লুটপাট করার অভিযোগ ওঠে সম্প্রতি। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে দুদক। এছাড়াও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিয়মিত অফিস না করাসহ রয়েছে আরো বিভিন্ন অভিযোগ। এসব ফাইলপত্রও এরই মধ্যে জব্দ করেছে দুদক।
অন্যদেকি স্টেশনে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার নামে কোটি কোটি টাকা তোছরুপ করা হলেও রাজশাহী রেলস্টেশনের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন অপরিস্কার থাকায় এখান স্যানেটারি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়।

তবে দুদকের পরবর্তী তদন্তের ভয়ে তিনি গত ২২ নভেম্বরের পর থেকে অফিস করেননি বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এর আগেও তিনি নিয়মিত অফিস করতেন না। মাসে দুই-একদিন অফিসে এসে হাজিরা দিয়ে চলে যেতেন।

তবে এ নিয়ে জানতে চাইলে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এএসএম এমতেয়াজের ফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে ঢাকায় মিটিং থাকায় রাজশাহীতে যেতে পারিনি। তবে গত ২ জানুয়ারি রাজশাহীতে ছিলাম। তবে নানা সমস্যা কাটিয়ে আজ (গতকাল মঙ্গলবার) পূর্বাঞ্চলে যোগদান করেছি। তবে আমি কোনো অনিয়ম করিনি। অভিযোগগুলো সঠিক নয়।’

এদিকে দুদকের রাজশাহী সম্নয় অফিসের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘রেলওয়ের বেশকিছু বিষয় নিয়ে আমরা অনুসন্ধান করছি। অনেক কাগজ পেয়েছি আরো কিছু চাওয়া হয়েছে। এগুলো যাচাই-বাছাই শেষে পরবর্তি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ বলেন, ‘তিনি ছুটিতে ছিলেন না। বিষয়টি আমি শুনেছি। এ নিয়ে হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতিবেদন দিতে বলেছি। তবে তিনি বদলি হয়ে গেছেন।’

 

Next Post

বাংলাদেশ দল পাকিস্তান সফরে গেলেও যাবেন না মুশফিক।

বুধ জানু. ৮ , ২০২০
আভা ডেস্কঃ মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে বৈঠক করেও তেমন কোনো ফায়দা হয়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের। মুশফিক তার সেই আগের সিদ্ধান্তেই অটল রয়েছেন। বাংলাদেশ দল পাকিস্তান সফরে গেলেও যাবেন না মুশফিক। বুধবার সন্ধ্যায় মিরপুরে শেরেবাংলা ক্রিকেট বোর্ডের অফিসে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এমনটি […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links