নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল কালাম আজাদের দূর্নীতি, দায়িত্ব অবহেলার তদন্ত ও সৎ-যোগ্য, কর্মঠ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীবান্ধব চেয়ারম্যান নিয়োগের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ। বুধবার দুপুর ১২ টায় রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত এই স্মারকলিপি প্রদান হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কলামিস্ট প্রশান্ত কুমার সাহা, সেক্টর কমান্ডার ফোরাম মহানগর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী বরজাহান, রাজশাহী প্রেসক্লাব সভাপতি ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান, রাজশাহী প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক আসলাম-উদ-দৌলা, জয়বাংলা পরিষদ আহ্বায়ক ও মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুজ্জামান শফিক, রাজশাহী প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক নূরে ইসলাম মিলন, জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ সদস্য রাজশাহী চেম্বারের সাবেক পরিচালক শফিউল আলম বুলু, সাংবাদিক কাজী রকিবউদ্দিন, আবু কাওসার মাখন, শামসুল আলম প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, জাতির পিতার বাকশাল সরকারের রাজশাহী জেলা গর্ভনর ছিলেন অত্র অঞ্চলের সর্বজন শ্রদ্ধেয় গণমানুষের নেতা জননেতা আতাউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের শোষণ-বঞ্চণা, ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে তিনি বাকশাল কর্মসূচির সাথে দলের বাইরে থাকা রাজনৈতিক সহযোদ্ধা কলকাতার ইসলামিয়া কলেজের পরীক্ষিত বন্ধু ভাষাসৈনিক মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জননেতা আতাউর রহমানকে যুক্ত করে জাতিকে আবারো আশার আলো দেখান।
আমরা জননেতা আতাউর রহমান ও জাতির পিতার অভিন্ন স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে বদ্ধ পরিকর। আমরা গণতন্ত্রের চিহ্নিত শত্রু সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গীবাদ, মৌলবাদ ও ভূমিদস্যূ, লুটেরাদের বিরুদ্ধে শিক্ষানগরী রাজশাহীর সচেতন-বিবেকমান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষদের নিয়ে সামাজিক সচেতনা ও দায়িত্ববোধ তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছি। আপনার সরকারই সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনবান্ধব করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
রাজশাহীর অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই তা দৃশ্যমান হলেও রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে এর বিপরীত চিত্র সমগ্র উত্তরাঞ্চলের মানুষকে হতাশ করেছে। এরমধ্যে ছয় তলাবিশিষ্ট শিক্ষাবোর্ড ভবনে লিফট স্থাপনের টাকা বর্তমান চেয়ারম্যানের অবহেলার কারণে তিন তিনবার ফেরত গেছে। যার বলি হয়েছেন দেশের প্রবীণ নাগরিক একজন সন্মানিত প্রধান শিক্ষক। প্রতিনিয়ত শিক্ষকরা তার দ্বারা অসন্মান-অমর্যাদার শিকার হচ্ছেন। অফিস চলাকালে ঘন্টার পর ঘন্টা ইজিচেয়ারে বর্তমান চেয়ারম্যানের ঘুমানোর কথা এখন ওপেন সিক্রেট। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তার সাথে সমস্যা নিয়ে দেখা করতে চাইলে তিনি তাদের গেট থেকেই ফিরিয়ে দেন। সবার সাথেই তিনি দুর্ব্যবহার করেন। মাসের ৩০ দিনের মধ্যে ২৫ দিনই অফিস করেন না।
সরকারী নিয়ম অনুযায়ী কোন সরকারী কর্মকর্তা ৩ বছরের অধিক সময় ডেপুটেশনে থাকতে পারেন না। কিন্তু রহস্যজনক কারণে বর্তমান চেয়ারম্যান সাড়ে ৪ বছরের অধিক সময় ধরে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে ডেপুটেশনে আছেন। তার বিরুদ্ধে সাড়ে ৪ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। ওই তদন্তও অজানা কারণে ৮ মাস ধরে থেমে আছে।
ওই স্মারকলিপতে আরো বলা হয়, রাজশাহীতে গত ১৫ দিন আগে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে এক সমাবেশ থেকে বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীবান্ধব চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়ার জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নি। তাই আমরা শেষ পর্যন্ত আপনার স্মরণাপন্ন হয়েছি। শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল কালাম আজাদের পরিবারটির আদি নিবাস পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলায়। তার দুই ভাই, শ্বাশুড়ি ও ভায়রা জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে অভিযোগ আছে। তার দুইভাই দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর কট্টর অনুসারী, শ্বাশুড়ি রোকন, ভায়রা এ্যাডভোকেট এজাজ জয়পুরহাট বারের সদস্য ও জামায়াতের রোকন বলে জানা গেছে। শুধু তাই বোর্ড চেয়ারম্যান বিএনপি-জামাত জোট সরকারের মন্ত্রী যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর ডিও লেটার নিয়ে খুলনা সুন্দরবন কলেজ থেকে রাজশাহী কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগে বদলি হয়ে আসেন। এমন ব্যক্তি রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করায় অত্র অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষজন তার দ্বারা প্রতিনিয়ত অপমানিত-লাঞ্ছিত হচ্ছেন। যা বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করছে।
অতএব, আবেদনটি সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে সৎ-যোগ্য, কর্মঠ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীবান্ধব চেয়ারম্যান নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।