নওগাঁ প্রতিনিধিঃ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আগমনকে কেন্দ্র করে কোনো গোষ্ঠী দেশে অহেতুক ঝামেলা সৃষ্টি করতে চাইলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাঁদের রুখতে প্রস্তুত রয়েছে। ১৭ মার্চ দেশে কোনো অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হলে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ রোববার নওগাঁর ধামইরহাটে মাদক কারবারীদের আত্মসমপর্ণ ও নতুন থানা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, দেশকে যারা অচল করার ব্যর্থ চেষ্টা করেছিল, তারা একসময় ঘাপটি মেরে বসেছিল তারাই আজ জঙ্গী হামলা চালনোর চেষ্টা করছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অকৃতিম বন্ধু দেশ। সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। তিনি ছাড়াও আমাদের অন্যান্য বন্ধু দেশের সরকার প্রধানরাও উপস্থিত থাকবেন। বিদেশে অতিথিদের উপস্থিতিতে দেশের কোনো গোষ্ঠী যদি দেশে অহেতুক ঝামেলা সৃষ্টি করতে চায়, তাঁদের রুখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।’
সিমান্তে হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিমান্ত হত্যা বন্ধের বিষয়ে ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে আমার প্রায় কথা হয়। সীমান্তে গতদুবছর হত্যাকাণ্ড বেড়েছে আমরা এই নিয়ে আলাপ আলোচনা করে আগের মত জিরো টলারেন্সে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিজিবি এবং বিএসএফের মধ্যে আলোচনা করেছি।
নওগাঁর ৫৬ জন চিহ্নিত মাদক কারবারীদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী মাদকের কিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। মাদককে রুখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের সচেতনতা কর্মসূচির ফলে মাদক ব্যবসায়ীরা, চোরাকারবারিরা আজকে অন্ধকার পথ ছেড়ে আলোর পথে ফিরে আসছে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ৮৮ হাজারের ওপরে কারাবন্দী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩০ শতাংশ মাদক ব্যবসায়ী কিংবা মাদকসেবী। এতেই বোঝা যায় বর্তমানে দেশে মাদকের ছোবল কতটা? মাদকের এই ভয়াবহতা রুখতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। মাদকের সরবরাহ বন্ধ করতে দেশের সীমান্ত এলাকায় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রুখতে মাদককে রুখতেই হবে। এই কাজে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পাশাপাশি সমাজের সকল মহলের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
আত্মসমপর্ণকারী মাদক কারবারিদের স্বাগত জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘যাঁরা আজকে অন্ধকার জগৎ ছেড়ে আলোর পথে আসলেন তাঁদেরকে স্বাগত জানাই। শুধু আত্মসমর্পণের জন্য আত্মসমর্পণ যেন না হয়। ভবিষ্যতে এই প্রতিজ্ঞা ধরে রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’
পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বক্তব্য রাখেন, খাদ্যমন্ত্রী ও নওগাঁ-১ আসনের সাংসদ সাধন চন্দ্র মজুমদার, নওগাঁ-২ আসনের সাংসদ শহীদুজ্জামান সরকার, নওগাঁ-৬ আসনের সাংসদ ইসরাফিল আলম, নওগাঁ-৩ আসনের সাংসদ ছলিম উদ্দিন তরফদার, নওগাঁ-৫ আসনের সাংসদ নিজাম উদ্দিন জলিল, নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মালেক, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি একেএম হাফিজ আক্তার, জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদ প্রমুখ।