নীলফামারী প্রতিনিধিঃ মৌসুম শুরুর আগে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার হাট-বাজারে আগাম বেচা-কেনা চলছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের। কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না এ ব্যবসা।
এ জাল দিয়ে নিধন করা হচ্ছে দেশি প্রজাতির সব ধরনের ও কার্প জাতীয় মাছের পোনা। ফলে উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদী সহ তিস্তা চরাঞ্চলে নানান প্রজাতির মাছের বংশ বিপন্নতার মধ্যে পড়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
উপজেলার সদর বাবুরহাট বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, ৫/৬ জন জাল ব্যবসায়ী অভিনব কায়দায় বিক্রি করছেন কারেন্ট জাল। একজন জাল বিক্রেতা জানালেন, কেবল আমি না, দীর্ঘদিন ধরেই এ ব্যবসা করে আসছে সবাই।
জাল কিভাবে বিক্রি করেন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জাল বিক্রি হয় বিভিন্ন হিসেবে। যেমন খুচরা-পাইকারী। বর্তমানে এক বান্ডিলের জালের সর্বনিম্ন দাম ১২০০ টাকা। জালের মান বুঝে বিক্রি হয় বেশি টাকায়।’
স্বপন নামে একজন ক্রেতা জানালেন, এক বান্ডিল জাল কিনতে লাগছে প্রায় ১৪০০ টাকা। তিনিও আরও বলেন, ‘জালের দাম নির্ভর করে জালের মানের ওপর।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার খোড়ারডাঙ্গা হাট, খগারহাট, টুনিরহাট, শুটিবাড়ীর হাট, চাপানীর হাটেও বিক্রি হচ্ছে এ জাল। বেচা-কেনা থেমে নেই ছোট-বড় আরও অনেক বাজারেও।
এদিকে, আগাম বৃষ্টির পানি বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন জায়গা জলাশয়ে পরিণত হলে উপজেলার বিলগুলোতে প্রকাশ্যে কারেন্ট জাল পাতছেন মাছ শিকারিরা। এতে ধরা পড়ছে দেশি প্রজাতির বিভিন্ন ধরনের মাছ। কার্প জাতীয় মাছের পোনাও ধরা পড়ছে। এ সব মাছের কেনা-বেচা চলছে গ্রামের হাট-বাজারে। বিক্রি হচ্ছে উপজেলা সদরস্থ বাবুরহাট বাজারেও।
ডালিয়া চাপানী এলাকার সুখেন রায় নামে এক জেলে বলেন, ‘বাদাই জাল দিয়ে মাছ ধরা হয় রাতের শেষ ভাগে। আর কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা হয় দিনে। কারেন্ট জালে আটকা পড়া মাছ বেশি সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে না। বাজারে তাজা মাছের চাহিদা বেশি।’
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শামীমা আক্তারের সঙ্গে কথা হলে তিনি প্রথমে বলেন, ‘এ বছর বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে বাজারগুলোতে মনিটরিং করা সম্ভব হয়নি এখনও। তবে এর আগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও বিল থেকে বিপুল পরিমাণের কারেন্ট ও বাদাই জাল আটকের পর জরিমানা করে আটককৃত সেই জালগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এবারও খুব তাড়াতাড়ি কারেন্ট ও বাদাই জাল আটকের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’