আভা ডেস্ক: তিন দিন পর আজ বৃহস্পতিবারও শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় লঞ্চঘাট ধসে পদ্মার স্রোতে নিখোঁজ ১০ জনের সন্ধ্যান মেলেনি। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নিখোঁজদের স্বজনরা নৌকা ট্রলারযোগে সন্ধান কাজ অব্যাহত রেখেছেন।
পদ্মা পাড়ে লাশের অপেক্ষায় আজ সকালে স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা গেছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার পদ্মার ভাঙনে নড়িয়া উপজেলার সাধুরবাজার লঞ্চঘাট ধসে পদ্মায় নিখোঁজ হন ১০ জন।
নিখোঁজরা হলেন- নড়িয়া উপজেলার পাচুখারকান্দি গ্রামের মোশারফ চোকদার, বাড়ৈপাড়া গ্রামের জামাল ছৈয়াল, কেদারপুর গ্রামের মজিবর (মজু) ছৈয়াল, শাহজাহান বেপারি, মোক্তারচর এলাকার রশিদ হাওলাদার, চাকধ গ্রামের নাছির হাওলাদার, নাছির করাতি, পিরোজপুরের আইটেল মোবাইল কোম্পানির এরিয়া সেলস এক্সিকিউটিভ শেখ আলামিন হাসান, অন্ত মকদম, উত্তর কেদারপুর গ্রামের গুপি দাস।
নড়িয়া থানা ও শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার পদ্মার ভাঙনে নড়িয়া উপজেলার সাধুরবাজার লঞ্চঘাট ধসে পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়। ঘাটে থাকা দর্শনার্থী, দোকানপাট ও মালামাল সরিয়ে নেয়ার কাজে নিয়োজিত করা হয় কমপক্ষে ৪০ জন।
এর একপর্যায়ে পদ্মার স্রোতে নদীগর্ভে সাতটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দুটি ট্রলি, একটি মাহেন্দ জিপ, ৩টি মোটরসাইকেল স্রোতে বিলীন হয়ে যায়। এ সময় স্রোতের টানে নদীতে পড়ে যান ৪০ জন।
স্থানীদের সহায়তায় বেশ কিছু লোক তীরে উঠতে পারলেও এখনও ১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
ওই দিন সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে নেমে প্রবল স্রোতের কারণে উদ্ধারকাজে ব্যর্থ হয়। তারা নৌকা ট্রলারযোগে নদীর এ প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে হন্য হয়ে খুঁজছেন। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নিখোঁজদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজ শাহজাহান বেপারির মেয়ে শাহনাজ বেগম বলেন, আমার বাবা একজন রিকশাচালক। তিনি দোকানপাট সরানোর কাজে সহায়তা করতে এসে নিখোঁজ হয়ে যান। তিন দিনে ও কোনো সন্ধান পাইনি। লাশটা পেলে দাফন করে শান্তি পেতাম।
পিরোজপুরের রুহুল আমি বলেন, আমার ভাই শেখ আল আমিন হাসান আইটিএল মোবাইল কোম্পানির সেলস এক্সিকিউটিভ। তিনি এ এলাকায় মার্কেট ভিজিটে এসে ভাঙনের শিকার হয়ে নিখোঁজ হন। আমার ভাই সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী। এখন আমরা ভাইয়ের লাশও পাচ্ছি না।
ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক নিয়াজ আহমেদ বলেন, নৌকা-ট্রলারযোগে সন্ধানকাজ অব্যাহত রেখেছি। গত তিন দিনেও কোনো লাশ পাইনি। এখনও ১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, সাধুরবাজার লঞ্চঘাট বিলীন হওয়ার পর ভাঙন অব্যাহত আছে। উদ্ধার হওয়া আহতদের চিকিৎসা চলছে। নিখোঁজদের সন্ধান অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসন তৎপর। নিখোঁজ ও আহতদের পরিবারকে সরকারিভাবে সাহায্যের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
যুগান্তর