নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে করোনা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় ১১ জুন শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে সর্বাত্বক কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়। রোববার (১৩ জুন) ছিল লকডাউনের তৃতীয় দিন। লকডাউন পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে সাহেববাজারসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে যান রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। তিনি সাহেব বাজারের বিভিন্ন মার্কেট পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের বলেন, রাজশাহীতে সর্বাত্বক লকডাউন সফলভাবে পালন হচ্ছে। জনগণ ও ব্যবসায়ীরা এটাকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছেন। তার প্রমান সাহেববাজরসহ অন্যান্য মার্কেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান ছাড়া সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল আরও জানান, জনগণের কথা চিন্তা করে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী রাজশাহীতে লকডাউন চলছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মোট ১৩জন মৃত্যুবরন করলেও এর মধ্যে দুইজন ছিল রাজশাহী শহরের। বাকিরা বাহিরের বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, দ্রুত করোনা সংক্রমন রোগি শনাক্ত করতে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা চলছে। গতকালকের ফলাফলে দেখা গেছে শতকরা ২৪ ভাগ মানুষ সংক্রমিত হয়েছে। তাদের বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে তারা হাসাপাতালে ভর্তি হবেন বলে জানান তিনি। এভাবে পরীক্ষা করতে পারলে দ্রুত করোনা সংক্রমন থেকে জনগণকে রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, দোকানপাট বন্ধ থাকলেও উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েদের বাজারে বেশী ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে। তারা আসলে লকডাউন দেখতে বাজারে এসেছে। এটা ভাল নয়। লকডাউন চলাকালীন এবং করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অতি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাড়ির বাহিরে না আসার জন্য আহ্বান জানান তিনি। সেইসাথে প্রয়োজনে বাহিরে আসলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলাচল করার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।
এছাড়াও লকডাউন আরো বেশী করে সফল করতে ইতোমধ্যে আবারও আরএমপি পুলিশ কমিশনারের সহযোগিতা চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি আরো বেশী পুলিশ ফোর্স মাঠে দিয়েছেন। সেইসাথে রয়েছে আনসার ও র্যাব। জনগণ এই লকডাউন মানতে না চাইলে প্রয়োজনে প্রশাসন কঠোর হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আর পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১৭ তারিখের মধ্যেই পরবর্তী লকডাউন দেয়া বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে টিসিবির পণ্য বিক্রয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বল্প আয়ের মানুষের কথা বিবেচনা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নগরীর ৬টি পয়েন্টে টিসিবি এর পণ্য বিক্রয় করার অনুমতি দেয়া হয়। সেইসাথে করোনা পরীক্ষায় মানুষকে আরও বেশি আগ্রহী করে তুলতে টিসিবির পণ্য করোনা টেস্টের বুথের পাশে রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ সময় করোনা টেস্ট করিয়ে তারপর পণ্য কিনতে মানুষকে আগ্রহী করা হয়।
তবে করোনা টেস্টে মানুষের ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। গতকাল থেকে প্রশাসন আরো কঠোর অবস্থানে থাকবে। কোন ব্যক্তি টিসিবির পণ্য ক্রয় করতে গেলে অবশ্যই র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করে পণ্য ক্রয় করতে হবে। আর এই পরীক্ষার ফলাফল সিট মানে চিরকুট না দেখালে পণ্য না দেয়ার জন্য বিক্রেতাদের নির্দেশ দেন তিনি। এর ব্যাতিক্রম হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
এসময়ে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু আসলাম, বোয়ালিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল হায়াত, সহকারী কমিশনার (এনডিসি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত ও সহকারী কমিশনার সুমন চৌধুরী প্রমুখ।