মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ আম্পান ।

ভোরের আভাঃ দেশে এমন একসময় সুপার সাইক্লোন আম্পান আঘাত হেনেছে, যখন করোনা মহামারী সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। তারপরও জীবন চলমান, সবকিছু মোকাবেলা করেই মানুষকে এগিয়ে যেতে হয়।

আশার কথা, দুর্যোগ মোকাবেলায় আমরা যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করেছি এবং আমাদের এ অর্জনের প্রশংসা সারা বিশ্বে স্বীকৃত। সর্বশেষ কয়েকটি ঘূর্ণিঝড় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পারা থেকেই এর সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে।

আম্পান সম্পর্কে বলা হচ্ছিল, এটি শতাব্দীর অন্যতম শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়, যার ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা অনেক বেশি হবে বলে সতর্ক করা হয়েছিল বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে। এ সম্পাদকীয় লেখা পর্যন্ত দেশে আম্পানের আঘাতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।

বস্তুত এ ধরনের দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র পেতে কয়েক দিন লেগে যায়। এখন আমাদের উচিত হবে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে তা মোকাবেলার পদক্ষেপ নেয়া।

বর্তমান সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের সফলতা এসেছে মূলত আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ থেকে। মানুষ ও গবাদিপশুকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া, তাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি এবং কেউ যেতে না চাইলে তাকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করার মধ্য দিয়ে মানুষ ও পশুর প্রাণহানি অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ক্ষেত্রেও আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়। উপকূলীয় এলাকার লাখ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়। উপকূলীয় মানুষের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতাও তৈরি হয়েছে বলা যায়।

বারবার ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানায় এ দুর্যোগ মোকাবেলার অভিজ্ঞতাও সঞ্চিত হয়েছে উপকূলবর্তী মানুষের। তবে ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোয় মূল চ্যালেঞ্জের বিষয় হল আঘাত-পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে পুনর্বাসন করা এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া।

আমরা আশা করব, করোনা মোকাবেলায় বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রণোদনা ঘোষণা করে কিছুটা চাপে থাকলেও ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী পুনর্বাসনেও মনোযোগ দেবে সরকার। বর্তমানে করোনা মহামারী সৃষ্ট বিশ্ব পরিস্থিতিতে বাইরের দেশ থেকে সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা কম।

সেক্ষেত্রে আমাদের নিজেদের সম্পদ দিয়েই মোকাবেলা করতে হবে দুর্যোগ সৃষ্ট পরিস্থিতি। এক্ষেত্রে আমাদের সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে থাকতে হবে সতর্ক। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাত যেন করোনাকবলিত দেশবাসীর জন্য ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দেখা না দেয়।

দুই দুইটি বড় বিপর্যয় একক প্রচেষ্টায় কাটিয়ে ওঠার মধ্য দিয়ে বিশ্বকে দেখিয়ে দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে আমাদের সামনে যে, আমরা নিজেরাই নিজেদের রক্ষা করার সামর্থ্য রাখি। আমরা তা পারব আশা করি।

সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, এনজিও এবং সামর্থ্যবান প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় এলাকার মানুষের পুনর্বাসনে, তাদের সহায়তায় সর্বোত্তম চেষ্টা করা। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঈদের খুশি সবার মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়ার মধ্য দিয়ে আমরা দুটি দুর্যোগই কাটিয়ে উঠতে পারব- এটাই প্রত্যাশা।

 

Next Post

মমতার সাথে আম্পানের সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী

শুক্র মে ২২ , ২০২০
আভা ডেস্কঃ সুপার সাইক্লোন আম্পানে ক্ষয়ক্ষতির খবর নিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে ফোন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি সহমর্মিতা জানান। শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ফোন করেন।প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বুধবার বিকাল ও রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে উপকূলবর্তী অঞ্চলে ব্যাপক […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links