নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর মতিহার থানার এসআই শাহাবুলের বিরুদ্ধে গৃহবধূকে যৌন হয়রানিসহ মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। দীঘদিন যাবত একক থানায় থাকায়, জড়িয়ে পড়েছে মাদক ব্যবসায় । প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের আড়াল করে নিরিহ মানুষজনকে মিথ্যা মামলা সহ হয়রানি ও আটক ব্যানিজ্যে জড়িত হয়েছে । মতিহার থানার সাধারণ মানূষ অতিষ্ঠ হয়ে অভিযোগ করেছে আর এম পি পুলিশ কমিশনার ও আইজিপি কমপ্লেন সেলে ।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মতিহার থানার এসআই শাহাবুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবত এ থানায় থাকার কারণে এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে মাসিক টাকা নিয়ে মাদক ব্যবসা করার সুযোগ দিচ্ছে।
যেসকল মাদক ব্যবসায়ীকে সুবিধা বা নিজে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে আছেন তারা হলো, মাদক সম্রাট পালা ও কাদো । কিছুদিন আগেও পালা ও কাদোকে আটক করে দুই লক্ষ টাকা নিয়েছে ছেড়ে দিয়েছে এস আই শাহাবুল ও এ এস আই আনোয়ার । পালা ও কাদো কে হাতে রেখে এস আই সাহাবুল নিরিহ মানুষকে আটক করে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন, অন্যথায় হিরোইন মামলায় চালান দেয় । প্রতিটি মামলার হিরোইন ইয়াবা দিয়ে থাকে পালা ও কাদো । বেশ কিছু দিন আগে ডাসমাড়ি শ্যামপুর এলাকার এবাদত, পিতা বিলাত উদ্দিনকে আজিজুলের মোড় থেকে কোন মাদক ছাড়াই আটক করে এসআই শাহাবুল। পরে আটককৃত পরিবারের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে সে। এবাদতের পরিবার সেই টাকা দিতে অস্বীকার করলে ২৬ গ্রাম হেরোইন দিয়ে মিথ্যা মামলা দেয়। একই দিনে চরশ্যামপুর এলাকার শরিফ, পিতা আকবর আলীকে কোন কিছু ছাড়ায় আটক করে থানায় নিয়ে গিয়ে ২৬ গ্রাম হেরোইনসহ মামলা দেয়।
অপরদিকে, ওই দিনে চরশ্যামপুরের মোবারক এলাকায় না থাকলেও মিথ্যা পলাতক আসামী করে দুইটি মাদক মামলা দায়ের করে তার বিরুদ্ধে। এলাকার মোস্তাকিন নামের এক রিক্সা চালককে রাস্তা থেকে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়ে তার পরিবারের কাছে টাকা দাবি করলে দিতে না পারায় তাকে হেরোইনসহ মামলা দেয়। বর্তমানে সে জেল হাজতে আছে। এভাবেই গত ৭ দিন আগে কোলিডোর মোড় এলাকার হাসান নামের একজন কে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হেরোইন দিয়ে মামলা দেয় এসআই শাহাবুল। এছাড়া মতিহার থানা এলাকার কিছু চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীর কাছে থেকে মাসিক টাকা নিয়ে মাদক ব্যবসা করার সুযোগ করে দিয়ে চরম আইনের অপব্যবহার করছে এসআই শাহাবুল। এলাকার প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ী যাদের কাছে থেকে মাসিক চাঁদা নেয় তার মধ্যে রয়েছে, ডাসমাড়ি মিজানের মোড় এলাকার জালালের ছেলে আইযুব, ওবাইদুলের ছেলে মিঠু, চাহারের ছেলে আক্তার, আসকানের ছেলে কামরুল, রুপচানের ছেলে বুলবুল, জেবেরের ছেলে আরিফ, সামাদের ছেলে আসলাম, আনারুলের বউ গোলে, একছেদের মেয়ে কাদু আকবরের ছেলে সুমন, ডাসমারী খোজাপুর এলাকার মৃত মোক্তারের ছেলে খাদেমুল ইসলাম পালা, মোটা জাকা, বকুল, মিলন, কামরুল, ফয়সাল, জাহাজ ঘাট এলাকার সুরুজ (বর্তমানে জেলে) জিল্লুর ছেলে বাবু, মিজানের মোড়ের নুর মোহাম্মাদের ছেলে আলিম । অন্যদিকে যাদেরকে দিয়ে ব্যবসা করাচ্ছেন তারা হলো, আনারুলের স্ত্রী চম্পা, বুলবুলের স্ত্রী রুমা, আরিফের স্ত্রী রুনা এসব মাদক ব্যবসায়ীর কাছে থেকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময় এসআই শাহাবুল এলাকায় তাদের প্রাকাশ্যে মাদক ব্যবসা করার সুযোগ করে দিয়েছে।
নামের মিল রেখে আটক ব্যানিজ্যে মুল হাতিয়ার হিরোইন । যাকে যখন খুশি আটক করে হিরোইন মামলার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন এস আই সাহাবুল অন্যথায় হিরোইন দিয়ে চালান করেন ।
নাম প্রকাশের অনৈচ্ছুক জনৈক্য বলেন পালা ও কাদোর কথা মত নুর মোহাম্মদের ছেলে রুপচান ও রুপচানের ছেলে বাদশা, টুটুল, বুলবুলকে মিথ্যা মামলা দেয় অন্য মাদক ব্যবসায়ীকে আড়াল করার জন্য । মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন, হামেদের ছেলে ইয়াছিন, সুরমানের ছেলে কাবিল, জালালের ছেলে রুবেল, বারি, । যাদের আটক করে মোটা অংকের টাকা দাবি করা হয়েছিল, টাকা না দেওয়ায় মাদক ব্যবসায়ীর নামের মিলে কারনে তাদেরকে মিথ্যা মামলা দেয় এস আই সাহাবুল । এদিকে বিশ্বাস্থ একটি সুত্র নিশ্চিত করে, জিনা ও বাবু নামের এক গরু ব্যবসায়ীকে আটক করে এস আই সাহাবুল ও এ এস আই আনোয়ার । আটকের পর জিনার নিকট থেকে ৭০ সত্তর হাজার, বাবুর নিকট থেকে ৫০ পঞ্চাশ হাজার টাকা নেয় । অপর এক ঘটনায় ভ্যানচালক রবিউলের ছেলেকে আটক করে ১০ দশ হাজার টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগ আছে । অন্য এক ঘটনায় আলমের মেয়ে রোকসানা কে আটক করে নেয় ৫০ হাজার টাকা । এদিকে খোজাপুর এলাকার সোহেল, প্রিয়া, মেহেদী নামের তিনজনের নিকট থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে ।
গৃহবধূকে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে আরো বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক ডাসমাড়ি এলাকার এক গৃহবধূ কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে মাদকসহ মামলা দেয়ার হুমকি দেয়। মূলত মতিহার থানায় এসআই শাহাবুল দীর্ঘদিন যাবত থাকার সুবাদে এলাকার মাদক সিন্ডিকেটের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাদের কে আটক না করে এলাকার নিরীহ সাদামাটা মানুষদের আটক করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। সেই টাকা দিতে না পারলে মাদক মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে দীর্ঘদিন যাবত। তার অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তার বিভিন্ন অন্যায় অত্যাচারের বিষয় সুষ্ঠ তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ মতিহার থানা থেকে ক্লোজড করে নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে শনিবার বিকেলে আরএমপি পুলিশ কমিশনার, ডিসি, মতিহার জোন এবং রাজশাহীর সকল গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে অভিযোগের কপি দেওয়া হয়েছে ।
এ ঘটনায় আরএমপি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সদর) মিডিয়া মুখপাত্র আব্দুল কুদ্দুস জানান, মতিহার থানার এস আই শাহাবুলের বিরুদ্ধে এর আগেও অনেকে অভিযোগ আছে। অভিযোগগুলো তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।