ভূমিদস্যু আলমগীর মেম্বারের বিরুদ্ধে পুকুর খনন বন্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ধূরইল ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার আলমগীর হোসেন এর বিরুদ্ধে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় জনগণ।

এর আগে সাবেক জেলা প্রশাসক আব্দুল হামিদ পুকুর খনন বন্ধে আলমগীর মেম্বারের নামে যেখানে পাবে সেখান গ্রেফতার করা হবে বলে হুলিয়া জারি করেন এবং তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও হয়। ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি ও এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় রাজনৈতিক ফাঁক ফোকর দিয়ে বেঁচে যায় সে। আর এ অবৈধ কাজে তাকে সাহায্য করেন জেলা যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন। পুকুর খননের মাটি পাকা রাস্তায় বহনের ফলে নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের সরকারি রাস্তা। ঘটছে দূর্ঘটনা।

বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, মোহনপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও  প্রেসক্লাব সভাপতি বরাবর পাঠানো লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে জানা গেছে, জেলার মোহনপুর উপজেলার ধুরইল বিলে ভুমিদস্যু সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সংঘবদ্ধ একটি চক্র বিভিন্ন এলাকায় তিন ফসলী জমিতে পুকুর খনন করে মাটি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এর আগে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আলমগীর মেম্বার ও তার লাঠিয়াল বাহিনী সিন্ডিকেট অত্র ধুরইল ইউনিয়ন সর্বত্র ইতিমধ্যেই শত শত বিঘা তিন ফসলী জমিতে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রি করে গড়েছেন টাকার পাহাড়।

পুকুর খনন বন্ধে বাঁধা হওয়ায় নবিন প্রবীণসহ অনেককে মারধোর করেন ভুমি খেকো মেম্বার আলমগীর মেম্বার ও তার লোকজন।

গত কয়েকদিন আগে আলমগীর মেম্বারের ডানহাত ধুরইল পূর্বপাড়া মৃত নূর মোহাম্মদের ছেলে আক্কাস আলী (৫৫) ধূরইল মৌজার কাম বিলে ধানী জমিতে পুকুর খননের উদ্দেশ্যে ভেকু মেশিন নামালে ফসলী জমি রক্ষায় স্থানীয়রা বাঁধা প্রদান করেন। এঘটনায় আলমগীর মেম্বার ও তার লোকজন হাজির বাড়ির আলতাফ নামে একজন প্রবীণকে ব্যাপক মারধোর করেন। এরপর যে কোন মূল্যে পুকুর খনন করবেন বলে চ্যালেন্জ ছুড়ে দেন স্থানীয়দের। ঘটনার পর মোহনপুর থানা পুলিশ এলাকায় টহল দিয়ে চলে যায় এরপর আবারো এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ালে স্থানীয় চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের হস্তক্ষেপে পরিবেশ ঠান্ডা হয়। এরপর ১১ মার্চ শনিবার  আবারো মাটি কেটে পুকুরের পাড় তৈরী করা শুরু করেন।

অভিযোগে আরো জানা গেছে, স্থানীয় সরকারের একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হওয়ার কারনে ক্ষমতার অপব্যবহার ও জনসাধারণকে জিম্মি করে সরকারি নিয়মনীতি অমান্য ও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রায় ১০বিঘা জমিতে পুকুর খননের কাজ অব্যাহত রেখেছে মেম্বার ও তাঁর লোকজন। বর্তমানে যেখানে পুকুর খনন করা হচ্ছে সেখানে সামন্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা তৈরী হয়ে শত শত বিঘা জমি তলিয়ে যাবে এবং কোন ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবেনা। জমির মালিকদের অনুমতি ছাড়াই ও স্থানীয়দের বাঁধা উপেক্ষা করে আলমগীর মেম্বার জোর করে পুকুর খনন করছেন। বাঁধা দিলে বিভিন্নভাবে হয়রানি, হুমকি ধামকিসহ বি়ভিন্ন মামলায় জড়ানোর ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। বর্তমান ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন ইতিমধ্যেই এলাকায় প্রায় ৬০০ বিঘা আবাদি জমিতে পুকুর খনন করেছেন। এই ভূমিদস্যু আলমগীর ও তার লাঠিয়াল বাহিনীর বিরুদ্ধে পুকুর খনন বন্ধে ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়না। আর যারা মুখ খুলে তাদের ভাগ্যে জুটে মারধোরসহ হুমকি ধামকি ও হয়রানি। খাদ্যশস্য স্বনির্ভরতার জন্য আবাদি জমি ও পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন আবেদনকারীরা।

প্রেসক্লাবে অভিযোগ জমা হওয়ার পর স্থানীয় সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে ফোন করায় ১৬ মার্চ সন্ধ্যায় মোহনপুর থানা পুলিশের সহযোগিতায় সহকারি কমিশনার ভূমি প্রিয়াংকা দাশ ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আলমগীর মেম্বারকে পুকুর খনন ও রাস্তায় মাটি বহনের অপরাধে নগদ ১০ হাজার টাকা ও মৌগাছি গ্রামের মৃত আবেদ আলীর ছেলে আলালকে একই অপরাধে ১০ হাজার এবং পোল্লাকুড়ি গ্রামের ভেকু দালাল মেরাজুলকে খানপুর বাগবাজারে পুকুর খনন ও রাস্তায় মাটি বহনের অপরাধে নগদ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এসময় সবাইকে ভবিষ্যতে পুকুর খনন, রাস্তায় মাটি বহন ও বিক্রয় করা যাবেনা বলে হুশিয়ারি করা হয়েছে এবং রাস্তায় পড়ে থাকা মাটি নিজ দ্বায়িত্বে পরিস্কার করার আদেশ করা হয়েছে।

এবিষয়ে ইউপি সদস্য আলমগীর মেম্বার মুঠোফোনে বলেন, খননকৃত পুকুরটি আমার নয়। আমার সহযোগিতায় এটি খনন করছেন জেলা যুবলীগনেতা আনোয়ার হোসেন চাচা। যত খুশি পারেন আমার বিরুদ্ধে লিখেন কিছুই করতে পারবেন না।

এবিষয়ে জেলা যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন সরাসরি স্থানীয় সাংবাদিক ও পুলিশের সামনে বলেন, আমার পৈতৃক সম্পতিতে আমি পুকুর খনন করছি তাতে প্রশাসন ও আপনাদের এত মাথা ব্যাথা কেন? এসময় তিনি উচ্চস্বরে কথা বলেন এবং রক্ত চক্ষু দেখান।

এবিষয়ে মোহনপুর সহকারি কমিশনার ভূমি প্রিয়াংকা দাশ বলেন, মোহনপুর থানা পুলিশকে সাথে নিয়ে পুকুর খনন, মাটি বহন অপরাধে ৩টি স্থানে ৩ জনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

Next Post

রাজশাহীতে স্কুল শিক্ষককে নারী দিয়ে ফাঁসিয়ে অর্থ আদায়

শুক্র মার্চ ১৭ , ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজশাহী মহানগরীতে একজন শিক্ষককে পরিকল্পিতভাবে নারী দিয়ে ফাঁসিয়ে, ঘরে ঢুকিয়ে উলঙ্গ করে তা মোবাইলে ধারণ করে মুক্তিপণ আদায় ও চাঁদাবাজিসহ নানান অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে আরএমপি’র এয়ারপোর্ট থানাধীন বায়া পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল রাসেদ খাঁনের বিরুদ্ধে। গত ৫ মার্চ নগরীর দাশপুকুর এলাকায় একটি বাসায় ঐ শিক্ষকের উলঙ্গ ভিডিও ধারণ ব্লাকমেইল […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links