সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মা ও পুলিশ সদস্য বোনকে ফাঁসানোর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর মোহনপুরে বেড়াতে এসে নিজ মা ও বোনদের অভিনব কৌশলে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে এম সুলতান আহম্মেদ (৩৮) নামে এক নাটকবাজ ছেলের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে সুরাইয়া বেগম হ্যাপী (২৯) নামে এক নারী তার ভাই এম সুলতান আহম্মেদের বিরুদ্ধে মোহনপুর থানায় ২৭ মে ২৩ শনিবার একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন।

এম সুলতার আহমেদ রাজশাহী আঞ্চলিক কর অফিসের স্টেনো (মুদ্রাক্ষরিক) পদে কর্মরত। সে মহানগরীর রাজপাড়া থানা ডিঙ্গাডোবা এলাকার প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান মোল্লা ও বেগম আম্বিয়া সুলতানা দম্পতির একমাত্র ছেলে।

সাধারণ ডায়েরী ও ভুক্তভোগী প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী বেগম আম্বিয়া সুলতানা

ও তার মেয়েদের মাধ্যমে জানা গেছে, গত ২৬ মে শুক্রবার দুপুর আনুমানিক বারোটার সময় ছোট মেয়ে সুরাইয়া বেগম হ্যাপীর বাড়িতে বেড়াতে আসেন তাঁর মা বেগম আম্বিয়া সুলতানা ও দুই মেয়ে শামীমা বেগম সুইটি বাংলাদেশ রেলওয়েতে কর্মরত, মেয়ে জামাই মামুনুর রশিদ তিনি বাংলাদেশ বেতারে রাজশাহীতে কর্মরত, সুমাইয়া বেগম লাকী বাংলাদেশ পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর।  তিনি রাজশাহী সিআইডিতে কর্মরত আছেন। একই দিন হ্যাপির বাড়িতে বেড়াতে আসেন তার ভাই এম সুলতান আহম্মেদ । তারা সবাই এক সাথে দুপুরের খাবার খান।

এরপর সুরাইয়া বেগম হ্যাপী তার ভাই সুলতানকে বলে ভাই কয়েক বছর হল আমাকে সরকারি চাকুরি দিবেন বলে দশ লাখ টাকা নিলেন চাকুরিতো দিলেন না  কবে টাকা ফেরত দিবেন একথা বলতেই ভাই সুলতান উত্তেজিত হয়ে অন্যায় অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করিতে থাকে। এসময় সুলতান তার মা ও দুই বোনের ওপর চড়াও হয় এবং তাদের মারপিট করে। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য পর্যন্ত গড়ালে ইউপি সদস্য মেজর তার লোকজন নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে জানতে পারে সুলতান তার মা ও বোনদের সাথে মারধোরসহ জঘন্য আচরন করেছেন। এ ঘটনায় উপস্থিত ইউপি সদস্যসহ অন্যান্য লোকজন সুলতানকে তার মা ও বোনদের কাছে ক্ষমা চাইতে বলে এবং সে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সে ক্ষমা চায়। বিষয়টি নিয়ে ভবিষ্যতে কেউ যেন  বাড়াবাড়ি করতে না পারে সে কারণে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ তিন শত টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত করে আপোশ মিংমাসা করে দেয়।

পরবর্তীতে যে যার মত হ্যাপির বাড়ি হতে চলে গেলেও সুলতান মায়ের সাথে থেকে যায়। ঐরাতে সুলতান আহমেদ তার মা বোন সহ অন্যান্যদের ফাঁসানোর হীন চক্রান্ত  লিপ্ত হয় এবং গভীর ষড়যন্ত্রের পথ খুজতে থাকে। সে তার ব্যবহৃত পালসার মোটরসাইকেলটি ছোট বোন হ্যাপির বাড়ির সামনে ফেলে রেখে মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ, ক্রেডিটকার্ড হারানোর কথা বলে নিজের পরনের কাপড় চোপড় ছিড়ে মাটিতে গড়াগড়ি করিয়া চিৎকার চেচামেচি করে মানুষ জড়ো করে। পরবর্তীতে জানা যায় সে রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং মোহনপুর থানায় অভিযোগ দিতে তার স্ত্রী মুন ইয়ামুন লাবনী ও তার শশুর বিজিবি সদস্য ইকবাল হোসেনসহ অন্যান্যদের থানায় পাঠায়।

এবিষয়ে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী বেগম আম্বিয়া সুলতানা বলেন, সুলতান আমার একমাত্র ছেলে। সে সরকারি চাকুরি করে। বিয়ের পর থেকে শশুর বাড়ির প্ররোচনায় পড়ে সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মিথ্যা ঘটনার জন্ম দিয়ে আমাকে ও আমার মেয়েদের বিপদে ফেলার চেষ্টা করে আসছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে আমার নামে রাখা ফিক্সড ডিপোজিটের ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করতে এবং স্বামীর বাড়ি হতে বিতাড়িত করতে এর আগে পানি, বিদ্যুত লাইন বিচ্ছিন্ন, পা ভেঙে দেওয়া, বাড়ির দোতলায় ইট মারাসহ বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র লিপ্ত রয়েছে যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। আমার সাথে থাকা পুলিশ সদস্য মেয়ে লাকির কারণে সে আমাকে বাড়ি হতে বিতাড়িত করতে না পারায় আমাকেসহ তাকে ফাঁসিয়ে অন্যত্র বদলি করতে সুলতান, তার বউ ও শশুর প্রতি নিয়ত গভীর ষড়যন্ত্র করে ফাঁদ তৈরী করছেন।

আমি মেয়ে সুমাইয়া বেগম লাকিকে নিয়ে সুলতানের সাথে একই বাড়িতে থাকি।

যে কোন সময় আমরা তার ষড়যন্ত্রের শিকার হতে পারি। আমি একজন মা হিসেবে আমার ছেলে ও তার লোকজনের বিভিন্ন চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র থেকে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রশাসনসহ সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। ছেলে সুলতান যেকোন সময় আমাদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। আমি ও আমার মেয়ে লাকি ছেলে সুলতানের দ্বারা বিভিন্নভাবে অত্যাচারিত হয়ে তার বিরুদ্ধে রাজপাড়া থানায় কয়েকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

এবিষয়ে বেগম আম্বিয়া সুলতানার ছেলে রাজশাহী আঞ্চলিক কর অফিসের স্টেনো (মুদ্রাক্ষরিক) এম সুলতান আহম্মেদের বক্তব্য জানতে একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল করেও তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

এবিষয়ে ইউপি সদস্য মেজর বলেন, লোক মারফত খবর পেয়ে আমি লোকজন সহ ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজ নিয়ে এবং উভয় পক্ষের মুখে শুনে জানতে পারি সেদিনের পুরো ঘটনাটি ছিল সুলতানের সাজানো। সে তার মা বোনের বদনাম করতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। সে এঘটনার জন্য তার মা বোনদের কাছে ক্ষমা চেয়ে তাদের মধ্যে মিলমিশ করে দেওয়া হয়েছে। তবে সুলতানের কথাবার্তা শুনে তাকে সুবিধার  বলে মনে হয়নি।

এবিষয়ে মোহনপুর থানা ভারপ্রাপ্ত ওসি, মোহা. সেলিম বাদশাহ বলেন, সুলতান আহম্মেদ নামে এক লোকের বিরুদ্ধে এক বৃদ্ধ মা ও তার মেয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Next Post

ভারতে পাচারের সময় ২০টি স্বর্ণেরবারসহ আটক ৩ পাসপোর্টধারী

সোম মে ২৯ , ২০২৩
মো: সাগর হোসেন,বেনাপোল প্রতিনিধি: ভারতে পাচারের সময় যশোরের বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে ২০টি স্বর্ণেরবারসহ তিন বাংলাদেশী পাসপোর্টধারীকে   আটক করেছে কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা সদস্যরা।   সোমবার সকালে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন কাস্টমসে ঐ যাত্রীর পায়ু পথ থেকে এই স্বর্ণবার উদ্ধার হয়।   আটক স্বর্ণ পাচারকারীরা হলেন, গোপালগঞ্জের মকসুদপুর গ্রামের রনি আহম্মেদ, মহিউদ্দীন ও […]

শিরোনাম

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links