আভা ডেস্কঃ একটি অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী হৈমন্তী শুক্লা। দন্তচিকিৎসক অরূপরতন চৌধুরীর সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠে গান গেয়েছেন তিনি। তাঁদের কণ্ঠে পাঁচটি রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে একটি ভিডিও সিডি। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর একটি তারকা হোটেলে সিডির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তিনি। অনুষ্ঠানের পর শুভেচ্ছাবিনিময় করেন ভারতের এই শিল্পী।
ঢাকায় তাঁর অনেক ভক্ত, অনেক অনুরাগী। কেবল সাধারণ শ্রোতা নয়, শিল্পীদের মধ্যেও তাঁর ভক্তের সংখ্যা কম নয়। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় একঝাঁক শিল্পী এসেছিলেন তাঁকে একনজর দেখবেন, তাঁর গান শুনবেন বলে। নতুন সিডির মোড়ক উন্মোচনের পর কিছু কথা বলেছেন তিনি। শুনিয়েছেন গান। তাঁর কণ্ঠে ‘ওগো বৃষ্টি আমার চোখের পাতা ছুঁয়ো না’—গানটি এখনো সেই আগের মতো হৃদয় ছুঁয়ে গেল।
সন্ধ্যার অনুষ্ঠান শেষে অনুরাগীদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন হৈমন্তী শুক্লা। গলায় রাজকীয় সোনার মালা। কপালে লাল টিপ। মুখে হাসি লেগেই ছিল। ঘণ্টাখানেক ধরে ছবি তোলা হলো। এতটুকু ক্লান্ত মনে হলো না তাঁকে। বিরক্তির চিহ্নটুকু দেখা গেল না মুখে। এরই মধ্যে তিনি নাশতা করলেন, চা পান করলেন। তাঁর একার কয়েকটি ছবি নিতে হবে বলে ড. অরূপরতন চৌধুরী হাত ধরে এনে বসালেন আলাদা একটা চেয়ারে। অনেকক্ষণ তাঁকে ঘিরে ছিলেন ঢাকার একঝাঁক শিল্পী। তপন চৌধুরী, রবি চৌধুরী, শুভ্র দেব, অণিমা রায়, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, তবলাশিল্পী চন্দন দত্ত।
একটা ছবি তোলার পর ক্যামেরার মনিটরে তাঁকে দেখানো হলো। তিনি বললেন, ‘ভালো হয়নি। দাঁড়াও ঘোমটা টেনে নিই। একবার চুল কেটে ফেলেছিলাম বলে ঢাকার দর্শকেরা রেগে গিয়েছিল। বলেছিল আমার গানই নাকি আর শুনবে না।’
কয়েকটি ছবি তোলা হলো। শেষ না হতে আবারও একে একে পাশে গিয়ে বসতে শুরু করলেন ঢাকার শিল্পীরা। দিদির সঙ্গে ছবি তুলবেন। এরই ফাঁকে তাঁর সঙ্গে টুকটাক আলাপন ও শুভেচ্ছাবিনিময় করতে হলো।
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধটা হয়তো হচ্ছে না।
যুদ্ধ এখন হচ্ছে না, এটা একটা ভালো ব্যাপার। আমরা শিল্পের মানুষ, আমরা সব সময় শান্তি চাই। যুদ্ধ চাই না। কিন্তু পাকিস্তানকে একটা শিক্ষা দেওয়াই উচিত ছিল। ঠিক আছে, এখন যুদ্ধ হচ্ছে না—সেটা ভালোই হলো।
শিল্পীদের জন্য ঝামেলা হয়ে গেল?
তা তো হলোই। আমরা পাকিস্তানে যেতে পারব না, পাকিস্তানের শিল্পীরা ভারতে আসতে পারবে না। আসলে শিল্পীদের যুদ্ধের মধ্যে জড়ানো উচিত নয়। গানের সঙ্গে কিন্তু এসবের কোনো যোগ নেই। পাকিস্তানের শিল্পীরাও যখন গান করে, কত ভালো লাগে শুনতে!
পাকিস্তানি শিল্পীদের প্রশংসা করলেন শুনে ভালো লাগল। আপনি বন্যাদির (রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা) অনেক প্রশংসা করলেন আজ। এমন করে যদি সবাই করত!
করলাম, সে সত্যিই খুব ভালো গায়। যে ভালো গায় তার প্রশংসা করতে অসুবিধা কী? আমাদের গানের মানুষেরা একে অন্যের প্রশংসা করতেই চায় না। ভালো গাইলেও চায় না। একটু ভালো বললে কী হয়, বাবা? যদি খারাপও গায় কেউ, একটু ভালো বলো না। গাইতে গাইতেই একসময় ভালো গাইবে। জি বাংলার ‘সা রে গা মা পা’ অনুষ্ঠানের লোকেরা আমার ওপর রাগ। বলে, দিদি সবাইকে ভালো বলে। ওরা যখন বড় হবে, তখন আরও ভালো গাইবে।
আপনার শরীর কেমন?
শরীর ভালো। গাইলে আমি ভালোই থাকি। যত দিন গাইতে পারব, আশা করি ভালোই থাকব। গান গেয়ে দেখো, ভালো লাগবে। মন খারাপ থাকলে গান গাইলে দেখবে, ভীষণ ভালো বোধ করবে।
ঢাকায় থাকবেন কয়েক দিন?
পরশু যাব।
যাঁর সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠে গাইলেন, সেই অরূপরতন চৌধুরী কেমন গান করেন?
এত কিছু একসঙ্গে করেও অরূপরতন গানটা ধরে রেখেছে, এ জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাতে হয়।
প্রথম আলো