কঙ্কণার জীবনে, মননে—সব অধ্যায়জুড়ে মা অপর্ণা সেন।

আভা ডেস্কঃ কঙ্কণার জীবনে, মননে—সব অধ্যায়জুড়ে মা অপর্ণা সেন। আজ মায়ের সান্নিধ্য তাঁকে অভিনেত্রী হিসেবেও সমৃদ্ধ করেছে। কঙ্কণা যখনই পর্দায় এসেছেন, এক অন্য রূপে নিজেকে মেলে ধরেছেন। এবার স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র আ মনসুন ডেট-এ দেখা গেল তাঁকে। ভিন্নধর্মী গল্প নিয়ে স্বল্পদৈর্ঘ্যের এই ছবিটি, যেখানে কঙ্কণা নিজের লিঙ্গপরিচয় থেকে বেরিয়ে এসেছেন। ভারতীয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ইরোজ ফিল্মসের অফিসে টালিউড তথা বলিউডের প্রভাবশালী ও স্পষ্টভাষী অভিনেত্রী কঙ্কণা সেন শর্মার মুখোমুখি প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্য।

আপনার অভিনীত চরিত্র সব সময় এক অন্য মাত্রা আনে। নিশ্চয় আ মনসুন ডেট করার পেছনে বিশেষ কারণ আছে?

কঙ্কণা সেন শর্মা: এই ছবিতে আমার অভিনীত চরিত্রটি ভালোবাসার সন্ধানে থাকে। আসলে যেকোনো ব্যক্তি, সে সমকামী বা তৃতীয় লিঙ্গেরও হতে পারে—প্রকৃত ভালোবাসার সন্ধানে থাকেন। আমি দেখেছি সমাজের প্রথা ভেঙে ভালোবাসার কথা বলা হলে মানুষ তা নিতে পারে না। মানুষ চিরাচরিত ভালোবাসার কথা সহজে গ্রহণ করতে পারে। তাই ছবিটির বিষয়বস্তু আমাকে আকর্ষণ করেছে। আর আমি এমন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে পছন্দ করি যার মাধ্যমে আমি নিজেকে আরও উন্নত করতে পারি। যা আমার হৃদয় ছুঁয়ে যায়। এই ছবিতে আমি এ সবকিছুই পেয়েছি। এ ছাড়া লেখক গজল এবং পরিচালক তনুজা চন্দ্রা অত্যন্ত প্রতিভাশালী। গজল ধালীবাল নিজে একজন বৃহন্নলা। উনি খুব সুন্দরভাবে গল্পটি এঁকেছেন।

তৃতীয় লিঙ্গ নিয়ে আমাদের সমাজে এখনো অনেক ছুঁৎমার্গ আছে। সমাজ এবং পরিবার ওদের স্বীকার করে না। এ ব্যাপারে কী বলতে চান? 

কঙ্কণা: আমাদের পরিবার এবং সমাজের চিন্তাভাবনা পরিবর্তনের খুব প্রয়োজন। আমাদের বস্তাপচা সংস্কার থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। আজও এমন সব মানুষ আছে যারা শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুকে রাস্তায় ফেলে দেয়। আসলে সবার আগে সমাজকে শিক্ষিত হতে হবে। আর তখনই মানুষ পারবে নিজেকে খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখতে। আর এর জন্য ফিল্ম, বিজ্ঞাপন, নাটক, মিডিয়া, ব্যবসায়িক ক্ষেত্রের সবাইকে সমানভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

আপনি কি মনে করেন সমাজের বুকে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য সিনেমা সবচেয়ে বড় মাধ্যম?

কঙ্কণা: কিছুটা হতে পারে। তবে পুরোপুরি নয়। চলচ্চিত্র একটা শিল্প। এটা দিয়ে মানুষকে শিক্ষিত করা যায় না। মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য আরও অনেক মাধ্যমকে ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে পাঠ্যপুস্তকে বিষয়গুলো আনা জরুরি। আজকের শিশুরা পরিবেশ নিয়ে যতটা সচেতন আমরা এখনো তা নই। কারণ ছোটবেলা থেকেই তাদের শিক্ষার মাধ্যমে সচেতন করা হচ্ছে। তারা জানে প্লাস্টিক ব্যবহার কতটা ক্ষতিকর। আমরা পরে তা জেনেছি।

আপনি ছবি নির্বাচনের সময় কোন বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দেন?

কঙ্কণা: অনেক কিছু নির্ভর করে। যদি কোনো বড় পরিচালক হন তো বেশি চিন্তাভাবনা করি না। এ ছাড়া যে পরিচালকের সঙ্গে আমার বোঝাপড়া ভালো, তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি সহজে বুঝতে পারি। আর তাঁর সঙ্গে ভালোভাবে কাজ করতে পারি। আর এটাও দেখি পর্দাতে তিনি কীভাবে গল্পটি বলছেন।

আপনি নিজের অভিনয়জীবন নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট? 

কঙ্কণা: আমি কখনো পেছনে ফিরে দেখি না। যেমনভাবে কাজ আসে তা করি। আমার কখনো মনে হয় না যে আমি এত বছর এই ইন্ডাস্ট্রিতে আছি। আমি খুশি যে আমি এত কাজ করেছি, আমি এ জায়গায় পৌঁছেছি।

এই দীর্ঘ অভিনয়জীবনে অনেক নামীদামি পরিচালকের পাশাপাশি মা অপর্ণা সেনের সঙ্গে কাজ করেছেন। তাঁদের সঙ্গে কাজ করার সুবাদে অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে কতটা সমৃদ্ধ করেছেন?

কঙ্কণা: আমি সত্যি লাকি যে এত ভালো এবং বড় পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। এঁদের সান্নিধ্য আমাকে অনেকটাই সমৃদ্ধ করেছে। আবার এমন পরিচালকও আছেন যাঁরা তাঁদের প্রথম ছবি আমাকে নিয়ে বানিয়েছেন। যেমন ধরুন, সোনালী বসু, জোয়া আখতার, আয়ান মুখার্জিসহ আরও অনেকে। এ ছাড়া আমি আমার মায়ের সঙ্গেও কাজ করেছি। ছোটবেলা থেকে আমি মাকে দেখে অনেক কিছু শিখেছি। নির্দেশক হিসেবে তিনি অসম্ভব ভালো এবং উদ্যমী। শুটিং সেটে মা কলাকুশলী আর কারিগরি সহযোগীদের জন্য নিজের হাতে রান্না করে খাওয়ান।

মায়ের কোন কোন গুণ আপনাকে আকর্ষণ করে? 

কঙ্কণা: আমার মা সব কাজ করতে পারেন। ওনার জন্য কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। তাই আজও আমি যখন কোনো কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাই তখন তাঁকে মনে করি। একজন সিঙ্গেল মাদার হিসেবে মা যৌবন থেকেই একা হাতে ঘর সামলেছেন, আমাদের দুই বোনের দেখভাল করেছেন, বাড়ি গুছিয়েছেন, অফিসের কাজ সামলেছেন, ছবি বানিয়েছেন, একসঙ্গে একাধিক কাজ করেছেন। আর মা দারুণ সুন্দরভাবে গল্প বলতে পারেন। মুম্বাইয়ে মা এলে আমার বন্ধুরা তাঁর সঙ্গে দেখা করবেই। আসলে তাঁর ব্যক্তিত্বই আলাদা। আমার মা খুবই রঙিন এক মানুষ।

প্রথম আলো

Next Post

ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলে প্রশংসায় ভাসছেন বাবর।

বৃহস্পতি জুন ২৭ , ২০১৯
আভা ডেস্কঃ উইকেট ছিল মন্থর। পেস-স্পিন দুটিই ধরছিল। সেখানে ব্যাট করা মোটেও সহজ ছিল না। উপরন্তু ২৩৮ রান তাড়া করতে নেমে ৪৪ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। এ ছাড়া হারলেই বিশ্বকাপ থেকে বাদ। এমন পাহাড়সম চাপ নিয়ে বুক চিতিয়ে লড়েছেন বাবর আজম। ১০১ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে দলকে এনে […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links