আভা ডেস্কঃ দেশের ক্ষতি করার জন্যই বিএনপি বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছে- পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের এ বক্তব্যকে মিথ্যা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।
দেশের ক্ষতি করতে বিএনপি বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএনপি মহাসচিব এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দেশ এবং গণতন্ত্র রক্ষার জন্য বিএনপি সব সময় কাজ করে। বিএনপি কোন দিন লবিস্ট নিয়োগ করেনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য মিথ্যা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মহলের নিষেধাজ্ঞার দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বিধায় সরকারের নৈতিক এখতিয়ার নেই নির্বাচন কমিশন নিয়ে আইন প্রনয়ণ করার। সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা একমাত্র পথ। গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই পরিবর্তন আনতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গোপনীয়তার সঙ্গে তাড়াহুড়ো করে এই আইন প্রণয়নের প্রচেষ্টা জনগণের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রতারণা করে আর একটি পাতানো নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার নীল নকশা মাত্র।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি মনে করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোনও নির্বাচন কমিশনেই অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সফল হবে না, যদি না নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ তত্তাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের এক তরফা সাজানো ভোটারবিহীন ও মধ্যরাতের ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সেই সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
‘বিএনপি মনে করে বর্তমান আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর, সকল রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণ মূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার একমাত্র পথ, এর কোন বিকল্প নেই।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই লক্ষে সকল রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি ও জনগণের ঐক্য গড়ে তুলে দূর্বার গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে এই পরিবর্তন আনয়ন করতে হবে।’
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্টদের অপসারণ দাবি করেছেন মির্জা ফখরুল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে প্রথমে ছাত্রলীগের হামলা ও পরে পুলিশের হামলা, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও গুলি বর্ষণের ফলে অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণেই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে এবং প্রায় ১০ দিনেও এই সমস্যার সমাধান হয়নি। সভায় অবিলম্বে ভাইস চ্যান্সেলরসহ দায়ী সকল সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তার অপসারণ এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ছাত্রলীগ ও পুলিশের দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবী করছি।’
সভায় বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
গতকাল বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই সংবাদ সম্মেলন করেন।