বাগমারা প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার চাঁনপাড়া মহল্লায় প্রেমের বিয়ের দেড় মাসের মধ্যে এক গৃহবধূকে গলাটিপে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত গৃহবধূ সাবিনা খাতুনের (২৩) লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গৃহবধূর স্বামী সোহাগ হোসেন (১৭) ও শাশুড়ি রুপালি বেগমকে (৩৪) গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় সোহাগের নানা ইয়াছিন আলী মন্ডল ও মামা ইমরান আলী মন্ডল পলাতক রয়েছে। নিহতের মা ছামেনা বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন দে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার চাঁনপাড়া মহল্লার ট্রলি চালক সোহাগ হোসেনের সঙ্গে হামিরকুৎসা ইউনিয়নের দক্ষিণ মাঝগ্রামের আব্দুল হান্নান মোল্লার মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন (২৩) এর প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। গত দেড় মাস আগে সোহাগ হোসেন প্রেমিকার সঙ্গে তার বাড়িতে দেখা করতে গেলে তাকে আটকে রাখা হয়। এসময় ওই নারী তাঁকে বিয়ের দাবি জানান। পরে সোহাগের আত্বীয় স্বজনদের ডেকে উভয়ের সম্মতিতে নারীর সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে উপজেলার চাঁনপাড়ায় নানার বাড়িতে থাকতো সোহাগ।
জানা যায়, গত রাতে সেহেরি খাওয়ার পর তারা একই ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে স্ত্রীকে রেখে বাড়ির বাইরে যায় সোহাগ। পরে বাড়িতে ফিরে স্ত্রী ঘুম থেকে না জাগলে ডাকাডাকি শুরু করে। এক পর্যায়ে বিছানায় মৃত অবস্থায় সাবিনা ইয়াসমিনকে আবিষ্কার করা হয়। থানায় খবর দেওয়া হলে দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। লাশের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
গৃহবধূর মা ছামেনা বিবি অভিযোগ করেন, স্বামী ও শাশুড়ি মিলে বাড়ির অন্যদের সহায়তায় তার মেয়েকে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে। বিয়ের পর থেকে ওই বাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে মেনে নিতে পারেনি। বিভিন্ন সময়ে নির্যাতন করা হতো বলে অভিযোগ করেন। তাঁর ভাষ্য, মেয়েকে মেরে ফেলে লাশ ঘরের ভেতরেই রেখেছে। মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন আত্মহত্যা করবে এমন কোনো কারণ ছিল না এবং বিছানায় মরে থাকবে এমন কোনো রোগও ছিল না।
তবে গ্রেফতার হবার আগে সোহাগের মা রুপালী বেগম সাংবাদিকদের বলেন, মোবাইলের মাধ্যমে তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক হয়। সে সর্ম্পকের সূত্র ধরে একটি ঘটনার মধ্য দিয়ে দেড়মাস আগে ছেলের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালো সর্ম্পক ছিল। তাদের সঙ্গেও কোনো বিরোধ ছিল না। কী কারণে মারা গেছে তা বলতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।
বাগমারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আফজাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এই ঘটনায় নিহতের মা বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। দুইজন কে গ্রেফতার করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য থানায় আনা হয়েছে। শনিবার (১মে) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে।