নিজস্ব প্রতিনিধিঃ একই পুলিশ সদস্যের একই মাসে দুইটি ঘটনা ঘটায়, দুই ঘটনায় টাকার বিনিময়ে আসামী ছেড়ে দেন । প্রতিনিয়তই গ্রেপ্তার বানিজ্য করেই চলেছে মতিহার থানা পুলিশের কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য ।
১ম ঘটনাঃ নগরীর একজন মোস্ট ওয়ান্টেড চিহ্নিত মাদক সম্রাটকে ধরে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। আরএমপির মতিহার থানার দুই এএসআই ও দুই কনস্টেবল শনিবার রাতে মতিহার থানার ডাঁশমারী এলাকায় এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। শনিবার ২৮ ডিসেম্বর সকাল থেকেই ঘটনাটি এলাকাবাসীর মাধ্যমে জানাজানি হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যরা সারাদিন নিজেদের মোবাইল ফোন বন্ধ রাখেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী কুখ্যাত মাদক সম্রাট পালা (৩৫) মাদক বিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকে গা-ঢাকা দিয়েছিল। শনিবার সন্ধ্যার পর অতি গোপনে সে তার ডাঁশমারীর বাড়িতে যায়। সে পরিবারের সঙ্গে অবস্থান করছিল। রাত আনুমানিক ৯টার দিকে মতিহার থানা এএসআই হাবিব ও এএসআই হিরুর নেতৃত্বে দুই কনস্টেবলসহ সাদা পোশাকের চার পুলিশ সদস্য গোপন সংবাদ পেয়ে ডাঁশমারীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাদক সম্রাট পালাকে আটক করে। কিছুক্ষণ পর তারা পালাকে মোটরসাইকেলের মাঝখানে বসিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পড়ে কনস্টেবল জালালের মধ্যস্থতায় মোটা টাকার বিনিময়ে পালাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায় বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। ছাড়া পেয়ে মাদক ব্যবসায়ী পালা অজ্ঞাত স্থানে চলে যায়। এরপর থেকে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পালাকে আটকে বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করেছেন। এলাকাবাসী জানায়, গত বছর ১ অক্টোবর রাতে পালা ও তার ভাই আলমগীর হোসেন আলোর নেতৃত্বে মাদক ব্যবসায়ীরা ডিবি পুলিশের একজন পরিদর্শকসহ চার পুলিশকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এই ঘটনায় পুলিশ আলো ও পালাসহ ২৫ জন মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে মতিহার থানায় মামলা করে। এদিকে এই ঘটনার পর ৭ অক্টোবর আলমগীর হোসেন আলো পুলিশের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়। এ ঘটনার পর থেকে পালা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পালার বিরুদ্ধে মতিহার থানাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় মাদকের বেশ কিছু মামলা রয়েছে বলে মতিহার থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
২য় ঘটনাঃ জানা যায়, ১৬ ডিসেম্বর প্রথম প্রহরের দিকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সামন থেকে দুইজন কে আটক করেন এস আই সুকান্ত ও এ এস আই হিরু এবং এ এস আই হাবিব। আটক ব্যাক্তিদ্বয় হলো, মিজানের মোড় এলাকার আইয়ুব, খোজাপুরের পিন্টু। থানা সুত্রে জানা যায়, আইয়ুব ও পিন্টু এলাকার চিহৃিত মাদক ব্যবসায়ী। তারা জেল গেটে পরিচিত আসামীর সাথে স্বাক্ষাৎ করতে গিয়েছিল। জেলগেট থেকে ফেরার পথে তাদের আটক করেন মতিহার থানা পুলিশ। আটকদের মধ্যে আইয়ুবকে পেন্ডিং মামলায় চালান করলেও, পিন্টুকে রাস্তা থেকেই ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়।
এ বিষয়ে এস আই সুকান্ত সাথে কথা বললে তিনি আইয়ুবকে ধরার কথা স্বীকার করলেও পিন্টুকে ধরার কথা অস্বীকার করেন।
উক্তি বিষয়ে এ এস আই হাবিবের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি সেইদিন বিশ্রামে ছিলাম। আমাকে সুকান্ত স্যার ঢেকে নিয়ে যায় তবে আমি কিছু বলতে পারবো না। আসামী ধরার বিষয় স্বীকার করলেও টাকার বিষয় কিছু জানে না বলে ছাপ জানিয়ে দেয়।
এদিকে এ এস আই হিরুর সাথে কথা বললে সেও কিছু জানে না বলে ছাপ জানিয়ে দেয়। তবে আসামী দুইজনকে ধরার কথা স্বীকার করেন তিনি।
অপর দিকে বিষয়টি জানতে মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদ পারভেজকে ফোন দিলে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান। পরে জেনে জানানো হবে বলে জানান তিনি। ১ম ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি এ ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানেন না। কেউ তার কাছে অভিযোগ করেনি।
উক্ত বিষয়ে আর এম পির মিডিয়া মুখ্যপাত্র রুহুল কুদ্দুস বলেন, প্রথম ঘটনা ও দ্বিতীয় ঘটনা কোনটাই তার জানা নেই । তবে তিনি আরো বলেন, কোন পুলিশ সদস্য যদি এরুপ করে থাকে তাহলে তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।