আবারো আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন, রাজশাহীর পাটকল শ্রমিকরা, সংহতি প্রকাশ করছেন বাদশা ।

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ গত রবিবার থেকে আবারো আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন, রাজশাহীর পাটকল শ্রমিকরা।
সোমবার দ্বিতীয় দিনে পাটকল শ্রমিকদের সাথে সংহতি প্রকাশ করছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। রোববার রাতভর মিলের মূল ফটকে অবস্থানের পর সোমবার সকাল থেকে তারা নানান দাবি নিয়ে আবারও বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন।

পাটকল শ্রমিকদের অনশনে সংহতি প্রকাশ করে রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা তার বক্তব্যে বলেন, চাকরিজীবনে অনেক সরকারি কর্মকর্তা অনিয়মে জড়িয়ে পাপ করেছেন। কিন্তু শ্রমিকরা কখনও অন্যায় করেননি। তারা পবিত্র। শ্রমিকদের এই অসময়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে কর্মকর্তাদের ‘পাপ মোচনের’ এখন সময় এসেছে। শ্রমিকদের দাবি মেনে নিয়ে নিজেদের পাপ মোচন করা উচিত।

সোমবার সকালে রাজশাহী পাটকলের আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। দাবি আদায়ে শ্রমিকরা তখন দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এর আগে রোববার দুপুর থেকে রাষ্ট্রায়াত্ব এই পাটকলের শ্রমিকরা অনশন শুরু করেন।

ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, মন্ত্রণালয়ে এবং বিজেএমসিতে কিছু শ্রমিকবিরোধী লোক আছে যারা শ্রমিকদের স্বার্থের কথা ভাবেন না। নিজেদের স্বার্থ দেখতে গিয়ে তারা শ্রমিকদের যুক্তিসঙ্গত দাবি মেনে নিচ্ছেন না। অথচ এই শ্রমিকরাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তাই যে সকল কর্মকর্তারা এই দাবিকে সমর্থন করছেন না বা পাশে থাকছেন না তাদের উচিত এখন শ্রমিকদের পাশে থাকা।

রাজশাহী-২ (সদর) আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পাটজাত দ্রব্যের যে দাম সেই দামের সাথে মিল রেখে রাষ্ট্রায়াত্ব শিল্প-কারখানার উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করলে শ্রমিকরা নায্য বেতন ভাতা পাবেন। তাহলে তাদের এই শীতের মধ্য আন্দোলন করতে হতো না। কিন্তু কিছু আমলারা নিজেদের স্বার্থের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না। আর এর ফল ভোগ করছেন সাধারন মেহনতি শ্রমিক। প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা।

বাদশা বলেন, এই শ্রমিকদেরই ইহাহিয়া, আইয়ুব খান ভয় পেতো। কিন্তু আমাদের তো তাদের ভয় পাবার কিছু নেই। আমি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাবো, এই শ্রমিকরাই দেশের অর্থনীতি চাঙা রাখে। কিন্তু যারা বিদেশে টাকা পাচার করেছে তারা দেশের ক্ষতি করছে। তাই সবার আগে শ্রমিকদেরই দাবি মেনে নেয়া দরকার। শ্রমিকদের স্বাভাবিক জীবন নিশ্চিত করা দরকার।

তিনি বলেন, আমি সবসময়ই মেহনতি মানুষের পাশে আছি। আজ রাস্তায় এসে বসেছি। এরপর পার্লামেন্টে গিয়ে কথা বলবো। আমি পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সাথেও কথা বলবো, যেন শ্রমিকরা তাদের নায্য অধিকার বুঝে পান। কারণ, শ্রমিক বাঁচলেই বাংলাদেশ বাঁচবে।

এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগর সম্পাদকমণ্ডলির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের জেলা সভাপতি ফেরদৌস জামিল টুটুল, সাধারণ সম্পাদক অসিত পাল, সহ-সভাপতি সিরাজুর রহমান খান, কাটাখালি পৌর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আলাল মোল্লা প্রমুখ।

রাজশাহী পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি জিল্লুর রহমান জানান, তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের পক্ষে আর ঘরে ফেরা সম্ভব নয়।
কেন্দ্রীয়ভাবে বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় গত ১০ ডিসেম্বর দুপুর থেকে আন্দোলন শুরু করেন পাটকল শ্রমিকরা। পরে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার সরকারি আশ্বাসে গত ১৪ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
তাদের অভিযোগ, মজুরি কমিশনের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনো কার্যকর হয়নি। দাবি পূরণ না হওয়ায় গতকাল রোববার থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তারা। ঘোষিত ১১ দফা দাবি আদায়ে এবার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
রাজশাহী পাটকলের মূল ফটকের সামনে কাঁথা-বালিশ নিয়ে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন পাটকল শ্রমিকরা। তবে শীতের কারণে পাটকল শ্রমিকদের অনেকেই ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলেও জানান এই শ্রমিক নেতা।

এদিকে, মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে দু’সপ্তাহ পর আবারও আন্দোলনে নেমেছেন রাজশাহীর পাটকল শ্রমিকরা। রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা ৩টার পর থেকে পাটকল ফটকের সামনে তারা জড়ো হন। বর্তমানে সেখানে বসেই তারা আন্দোলন করছেন।
জাতীয় মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন, সরকারি- বেসরকারি অংশীদারি (পিপিপি) সিদ্ধান্ত বাতিল, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ গ্রাচ্যুইটির টাকাসহ ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করছেন পাটকল শ্রমিকরা।

 

Next Post

কোনো ইস্যুতেই রাজপথে দাঁড়াতেই পারেনি সরকার বিরোধীরা।

মঙ্গল ডিসে. ৩১ , ২০১৯
আভা ডেস্কঃ অভ্যন্তরীণ কোন্দল, সাংগঠনিক দুর্বলতা, মতবিরোধসহ বিভিন্ন কারণে সারা বছরেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। বছরজুড়ে একের পর এক ইস্যু এসেছে; কিন্তু এসব ইস্যু কাজে লাগাতে পারেনি। পক্ষে টানার জন্যও তারা জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি। এমনকি বিএনপি তাদের নেত্রীর মুক্তির দাবিতে জোরদার আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। সাধারণ মানুষকে সঙ্গে […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links