রাজশাহীতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) সদর দপ্তরসহ মাঠপর্যায়ে কর্মরত ৭৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বেতন গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) সদর দপ্তরসহ মাঠপর্যায়ে কর্মরত ৭৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বেতন গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। বর্ধিত বেতন গ্রহণ করায় সরকারের ক্ষতি হয়েছে এক কোটি টাকা। এই টাকা ফেরতের জন্য বিএমডিএ’র পক্ষ থেকে ৭৩ কর্মকর্তাকে বার বার চিঠি দেওয়া হলেও এখনো অনেকেই ফেরত দিচ্ছেন না। উল্টো দিনের পর দিন বর্ধিত বেতনই উত্তোলন করে চলেছেন ওই কর্মকর্তারা।

অভিযোগ উঠেছে, জাতীয় বেতন স্কেলের চেয়েও এইসব কর্মকর্তা ঘুষ-বাণিজ্যের মাধ্যমে নিজেদের বেতন ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে নিয়েছেন। যার ফলে সরকারি বেতন স্কেল ছাড়িয়ে গেছে ৭৩ কর্মকর্তার বেতনের ক্ষেত্রে।
বিএমডিএ’র প্রেরিত চিঠি সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় বেতন স্কেলের বেতন নির্ধারণপূর্বক প্রশাসনিক আদেশে প্রাপ্য বেতনের চেয়ে অতিরিক্ত বেতন গ্রহণকারী ৭৩ জন কর্মকর্তার বেতনে নির্ধারণে গড়মিল পাওয়া যায়।

এই ৭৩ কর্মকর্তার মধ্যে রয়েছেন সহকারী প্রকৌশলী ১৩ জন, সহকারী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) ৮ জন, উচ্চতর উপ-সহকারী প্রকৌশলী ৩২ জন এবং উপসহকারী প্রকৌশলী ২০ জন। এই কর্মকর্তারা প্রায় ৫ বছর ধরে সরকারি বেতন স্কেলের চেয়ে অতিরিক্ত বেতন গ্রহণ করে গেছেন বিএমডিএ থেকে। অথচ তাঁদের বেতন স্কেল নির্ধারণ করা হয়েছে সরকারি বেতন স্কেল থেকে। কিন্তু ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই ৭৩ কর্মকর্তা ৫৫ লাখ ৬০ হাজার ৬৩৯ টাকা অতিরিক্ত গ্রহণ করেছেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তদন্ত শেষে বিষয়টি বের হয়ে আসে।

বিএমডিএ সূত্র আরো জানায়, সরকারি বেতন স্কেলের চেয়েও অতিরিক্ত বেতন গ্রহণ করার বিষয়টি ধরা পড়ার পরে টাকা ফেরত চেয়ে ৭৩ কর্মকর্তাকে প্রথমে চিঠি দেওয়া হয় ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল। কিন্তু ওই চিঠির পরে পুনরায় বেতন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আবেদন জানান। এরপর পুনরায় তদন্ত কমিটি করে যাচাই-বাছাই করা হয়। কিন্তু ওই তদন্ত কমিটিও পরবর্তিতে অতিরিক্ত বেতন উত্তোলনের বিষয়টি তুলে ধরে প্রতিবেদন দাখিল করে বিএমডিএ’র সদর দপ্তরে। এরপর সর্বশেষ গত বছরের ১৮ মার্চ পুনরায় ৭৩ কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত বেতন গ্রহণের পরিমাণসহ চিঠি দিয়ে সেই টাকা ফেরত চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়। তবে এখনো অনেকেই অতিরিক্ত বেতনের টাকা ফেরত দেননি বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বিএমডিএ’র আরকেটি সূত্র জানিয়েছে, এই দপ্তরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-বোনাসসহ আনুসাঙ্গিক সুবিধা প্রদান করা হয় সরকারি স্কেলে। সরকারি শায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই নিয়ম চালু আছে। কিন্তু মাঝে হঠাৎ করে ৭৩ কর্মকর্তার বেতনে ব্যাপক গড়মিল লক্ষ্য করা যায়। এই কর্মকর্তারা বিএমডিএ’র কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও হিসাবরক্ষককে ম্যানেজ করে নিজেদের বেতন ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে নেন। ফলে তাদের বেতন জাতীয় বেতন স্কেলকেও ছাড়িয়ে যায়। এর পরে বিষয়টি নজরে আসে কর্তৃপক্ষের।

এদিকে অতিরিক্ত বেতনের টাকা ফেরতের চিঠি পেয়ে কেউ কেউ এরই মধ্যে টাকা ফেরৎ দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন বিএমডিএ (সদর) হিসাবরক্ষক ফারুক আজম। তবে এখনো অনেকেই টাকা ফেরত দেননি বলেও তিনি জানান। অতিরিক্ত টাকা গ্রহণের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়কও ছিলেন এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘কিভাবে ওই কর্মকর্তারা অতিরিক্ত বেতন উত্তোলন করেছেন তা বলতে পারবো না। তবে ৭৩ জনের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বেতন গ্রহণের প্রমাণ উঠে এসেছে। এরপর আমরা ওই কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়েছে টাকা ফেরতের জন্য।’

এদিকে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিএমডিএ’র নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘অতিরিক্ত বেতন গ্রহণের বিষয়টি সঠিক। তবে অনেকেই সেই টাকা ফেরত দিচ্ছেন। যারা দেননি তাঁরাও দ্রুতই বর্ধিত টাকা ফেরত দিবেন বলে আশা করি।’

 

এভি-১/এসএল

Next Post

কাশিমপুর কারাগারে নেই পযাপ্ত চিকিৎসক

রবি জুলাই ৭ , ২০১৯
আভা ডেস্কঃ গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের চারটি অংশের মোট প্রায় ১০ হাজার বন্দীর চিকিৎসার জন্য মাত্র একজন চিকিৎসক নিযুক্ত আছেন—শনিবারের প্রথম আলোয় প্রকাশিত এই খবর থেকে মনে হতে পারে, কারাগার কর্তৃপক্ষ বা সরকার হয়তো ধরে নিয়েছে যে কারাবন্দীদের তেমন অসুখ-বিসুখ হয় না। তবে এমন ধারণা যে ঠিক নয়, তা আমরা […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links