পুলিশের এস পি আব্দুল্লাহ আরেফ ‘বিএনপি অ্যাকটিভিস্ট ও চরম করাপ্ট’ লিখা গোয়েন্দা প্রতিবেদন।

আভা ডেস্কঃ ‘পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আরেফ একজন বিসিএস (সমবায়) কর্মকর্তার নাম বিকৃত করে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করতে প্রভাব বিস্তার করেন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যক্তিগত শত্রুতায় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।’

বর্তমানে ফরিদপুরের নৌপুলিশের এসপি পদে দায়িত্বে থাকা আবদুল্লাহ আরেফের বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য উঠে এসেছে খোদ পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনটি ২০০৩ সালের।

এদিকে পদস্থ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এরকম বহুবিধ সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যুগান্তর অনুসন্ধানী সেল মাঠে নামে। দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদকের কাছে চাঞ্চল্যকর আরও বেশকিছু ঘটনার তথ্যপ্রমাণ চলে আসে। এর মধ্যে দেখা যায়, তিনি তার নিজ জেলা মাগুরায় পুলিশে চাকরি দেয়ার কথা বলে নগদ টাকা, এমনকি জমিও রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন। যদিও এদের কেউই চাকরি পাননি। ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত চাইতে গেলে উল্টো তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেল খাটানো হয়। এছাড়া সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণকালে আবদুল্লাহ আরেফের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শিক্ষাজীবনে ছাত্রলীগ করার অভিযোগে পুলিশের ২০তম ব্যাচের ১১ জন কর্মকর্তাকে অপসারণ করার তথ্যও তুলে ধরেছেন তার ব্যাচমেটদের কয়েকজন। এছাড়া পুলিশের চাকরিতে আসার আগে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে আবদুল্লাহ আরেফ বিমানবাহিনী থেকেও চাকরিচ্যুত হন। গোয়েন্দা সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবদুল্লাহ আরেফ ‘বিএনপি অ্যাকটিভিস্ট ও চরম করাপ্ট’। এমনকি মাগুরা পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী বদর ওরফে মিন্টু তার গ্রামের বাড়ির কেয়ারটেকার পদে এখনও বহাল।

পুলিশের দু’জন পদস্থ কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, ‘আবদুল্লাহ আরেফের মতো পুলিশ অফিসার ডিপার্টমেন্টে থাকলে অনেক ক্ষতি হবে। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, সে বিষয়ে সরকার অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’

এসপি আবদুল্লাহ আরেফের এক ব্যাচমেট (বর্তমানে এসপি হিসেবে কর্মরত) নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুগান্তরকে বলেন, ‘২০০২ সালে রাজশাহীর শারদায় এএসপি হিসেবে উত্তীর্ণদের ট্রেনিংয়ে থাকাবস্থায়ই ভিত্তিহীন অজুহাতে ২১ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এর মধ্যে ১১ জন ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ করা ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। আবদুল্লাহ আরেফ তখন বিএনপি সমর্থিত দাপুটে কর্মকর্তা হিসেবে বেশ পরিচিত।

বিএনপি পরিচয় থাকার কারণে শীর্ষস্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের নেকনজরেও ছিলেন তিনি। এ কারণে অন্য আরেকজনকে ডিঙ্গিয়ে তাকেই প্যারেড কমান্ডার করা হয়। ওই সময় তিনি আমাদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক অপেশাদারসুলভ সাক্ষী দেন। ফলে আমাদের বেশ কয়েকজনকে চাকরিচ্যুতি করাসহ বিএনপি সরকারের পুরো সময় নানাভাবে হেনস্তার শিকার হতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ আরেফ মূলত তৎকালীন রেক্টর কাইয়ূম স্যারের (সাবেক আইজিপি ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা আবদুল কাইয়ূম) সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। ভিন্ন অজুহাতে তার কারণেই আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়। পরে ২০০৭ সালে কেয়ারটেকার সরকারের আমলে উচ্চ আদালতের নির্দেশে আমাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়। কিন্তু ৫ বছর যে কষ্ট করেছি, তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।’

তথ্যানুসন্ধানে পাওয়া নথিপত্রে দেখা গেছে, ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর আবদুল্লাহ আরেফের ক্ষমতা অপব্যবহারের তদন্ত প্রতিবেদনে ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেন ওই সময়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (উত্তর) দিদার আহম্মদ। তিন পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, খুলনার বাসিন্দা তৎকালীন বিসিএস (সমবায়) কর্মকর্তা নবিরুল ইসলাম বকুলকে সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করতে প্রভাব বিস্তার করেন আবদুল্লাহ আরেফ। তার ডাকনাম বিপ্লব। তখন তিনি এপিবিএন রাজধানীর উত্তরায় এএসপি হিসেবে কর্মরত। এর আগে খুলনায় কর্মরত ছিলেন আবদুল্লাহ আরেফ। এ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে বিসিএস (সমবায়) কর্মকর্তা নবিরুল ইসলাম বকুলের নাম বিকৃত করে ‘কানা বকুল’ নামে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করতে খালিশপুর থানার তৎকালীন ওসি আবদুল মান্নানকে বাধ্য করেন। এমনকি আবদুল্লাহ আরেফ ওসি মান্নানকে বলেন, ‘কানা বকুলকে গ্রেফতার করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ আসবে।’ পরবর্তী সময়ে বিএনপি শাসনামলে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনার সময় ২০০৩ সালের ১৫ অক্টোবর খুলনা মেট্রোপলিটন এলাকার সন্ত্রাসী তালিকা চাওয়া হয়। ওই তালিকায় নবিরুল ইসলাম বকুলের নাম-ঠিকানাসহ সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে সিটিএসবিতে পাঠান। তদন্ত প্রতিবেদনে ওসি মান্নানের দেয়া তথ্য উল্লেখ করে স্পষ্ট করে বলা হয়, ‘আবদুল্লাহ আরেফের অনুরোধক্রমে সিটিএসবির ২২৪নং ক্রমিকে সমবায় কর্মকর্তা নবিরুল ইসলাম বকুলের নাম সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।’

চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওই সময়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (উত্তর) বর্তমানে পুলিশের এন্টিটেরোরিজম ইউনিটের ডিআইজি দিদার আহম্মদ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছিলেন। তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আবদুল্লাহ আরেফের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল জানতে চাইলে দিদার আহম্মদ যুগান্তরকে বলেন, ‘যতটুকু মনে পড়ে, তখন কেএমপির কমিশনার ছিলেন বজলুর রহমান। আমি প্রতিবেদনটি কমিশনার স্যারের কাছে দিয়েছিলাম। কিন্তু কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল, তা আর জানতে পারিনি।’ এক প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আবদুল্লাহ আরেফ পূর্বশত্রুতার জের ধরে বিসিএস ক্যাডার দুই ভাই-বোনের মধ্যে একজনের নাম বিকৃত করে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করেন। এ নিয়ে পুলিশের ওপর সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সরেজমিন তদন্তে যে তথ্য পেয়েছিলাম, তা প্রতিবেদনে উপস্থাপন করেছি।’

এখানেই শেষ নয়, ২০০৩ সালের ২৩ মার্চ আবদুল্লাহ আরেফের বিরুদ্ধে প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন দেন খুলনার খালিশপুর জোনের তৎকালীন সহকারী পুলিশ কমিশনার ক্লারেন্স গোমেজ। ওই সময় আবদুল্লাহ আরেফ কেএমপিতে সহকারী পুলিশ কমিশনার গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত ছিলেন। খুলনার পুলিশ কমিশনারের কাছে খালিশপুরের টিএন্ডটি গেট এলাকার মো. মাহবুবুর রহমান নামে এক ব্যক্তি বেআইনি কার্যকলাপ ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগ এনে আবদুল্লাহ আরেফের বিচার দাবি করেন। ৯১৯নং স্মারকে এই অভিযোগটি তদন্ত করেছিলেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দরখাস্তকারী মাহবুবুর রহমানসহ দু’জনকে থানায় নিয়ে মারধর করেন আবদুল্লাহ আরেফ। হাউজিং স্টেট এলাকায় আবদুল্লাহ আরেফ বড় হয়েছেন। সেখানে থেকেই খুলনার বিএল কলেজ থেকে বিকম পাস করেন। পূর্ব মনোমালিন্যের সূত্র ধরে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।’ ওই তদন্ত প্রতিবেদনের এক স্থানে বলা হয়, ‘মাগুরা থানার পুলিশ রিপোর্টে দেখা যায়, ‘বর্তমান চাকরির আগে বিমানবাহিনীতে যোগদান করেছিলেন আবদুল্লাহ আরেফ। নিয়মশৃঙ্খলা ও একাডেমিক প্রশিক্ষণ ভালো না হওয়ায় ওই চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ওই পুলিশ রিপোর্ট ও আনুষঙ্গিক নথিপত্রসহ পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য সংশ্লিষ্ট তদন্ত প্রতিবেদনটি খুলনার পুলিশ কমিশনারের কাছে পাঠানো হল।’

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, আবদুল্লাহ আরেফের গ্রামের বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের ফুলবাড়ী গ্রামে। সরেজমিন ওই গ্রামে গিয়ে পাওয়া যায় অভিযোগের পাহাড়। নিকটাত্মীয়ের অনেককেই নাজেহাল করেছেন- এমন অভিযোগ পাওয়া যায় বিতর্কিত এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এলাকাবাসীর পক্ষে গণস্বাক্ষর নিয়ে ২০১৭ সালের ৪ জুন আইজিপির কাছে একটি অভিযোগও দেয়া হয়। এতে এলাকার কুখ্যাত মাদকসম্রাট বদর ওরফে মিন্টুকে প্রত্যক্ষ মদদ দেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। মাগুরা পুলিশের তালিকাভুক্ত এই মাদক-সন্ত্রাসী মিন্টু প্রকাশ্যে আবদুল্লাহ আরেফের বাড়ির কেয়ারটেকার পরিচয় দেন- এমন অভিযোগও করা হয়।

চাচার যত অভিযোগ :

পুলিশের আইজির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন আবদুল্লাহ আরেফের চাচা সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মুহাম্মদ ফয়জুল কবীর ও মুহাম্মদ এরফান আহমেদ। চার পৃষ্ঠার লিখিত অভিযোগটি ২০১৭ সালের ২৭ মার্চ পুলিশ সদর দফতরে দাখিল করা হয়। এতে তার দুই চাচা আবদুল্লাহ আরেফের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগে বলেন, ‘আবদুল্লাহ আরেফ ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে গ্রামের অনেক সম্মানিত লোককে বিভিন্ন মামলায় হয়রানি করেছেন। চাকরি দেয়ার নামে টাকা নিয়ে সেই টাকা ফেরত দেয়নি, চাকরিও হয়নি। পারিবারিক যৌথ সম্পত্তি নিজের পছন্দ অনুযায়ী ভাগ করে নিয়েছেন আবদুল্লাহ আরেফ। তারপরও ক্ষমতার প্রভাবে মাদক ব্যবসায়ী ও পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী বদর মিন্টু, খুলনা থেকে পাঠানো এএসআই আবদুল্লাহ আল মামুন, বাসার অর্ডারলি কনস্টেবল মাসুদ রানা উপস্থিত থেকে অন্যের জমি দখল করেছে। পুলিশের তালিকাভুক্ত বদর মিন্টু আবদুল্লাহ আরেফের আশকারা পেয়েই ভয়ংকর মাদক ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছে।’ অভিযোগের শেষাংশে বলা হয়, ‘বলতে লজ্জাবোধ হচ্ছে যে, বিকারগ্রস্ত অপরাধী এই পুলিশ কর্মকর্তা আমাদের পরিবারের সন্তান। আজ নিরুপায় হয়ে আবদুল্লাহ আরেফের ভয়ংকর থাবা থেকে রক্ষা করতে অনুরোধ করছি।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই চাচার দায়ের করা অভিযোগ আমলে নেয় পুলিশ সদর দফতর। তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগে তদন্ত রিপোর্টও জমা দেয়া হয়েছে। এরপর তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণে নথি পুলিশ সদর দফতর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠানো হয়। ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের শৃঙ্খলা শাখা-২ এর তৎকালীন উপসচিব তাহমিনা বেগম আবদুল্লাহ আরেফকে আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য দিতে চিঠি ইস্যু করেন। দাফতরিক ওই পত্রে যেসব অভিযোগ উল্লেখ করা হয় সেগুলো হল- ‘আবদুল্লাহ আরেফ উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) কেএমপি খুলনায় কর্মকালে ২০১৭ সালের ১১ মার্চ ২ জন বডিগার্ড বর্তমানে এএসআই আবদুল্লাহ আল মামুন ও কনস্টেবল মাসুদুর রহমানকে বেআইনিভাবে মাগুরায় নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে বিতর্কিত জমিতে দাঁড় করিয়ে রেখে পুলিশি ভয় দেখিয়ে স্থানীয় বদর ওরফে মিন্টুর সহযোগিতায় দেয়াল নির্মাণ করে অবৈধভাবে দখল, জনৈক বদর ওরফে মিন্টু নিজে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থেকে বিতর্কিত আরেকটি প্লটে দেয়াল নির্মাণ করে জমি অবৈধভাবে দখল করে নেন এবং ওই জমির প্লটে আবদুল্লাহ আরেফের পিতার নামে নামফলক স্থাপনের অভিযোগ, ওই বিতর্কিত জমির বিষয়ে মাগুরায় দেওয়ানি সহকারী জজ আদালত ও মাগুরা অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেটের আদালতে পৃথক দুটি মামলা চলমান থাকাবস্থায় সরকারি কর্মকর্তা হয়েও ওই জমি দখলের অভিযোগ। এরূপ কার্যকলাপ সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ১৯৮৫ এর ৩(বি) বিধি মোতাবেক অসদাচরণের পর্যায়ভুক্ত শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সেহেতু ওই অপরাধে কেন বিভাগীয় মামলা রুজু করা হবে না, এর জবাব এ পত্র প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে আবদুল্লাহ আরেফকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়। এরপর আর এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি পাওয়া যায়নি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর নৌপুলিশের এসপি আবদুল্লাহ আরেফ শনিবার যুগান্তরকে বলেন, চাচার অভিযোগের বিষয়ে আমি কোনো খোঁজখবর রাখি না।

এগুলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। যথারীতি সচিবের কাছে আমি ব্যক্তিগত শুনানি দিয়েছি। নিয়মানুযায়ী শাস্তি হলে শুনানির ২১ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জানানো হবে। যেহেতু আমি এ ধরনের কোনো চিঠি পাইনি, সেহেতু বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়ে নথিজাত হয়েছে মর্মে ধরে নিতে হবে। এছাড়া সচিব আমাকে জানিয়েছেন, এটি জমিজমা সংক্রান্ত পারিবারিক বিষয়। এসব বিষয় আদালত নিষ্পত্তি করবে।

সমবায় কর্মকর্তাকে সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘ও তো আমার বন্ধু মানুষ। সেটাও নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। তাদের সঙ্গে প্রতিদিন কথা হয়।’ বিমান থেকে প্রত্যাহার করার বিষয়ে বলেন, ‘বিমানবাহিনীতে তো আমার চাকরিই হয়নি। প্রশিক্ষণ শেষ, কমিশন না পাওয়া পর্যন্ত সেটাকে চাকরি বলে না।’ গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বিএনপি অ্যাকটিভিস্ট ও চরম করাপ্ট বলা হয়েছে কেন জানতে চাইলে বলেন, ‘এই অভিযোগ সঠিক নয়। ওটা গোয়েন্দা প্রতিবেদন না। হাতে বানানো রিপোর্ট। সেখানে আমি কেন, অনেকের রাজনৈতিক পরিচয় দেয়া আছে। তিনি বলেন, আমার বাবা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। বাবার নামে মাগুরায় ১৪ কিলোমিটার একটি রাস্তাও আছে। যেটি উদ্বোধন করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’ ব্যাচমেটদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘এ তো ২০০২ সালের ঘটনা। তাদের বিরুদ্ধে আমি সাক্ষী দিয়েছি- এমন প্রমাণ তারা দেখাক। বাস্তবে পারবে না। আসলে প্রশিক্ষণে গাফিলতির কারণে অনেকে আউট হয়ে যান। প্রতি ব্যাচেই এ রকম হয়ে থাকে। এর জন্য আমি দায়ী হতে যাব কেন।’ সবশেষে তিনি দাবি করেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যেসব অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, তার কোনোটিই প্রফেশনাল মিস কন্ডাক্ট না।’

সুত্রঃ যুগান্তর

সংবাদটি দৈনিক যুগান্তর থেকে সংগৃহীত, কারো অভিযোগ থাকলে তা আমাদের জানালে আমরা সংষ্কারে বদ্ধপরিকর।

Next Post

মুকুট বিহীন বাংলার সম্রাট চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

রবি মে ১২ , ২০১৯
আভা ডেস্কঃ অস্টিয়ার ভিয়েনায় বাংলা কমিউনিটির অভিভাবক, সমাজ সেবক শাহ মোহাম্মদ ফরহাদ পরলোকগমন করেছেন। সদা হাসোজ্জল মানুষটি এখন আর নেই। চলে গেছেন না ফেরার দেশে। গতকাল স্থানীয় সময় সকাল ৯ টায় ভিয়েনার ভিলহেইম হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুকুট বিহীন এ সম্রাট মৃত্যুবরন করেন। প্রবাসী সাংবাদিক আহমেদ ফিরোজ জানান, তিনি ছিলেন মুকুট […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links