নিজস্ব প্রতিনিধিঃ আজ সেই দিন, ১৪ ডিসেম্বর। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে বেদনাবিধুর দিন। সারা দেশের মানুষ আজ বেদনাসিক্ত অশ্রু-শ্রদ্ধায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করবে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজশাহী জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি সম্মান জানিয়ে শহীদ স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন পুলিশ সুপার জনাব মো: শহিদুল্লাহ । এসময় জেলা পুলিশের অন্যান্য অফিসারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পরপরই নিকট-আত্মীয়রা মিরপুর ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে স্বজনের লাশ খুঁজে পায়। বুদ্ধিজীবীদের নিথর দেহজুড়েই ছিল আঘাতের চিহ্ন, চোখ, হাত-পা বাঁধা, কারও কারও শরীরে একাধিক গুলি, অনেককে হত্যা করা হয়েছিল ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে। লাশের ক্ষতচিহ্নের কারণে অনেকেই তাদের প্রিয়জনের মৃতদেহ শনাক্তও করতে পারেননি।
এই গণহত্যা চালানো হয় পরিকল্পিতভাবে। ডিসেম্বরে এসে নিজেদের পরাজয় অনিবার্য জেনে পাকিস্তানি দখলদাররা বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার গোপন নীলনকশা গ্রহণ করে। তারা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা তৈরি করে তা তুলে দেয় তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর সশস্ত্র ক্যাডার গ্রুপ রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের হাতে।
এরপর ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই হিটলিস্ট অনুযায়ী পাকবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘৃণ্যতম অপকর্ম চালানো হয়। সহস্রাধিক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে পৈশাচিকভাবে হত্যা করে তারা।
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে আছেন অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র দেব, অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমদ, ডা. ফজলে রাব্বী, ডা. মোহাম্মদ মুর্তজা, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, ড. সন্তোষ ভট্টাচার্য, ডা. মোহাম্মদ শফি, সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন, শহীদুল্লা কায়সার, নিজামুদ্দিন আহমেদ, খন্দকার আবু তালেব, আনম গোলাম মোস্তফা, শহীদ সাবের, সৈয়দ নাজমুল হক, জহির রায়হান, আলতাফ মাহমুদ, ড. আবদুল খায়ের, ড. সিরাজুল হক খান, ড. ফয়জল মহী, ডা. আবদুল আলীম চৌধুরী, সেলিনা পারভীন, অধ্যাপক হবিবুর রহমান, কবি মেহেরুন্নেসা, গিয়াস উদ্দীন আহমদ প্রমুখ।