নিজের অপকর্ম ঢাকতে দোষারোপ করেন ” পুলিশ পরিদশকের” ফুটপাত থেকে শুরু করে সর্বমোট চাঁদা দিতে হয় ২০ লাখ!

আভা ডেস্ক : ফুটপাতের দোকান, নসিমন (এক ধরনের গাড়ি), ইজি বাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজিচালিত বেবি, ট্রাক, মিনি ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ড ভ্যানকে দিতে হয় চাঁদা। দৈনিক গড়ে ৭০ হাজার টাকা হিসাবে এসব খাত থেকে তাঁর মাসিক আয় ২০ লাখ টাকার বেশি। চাঁদা আদায়ের এসব অভিযোগ গাজীপুর শহর টাউন ফাঁড়ির পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে। তাঁর ‘জুলুমে’ অতিষ্ঠ ক্ষুদ্র আয়ের এসব পেশার মানুষ।
গাজীপুর নগরের দক্ষিণ ছায়াবিথী এলাকার বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক ইয়াসির হোসেন বলেন, এমনিতেই যানজটে অতিষ্ঠ শহরবাসী। তার ওপর মূল শহরে প্রবেশের প্রধান ও একমাত্র সড়কের দুই পাশের ফুটপাত দখল করে ভাসমান দোকান বসিয়েছে পুলিশ। প্রয়োজনের তুলনায় এ সড়ক সরু হওয়ায় পথচারীরা ফুটপাত দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। সড়কের শিববাড়ী মোড়, জয়দেবপুর বাসস্ট্যান্ড, কাঁচাবাজার, মুক্তমঞ্চ, রেলগেট, রেলস্টেশন সড়ক, জোড়পুকুর, রথখোলা, কেবির মার্কেট ও রাজবাড়ী এলাকায় বসানো হয়েছে ইজি বাইক, সিএনজিচালিত বেবি, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও লেগুনাস্ট্যান্ড। এসব থেকে টাউন ফাঁড়ির পরিদর্শকের নামে দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসোহারা আদায় করে তাঁর মনোনীত লোকজন।
ভাসমান ব্যবসায়ীদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জয়দেবপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বাজার সড়ক হয়ে রেলগেট, মাজেদা কমপ্লেক্স, পৌর মার্কেট ও জোড়পুকুর পর্যন্ত সড়কে প্রতিদিন তিন শতাধিক রিকশাভ্যানে সবজি, জামাকাপড়, ফলমূলসহ নানা পণ্য বিক্রি হয়। এসব ভ্যান থেকে ইন্সপেক্টর হাসান প্রতিদিন নেন ২০০ টাকা। শহরের প্রধান সড়ক, বাজার সড়কসহ বিভিন্ন সড়কেও প্রতিদিন বসে এক হাজারের বেশি ভাসমান দোকান ও হকার। এসব দোকান ও হকার থেকে তিনি দৈনিক নেন ৪০ টাকা। এ ছাড়া মুক্তমঞ্চ ও কালীমন্দিরের সামনে রাস্তায় পাঁচ-সাতটি ফলের দোকান বসিয়েছেন তিনি। তাদের কাছ থেকে জামানত নিয়েছেন ১০ হাজার টাকা করে। আর তাদের প্রতিজনের কাছ থেকে মাসোহারা নেন এক হাজার টাকা।
শহরের রেলগেটসংলগ্ন রেলওয়ের জায়গায় রয়েছে বিশাল ফল মার্কেট। এখানে চা-পুরি ও ভাতের হোটেল মিলিয়ে ৩০-৩৫টি ছোট দোকান রয়েছে। এসব দোকান বসার জন্য পুলিশকে দিতে হয়েছে কমবেশি নিচে ১০ হাজার ওপরে ২০-২২ হাজার করে টাকা। দোকানগুলো থেকে ইন্সপেক্টর হাসান মাসে নেন কম করে হলেও ২০ হাজার টাকা। গত ফেব্রুয়ারি মাসে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অবৈধ দোকানপাট ভেঙে দিলেও এক সপ্তাহ না যেতেই হাসান সেখানে আবার দোকান বসার সুযোগ করে দেন।
নগরীর কালীমন্দির ও সিটি করপোরেশনের গেটের কাছ থেকে প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক ইজি বাইক বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করে। এসব ইজি বাইককে ইন্সপেক্টর হাসানকে মাসে চাঁদা দিতে হয় ৮০০ টাকা করে)। রুটে ভর্তির (চলাচলের অনুমতি) জন্য প্রতি ইজি বাইককে দিতে হয় ১০ হাজার টাকা। ভর্তি না হয়ে কোনো ইজি বাইক যাত্রী বহন করতে পারে না। অন্যদিকে জয়দেবপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে সালনা, শিমুলতলী ও আশপাশের গন্তব্যে চলাচল করে পাঁচ শতাধিক ইজি বাইক। এই স্ট্যান্ডের সমিতি থেকে ইন্সপেক্টর হাসান মাসোহারা নেন ২০ হাজার টাকা। রাজবাড়ী সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড এবং কেবির মার্কেটের সামনের সিএনজিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড থেকে মাসে নেন লাখ টাকা।
রাজবাড়ী মাঠে প্রতিদিন বসে ৩০-৩৫টি চটপটি দোকান। প্রতি দোকান থেকে দৈনিক ইন্সপেক্টর হাসানকে দিতে হয় ৩০০ টাকা। শহরের ভেতর দিয়ে চলাচলকারী ট্রাক-মিনি ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ড ভ্যানের কাগজপত্র দেখার নামে আটকে সর্বনিম্ন ৫০০ ও সর্বোচ্চ চার-পাঁচ হাজার টাকা, এমনকি শহরের বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী পরিবহনের জন্য মাইক্রোবাসকে দুই-তিন হাজার টাকা করে মাসোহারা দিতে হয় তাঁকে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাহমুদুল হাসান বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে করা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ সত্য নয়। রাজনৈতিক কারণে ফুটপাত, ইজি বাইকসহ অন্যান্য যানবাহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করা যাচ্ছে না।
সূত্র : কালের কণ্ঠ। ( যোগফল)

Next Post

এসআইকে বাসচাপায় হত্যা করল এক চালক

সোম সেপ্টে. ৩ , ২০১৮
বিশেষ প্রতিনিধি : ছয় দিন আগে চট্টগ্রামে রেজাউল করিম রনিকে বাস থেকে ফেলে চাপা দিয়ে হত্যার রেশ এখনো কাটেনি। এর মধ্যেই রাজধানীতে বাসচাপায় এক এসআইকে হত্যা করল এক চালক। ওই এসআই’র নাম উত্তম কুমার সরকার (৩৪)। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রূপনগর থানায় কর্মরত ছিলেন। রোববার বিকালে মিরপুরের রাইনখোলা মোড়ে […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links