নতুন কেন্দ্র উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

কাল ৭০-এ পদার্পণ আ. লীগের
• প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেন্দ্রে আ. লীগের নতুন কেন্দ্রীয় কার্যালয়
• নতুন কেন্দ্রীয় কার্যালয় উদ্বোধন করবেন শেখ হাসিনা
• সারা দেশ থেকে ৪১৫৭ নেতা-কর্মীকে ডাকা হয়েছে
• আগামী নির্বাচন সম্পর্কে দলীয় প্রধান দিকনির্দেশনা দেবেন

এক দিন পর আওয়ামী লীগ ৭০ বছরে পদার্পণ করছে। পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেনে যে দলটির প্রতিষ্ঠা, সেই দল পেয়েছে সুরম্য ১০ তলা কেন্দ্রীয় কার্যালয়। আওয়ামী লীগই একমাত্র দল, যাদের বাংলাদেশের ইতিহাসে টানা দুই মেয়াদে সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আরেকটি নির্বাচন সামনে রেখে এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনও বিপুল ও বর্ণিল করার উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।

এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মূল কেন্দ্রে রয়েছে আওয়ামী লীগের নতুন কেন্দ্রীয় কার্যালয়। কাল শনিবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন এর উদ্বোধন করবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। এ জন্য সারা দেশ থেকে ৪ হাজার ১৫৭ জন নেতা-কর্মীকে ডাকা হয়েছে। নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শরিক করা হবে তাঁদের। এরপর তাঁদের নিয়ে গণভবনে বিশেষ বর্ধিত সভা করা হবে। গত বছর ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন শেখ হাসিনা ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে নতুন ১০ তলা ভবনের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছিলেন।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সারা দেশের নেতাদের ডেকে এনে অংশীদার করাই মূল লক্ষ্য। এ ছাড়া আগামী নির্বাচন সম্পর্কে দলীয় প্রধান দিকনির্দেশনা দেবেন। বিশেষ করে আগামী নির্বাচনে দলের প্রচারকৌশল কী হবে, এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে। সরকার যেসব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, তা তুলে ধরা, মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর মতো অর্জন নিয়ে প্রচার করতে বলবেন দলীয় প্রধান।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, গণতন্ত্র অব্যাহত রাখা, আগামী নির্বাচনে করণীয় এবং কীভাবে জনগণের আরও কাছে যাওয়া যায়-এসব বিষয়ে দলীয় প্রধান দিকনির্দেশনা দেবেন। পাশাপাশি সরকারের অর্জন কী, তা দলের নেতাদের অবহিত করা হবে এবং জনগণকেও যাতে তা অবহিত করা হয়, সেই নির্দেশনা থাকবে। দলীয় শৃঙ্খলার ওপর জোর দেওয়া হবে। তিনি বলেন, দলের নতুন কার্যালয় উদ্বোধন একটা সুখবর। দলের সর্বস্তরের নেতাদের এ জন্যই ডাকা হয়েছে। সাংসদেরা নিজ নিজ এলাকার নেতাদের সংসদেও নিয়ে যাবেন ওই দিন।

বর্ণাঢ্য আয়োজন
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর সড়ক বিভাজকগুলোতে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও কাটআউট চোখে পড়ছে। সড়কের পাশে বড় বিলবোর্ড বসানো হয়েছে। তোরণও নির্মাণ করা হয়েছে কিছু কিছু স্থানে। শনিবার ভোরে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ আনুষ্ঠানিকতা শেষে সকাল ১০টায় নতুন কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভবন উদ্বোধন করবেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। বেলা ১১টায় গণভবনে বিশেষ বর্ধিত সভা বসবে। ৪ হাজার ১৫৭ জন নেতার অংশগ্রহণে সাম্প্রতিককালে এত বড় বিশেষ বর্ধিত সভা আর হয়নি বলে আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন।

দলীয় সূত্র জানায়, বিশেষ বর্ধিত সভায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ৮১ জন। এরপরই আছে ৪১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ। জাতীয় কমিটির সদস্য রয়েছেন ৯৯ জন। এর বাইরে প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা ও পৌরসভার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকেরা থাকবেন। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে দলের সাধারণ ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদদের। সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সিটি করপোরেশনের সব দলীয় মেয়র, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশনের অন্তর্গত থানা ও ওয়ার্ডের শীর্ষ নেতারা বৈঠকে অংশ নেবেন।

সুরম্য কেন্দ্রীয় কার্যালয়
১০ তলা এই ভবন উদ্বোধনের পর গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে নতুন কার্যালয়ের চাবি তুলে দেবেন। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন শেষে সভাপতিমণ্ডলী, যুগ্ম সম্পাদকসহ অন্য নেতা ও সহযোগী সংগঠনগুলোর জায়গা নির্ধারণ করে দেবেন।

দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জন্য রাখা হয়েছে সুপরিসর কক্ষ। নবম তলায় দলের সভাপতির কক্ষের সঙ্গে রয়েছে বিশ্রামাগার ও নামাজের জায়গা। এ ছাড়া বিভিন্ন তলায় ডিজিটাল লাইব্রেরি, ভিআইপি লাউঞ্জ, সাংবাদিক লাউঞ্জ ও ক্যানটিন থাকছে। বিভিন্ন তলায় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কার্যালয় থাকবে।

দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় দুটি বড় সুসজ্জিত সম্মেলনকক্ষ। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দুটি সম্মেলনকক্ষে প্রায় ৬০০ মানুষের বসার ব্যবস্থা হবে। একদম ওপরে দশম তলায় ক্যাফেটেরিয়া। সব কটি তলাতেই কক্ষ, পর্যাপ্ত খোলা জায়গা, শৌচাগার এবং গাছ বা টব বসানোর জায়গা আছে।

আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভবনটি দলীয় তহবিলের অর্থে নির্মাণ করা হয়েছে। এটা নির্মাণে সব মিলিয়ে ১৩-১৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর যাতায়াত থাকবে বলে এটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা (কেপিআই) হয়ে গেছে।

গতকাল সরেজমিন দেখা যায়, ভবনের সামনের দেয়ালের দুই পাশ কাচ দিয়ে ঘেরা আর মাঝখানে সিরামিকের ইটের বন্ধন। সামনের দেয়ালজুড়ে দলের সাইনবোর্ডসহ দলীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’। সংবিধানের চার মূলনীতি খোদাই করে লেখা। বসানো হয়েছে স্টিলের নৌকা। ভবনের সামনে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে স্থায়ী স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। ভবনটির প্রথম থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত প্রতিটি ফ্লোর ৪ হাজার ১০০ বর্গফুট। চতুর্থ তলা থেকে ওপরের সব ৩ হাজার ১০০ বর্গফুটের।

নতুন ভবন উদ্বোধনের পর আওয়ামী লীগের সব সাংগঠনিক কার্যক্রম চলবে নতুন এই কার্যালয় থেকে। আর ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয় থেকে দলের নির্বাচনী কার্যক্রম, সিআরআইসহ দলের অন্যান্য সংস্থার গবেষণামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে।

Next Post

খালেদা জিয়ার কারামুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল।

শুক্র জুন ২২ , ২০১৮
আভা ডেস্ক: দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। শুক্রবার (২২ জুন) সকাল ৮টায় রাজধানীর কল্যাণপুরে তারা এ বিক্ষোভ মিছিল করে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম জানান, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links