নওগাঁর ডিসিকে ফোন করে যা বললো তরুণ, জনসেবার মান উন্নয়নে কাজ করে ডিসি ।

আভা ডেস্কঃ গতকাল (শনিবার) আমার মোবাইলে একটি ফোন আসে। কলারকে জিজ্ঞাসা করি আপনার জন্য কি করতে পারি। তিনি বলেন, নওগাঁর একটি অটোরাইস মিলে তিনি কাজ করেছেন এক মাস বিশ দিন। এরপর তিনি চার দিনের ছুটি চাইলে ছুটি না দেয়ায় কাজ ছেড়ে দেন। এক মাসের টাকা আগেই পেয়েছেন, কিন্তু বাকি বিশ দিনের টাকা দিচ্ছে না। আজ দেব কাল দেব করেছে, এখন বলে টাকা দেবে না, মিলে গেলে মাইর দেবে।

মিলের ম্যানেজারের নম্বর সে আমাকে দেয়। তরুণ কণ্ঠ এবং একেবারেই আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলছিল এবং আমাকে ভাই সম্ভাষণ করছিল। আমি তুমি সম্ভাষণে তাকে জিজ্ঞাসা করি আমার নম্বর সে কোথায় পেল। বলল ৩৩৩ নম্বরে কল করে নিয়েছে।

ম্যানেজারকে একটু পরেই ফোন করি। তিনি বলেন, স্যার আজ পাঠিয়ে দেন টাকা দিচ্ছি। ঘণ্টাখানেক পরে ম্যানেজার সাহেব আমাকে ফোন করে ভাই সম্ভাষণে বলেন ‌‘কোথা থেকে বলছেন ভাই’। আমি বলি কিছুক্ষণ আগেতো কথা বললাম পরিচয় দিয়ে। আমি ডিসি নওগাঁ। উত্তরে তিনি বলেন, ‘ওতো ডিসির কাছে যাতেই পারবে না, কি কন না কন’।

আমি মনে মনে হাসি আর বলি, আপনি কি ডিসির সাথে দেখা করতে পারেন। তিনি বলেন, ‘না আমিও পারি না’ আমি বলি কে কে দেখা করতে পারেন আর পারেন না, তার লিস্ট আপনার কাছে আছে? ‘না নেই’। আমি বলি, আচ্ছা কাল ওকে যেতে বলেছি টাকাটা দেবেন, না হয় কাল ওকেসহ ডিসি অফিসে আসেন। একটু পরে আবার ছেলেটা ফোন করে বলে ভাই কাল সকালে আপনাকেসহ ডেকেছে। আমি ওকে বলি তুমি কাল যাও টাকা দেবে।

এর মধ্যে আরেকটি নম্বর থেকে আমার পরিচয় জানতে চেয়ে ফোন আসে। আজ সকাল ১০টার দিকে ছেলেটি আবার ফোন করে বলে ভাই টাকা দেবে না বলছে। আমি ডিসি, ফুড সাহেবকে বলি মিলের মালিক বা ম্যানেজারকে আমার কাছে আসতে বলার জন্য। কিছুক্ষণের মধ্যেই ছেলেটি আবার ফোন করে বলে সম্পূর্ণ টাকা পেয়েছে।

এই ঘটনাটিকে আমার বদলে যাওয়া বাংলাদেশের একটি খণ্ড চিত্র বলে মনে হয়েছে। আমরা অবকাঠামোগত উন্নয়নের অনেক দৃশ্য চোখে দেখি। ঘটনাটি এখানে পোস্ট করলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্য যে দিকটি ঘটনাটির মাধ্যমে আমার নিকট উদঘাটিত হল তা আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

১. ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল আমরা কতটা ভোগ করছি তার একটি ছোট্ট উদাহরণ এ ঘটনা। আজ একজন নিরক্ষর শ্রমিকও ডিজিটাল সুবিধা গ্রহণ করছেন। ৩৩৩-এ ফোন দিয়ে ডিসির নম্বর সংগ্রহ করতে না পারলে তার হয়তো ঘাম ঝরানো শ্রমের ২০ দিনের মজুরি পাওয়াই সম্ভব হতোনা।

২. সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলে যাওয়া মানসিকতা এ ঘটনায় প্রস্ফূটিত হয়েছে। ডিসির কাছে এভাবে মানুষ সহজে পৌঁছাতে পারে তা এখনো হয়তো অনেকে বিশ্বাস করতে চান না। তাছাড়া মানুষের ধারণা ডিসির কাছে একটা কিছু বললে তিনি তার এডিসিকে বলবেন, এডিসি ইউএনওকে বলবেন। এভাবে তিন চারজন ঘুরে মেসেজ যাবে। ডিসি সরাসরি মানুষকে ফোন দিতে পারেন তাও মানুষ বিশ্বাস করতে চান না।

এখানে দায়িত্ব নিয়েই বলতে চাই, জেলা প্রশাসকগণের নিকট যে কেউ দেখা করতে পারেন, ফোন করতে পারেন। কারোর ভায়া বা মাধ্যম হয়ে ডিসিদের কাছে আসতে হয় না। এমনকি বুধবার এমন একটি দিবস যেদিন ডিসিগণ কোনো অফিসিয়াল ট্যুর রাখেন না, মিটিংয়ে এটেন্ড করেন না। শুধুমাত্র জনসাধারণকে শোনার জন্য অফিসে অবস্থান করেন।

আসুন আমরা সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলি।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদের ফেসবুক থেকে নেয়া।

Next Post

কাস্টমস দিবস, দিনটি উপলক্ষে নির্মিত হয়েছে ‘পরী ও পানির বোতল’ নামে একটি নাটক।

সোম জানু. ২০ , ২০২০
আভা ডেস্কঃ ২৬ জানুয়ারি কাস্টমস দিবস। দিনটি উপলক্ষে নির্মিত হয়েছে ‘পরী ও পানির বোতল’ নামে একটি নাটক। এটি রচনা করেছেন জামাল হোসেন। পরিচালনা করেছেন মাসুম শাহরিয়ার। এ বিশেষ নাটকে অভিনয় করেছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম। নাটকের গল্প প্রসঙ্গে নাট্যকার জানান, মাদক চোরাচালানকারীদের পরিকল্পনা এবং তাদের […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links