নিজস্ব প্রতিনিধি : রাজশাহী নগরীর প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে গলি রাস্তায় চলাচল করছে নিষিদ্ধ ও রেজিস্ট্রেশনবিহীন যানবাহন। প্রকাশ্যে এসব যানবাহন চলাচল করলেও চেকপোস্টগুলোতে শুধু মোটরসাইকেল টার্গেট করতে দেখা যায়। ওইসব অবৈধ যানগুলোর দিকে কোনই নজর নেই ট্রাফিক বিভাগের। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকলে অবশ্যই মোটরসাইকেল আরোহীদের জরিমানা করতে হবে। পাশাপাশি অন্য অবৈধ যানগুলো যাতে নিয়ম ভঙ্গ করে শহরে চলাচল করতে না পারে সে বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে হবে। তবেই সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
সরেজমিনে নগরীর কামারুজ্জামান চত্ত্বর, নওদাপাড়া আমচত্ত্বর ও ভদ্রা মোড়, তালাইমারি, বন্ধগেট বাইপাস ঘুরে দেখা গেছে, শ্যালোইঞ্জিন চালিত নিষিদ্ধ ঘোষিত যান ভটভটি-নসিমনসহ রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজি, মাহিন্দ্রা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা প্রকাশ্য চলাচল করছে। পাশাপাশি নগরীতে দিনের বেলায় ট্রাক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সড়কগুলোতে চলাচল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রশাসনের চেকপোস্ট দিয়েই এসব অবৈধ যানবাহন নগরীতে প্রবেশ ও চলাচল করছে।
রাজশাহী নগরীর গুরুত্বপূর্ণ প্রায় প্রতিটি মোড়েই বসান হয় ট্রাফিক চেকপোস্ট। সেখানে দায়িত্বে থাকেন ট্রাফিক সার্জেন্টসহ বেশ কয়েকজন ট্রাফিক পুলিশ। তাদের সামনে দিয়ে অবৈধ যান শহরে প্রবেশ করছে। কিন্তু তারা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে মোটরসাইকেলের প্রতি। মোটরসাইকেল দেখলেই তারা সতর্ক হয়ে ওঠেন। চালককে থামিয়ে শুরু হয় তল্লাশি।
বুধবার দুপুর ১২টায় নগরীর কামারুজ্জামান চত্ত্বরে গিয়ে দেখা যায়, এখানে দায়িত্বে রয়েছেন সার্জেন্ট আরমান। তাকে সহযোগীতা করছেন প্রায় ৪ জন ট্রাফিক পুলিশ। এসময় তার সামনে দিয়ে নম্বরপ্লেটবিহীন সবুজ সিএনজি, মাহিন্দ্রা পার হয়ে যায়। একই সময় ট্রাকও যাতায়ত করতে দেখা যায়। অথচ সার্জেন্ট আরমানকে সেই যানবাহনগুলোর গতিরোধ করতে দেখা যায়নি। একই সাথে তার সামনেই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সড়কে দাঁড় করিয়ে যাত্রী তুলছে। ফলে ব্যস্ততম এই মোড়টিতে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
(ছবিতে সার্জেন্ট আরমানের পেছনে মালবাহী ট্রাক, পাশে ট্রেন লাইনের উপরে অটো দাঁড় করিয়ে যাত্রী তোলা হচ্ছে)
এত অনিয়ম সত্বেও সার্জেন্ট আরমানের টার্গেট শুরু মোটরসাইকেল। তিনি মোটরসাইকেল দেখলেই নিজে নয়তো তার সহযোগী ট্রাফিক পুলিশদের ইশারা করে সেই মোটরসাইকেল থামাতে বলছেন। এই চিত্র নগরীর প্রতিটি চেকপোস্টেরই। সার্জেন্টরা যেনো রয়েছেন শুধুমাত্র মোটরসাইকেল ধরতে।
বিভিন্ন অফিসের পাওয়া তথ্য অনুযায়ি, নগরীতে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার সংখ্যাই রয়েছে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার। এর বাইরেও প্রতিদিনই নামছে আরও নতুন নতুন অটোরিকশা। রয়েছে প্রায় ১০ হাজারের মতো সবুজ রংয়ের সিএনজি ও মাহিন্দ্রা। এর বাইরেও শহরে চলাচল করতে দেখা যায় ভটভটি ও নসিমন। অনেক অটোরিকশার নবায়ন নেই। এছাড়া এই যানবাহনগুলোর ফিটনেস নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। তাছাড়া এর চালকদের দক্ষতা বা সড়কে চলাচলে নিয়ম মনতে দেখা যায় না বা তারা নিয়মের তোয়াক্কাও করে না। এমনকি শিশুরাও চালাচ্ছে অটোরিকশা। যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলে শহরজুড়ে। ফলে নগরীতে বাড়ছে যানজট।
আরএমপির মুখপাত্র ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতে খায়ের আলম বলেন, ট্রাফিক আইনে সকল যানবাহকে চেক করার বিধান রয়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজ না থাকলে নির্দিষ্ট জরিমানারও বিধান রয়েছে। আমাদের ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে সকল সার্জেন্ট ও সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেয়া রয়েছে। এখানে পক্ষপাতিত্বে কোন বিষয় নেই। তবে কোন সার্জেন্ট যদি এমন করে থাকে তবে সেটি ভুল। collected by raju ahmmed of sunsain