চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ প্রায় ৬ মাসের প্রেমের সম্পর্কে প্রেমিকার অশ্লীল ছবি ফেসবুকে ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে প্রেমিক। পরে যুবতীর পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেলে ফিরিয়ে দেয় মেয়েটির পরিবার। প্রায় দেড় মাস আগে অন্য জায়গায় বিয়েও করে নেয় ছেলেটি। বিয়েতে রাজি না হওয়ার ক্ষোভে নিজের বিয়ের পরেও সাবেক প্রেমিকার অশ্লীল ও অন্তরঙ্গ মূহুর্তের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক-ম্যাসেঞ্জারে ফাইরাল করে সাবেক প্রেমিক মহারাজপুর শেখপাড়া গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে রাব্বি খান।
সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের শেখটোলা গ্রামে এমন ঘটনা ঘটে।
প্রেমিকার ছবি ভাইরাল হওয়ার পর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় ৪ ইউপি সদস্যের মাধ্যমে সালিস হয়।
এতে মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. জলিল উদ্দিন জালাল, সেমাজুল হক, মো. আলম ও মো. ইসরাফিল হক কিশোরীর পরিবারকে ৯০ হাজার টাকা দিয়ে এর কোন আইনী ব্যবস্থা না নিতে হুমকি দেয়।
গত সোমবার রাতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে না জানিয়ে করা সেই সালিশের পর হতে অভিযুক্ত সাবেক প্রেমিক রাব্বি খান।
একই এলাকার এবছর এসএসসি পাশ করা ১৬ বছর বয়সী ভুক্তভোগী কিশোরী ও তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাব্বির সাথে ওই কিশোরীর দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কয়েকদিন আগে কিশোরীর আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় অটোচালক রাব্বি। এরপর মেয়েটির পরিবার বিষয়টি জানতে পারলে স্থানীয়ভাবে সালিশ করার চাপ দেয় ছেলের পরিবার ও স্থানীয় ইউপি সদস্যরা। যার কারনে ৯০ হাজার টাকায় সমাধান হয়। আর বাকি ১০ হাজার টাকা ভোগ করেন ৪ ইউপি সদস্য।
মেয়েটির বাবা জানান, অন্তরঙ্গ মুর্হূতের ছবি নিয়ে হুমকি দিতে থাকে কিশোরীকে। এই কারনে বলেন আর চাপেই বলেন আমি মিমাংশা করে নেই । কিন্তু এটা করার কোন ইচ্ছা ছিল না আমার ।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য কয়েক দফা অভিযুক্ত রাব্বি ও তার পরিবারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সরাসরি বাড়িতে উপস্থিত হলে রাব্বির বড় ভাই এবিষয়ে কোন কথা বলবেন না বলে জানিয়ে দেন।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে নারাজ সালিশের সভাপতি ও ০৮ নং ওয়ার্ড সদস্য মো. জলিল উদ্দিন জালাল। তবে ০৬ নং ওয়ার্ড সদস্য ইসরাফিল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুই পরিবারের সম্মতিতেই মেয়েটির ভবিষ্যতের কথা ভেবে একটি সালিশ করা হয়েছে।
মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব অধ্যক্ষ এজাজুল হক বুলি বলেন, এবিষয়ে সালিশের ব্যাপারে আমি কিছুই জানতাম না। সালিশের দিন রাতেই একজন সাংবাদিকের ফোনে জানতে পারি এমন ঘটনা হয়েছে। তবে এমন অপরাধের বিচার গ্রাম আদালতের নেয়। এই চার ইউপি সদস্য অর্থ নেয়ার জন্য এমন সালিস করে থাকে বলেও জানান তিনি।
এবিষয়ে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোন অভিযোগ হয়নি জানিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার-ইন চার্জ (ওসি-তদন্ত) কবীর হোসেন বলেন, এ বিষযয়ে আমরা কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।