আভা ডেস্কঃ অসদুপায়ে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় কারা অধিদপ্তরের সাবেক ডিআইজি বজলুর রশীদকে জামিন দেয়নি হাইকোর্ট। জামিন প্রশ্নে জারিকৃত রুল খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। আদালত বলেছেন, আমরা মামলার রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করেছি। রেকর্ডের সঙ্গে এজাহারের তেমন অসামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয়নি। জামিন আবেদনকারী তিন মাস দশ দিন ধরে কারাগারে আছেন। অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে তাকে এখনই জামিন দেওয়া হলে উনি তদন্তে প্রভাব বিস্তার করতে পারেন।
আদালত বলেন, এ ধরনের অপরাধ হোয়াইট কলার ক্রাইম (সমাজের উচ্চ আসনে থেকে ভদ্রবেশে অপরাধ সংগঠন করা)। যদি এই মামলার তদন্ত পর্যায়ে এখনই জামিন দেওয়া হয় তাহলে বিচার ব্যবস্থা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠতে পারে। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে ছয় মাসের মধ্যে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত সম্পন্নের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ সময় মামলার কেস ডকেট (সিডি) নিয়ে আদালতে উপস্থিত তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. নাসিরউদ্দিন। বলেন, ছয় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করা সম্ভব হবে।
অসদুপায়ে অর্থ উপার্জনের অভিযোগে বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলার এজাহারে বলা হয়, ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী রোডে রূপায়ন হাউজিংয়ের স্বপ্ন নিলয় প্রকল্পে প্রায় তিন হাজার বর্গফুটের আয়তনের একটি অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন বজলুর রশীদ। এর দাম হিসেবে পরিশোধ করা তিন কোটি ৮ লাখ টাকার কোনো বৈধ উৎস তিনি প্রদর্শন করতে পারেননি। এমনকি অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়সংক্রান্ত কোনো তথ্যও তার আয়কর নথিতে প্রদর্শন করা হয়নি। ফলে তার এই পরিশোধিত তিন কোটি ৮ লাখ টাকা জ্ঞাতআয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। এই মামলায় জামিন চেয়ে তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেন। গত ডিসেম্বর মাসে হাইকোর্ট জামিন প্রশ্নে রুল জারি করে। তার পক্ষে অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু ও গোলাম শরীফ রব্বানী এবং দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিনউদ্দিন মানিক শুনানি করেন।
প্রসঙ্গত, এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়ের জন্য রূপায়ন হাউজিং এস্টেটের সঙ্গে বজলুর রশীদ চুক্তি করেছিলেন। ওই বছরের ৭ জুন পর্যন্ত ৫৪ হাজার টাকা ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে চেকে পরিশোধ করেন। বাকি তিন কোটি ৭ লাখ ৪৬ হাজার টাকা নগদে পরিশোধ করেন। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় বিষয়টি দুদকের নজরে আসে। রূপায়ন হাউজিং থেকে তার তথ্য যাচাই করে ফ্ল্যাট ক্রয়ের সত্যতা পাওয়া যায়। কিন্তু ফ্ল্যাট কেনার অর্থের উৎসের বিষয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
ইত্তেফাক