এ দেশের জনগনের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী।

নজরুল ইসলাম তোফা :: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ দেশের জনসাধারণের কোনো মানুষই আর গৃহহীন থাকবে না। ২০২১সালের মধ্যে ক্ষুধা এবং দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি উদ্যোগ বলয়ের মধ্যেই রয়েছে বিপন্নে আশ্রয় ও গৃহহীনে গৃহ। এই জন্যে সারা দেশে আশ্রয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই প্রকল্পের বাইরেও নানাভাবে অসহায় মানুষদের আবাস এবং আবাদের জন্যে জমির বন্দোবস্ত করে দেয়া হচ্ছে। এমন সরকার সকল পর্যায়ের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের মধ্যে দিয়েই দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে চায়। এই দেশের অসহায় মানুষদের থাকবে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প, গৃহায়ন তববিল প্রকল্পের বাস্তবায়ন, নিজস্ব ঘরেই ফেরার এক কর্মসূচি ও তাদের অগ্রগতি কিংবা ভবিষ্যত পরিকল্পনা বিষয়ক গভীর চিন্তা চেতনার আলোকে একটি উদ্যোগ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়েছে এবং কাজও করছে। এ দেশের হত দরিদ্র মানুষের অধিকার যদি কেউ হরণ করতে চায় তাহলে সরাসরি জানতে চান তার যথাযথ ব্যবস্থাও নিবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা পানির মতোই স্বচ্ছ। তিনি বলেন যে, ২০১৪ সালের নির্বাচনে বলেছিলাম বাংলাদেশের মানুষ তিন বেলা পেট পুরে খেয়ে বেঁচে থাকবে। তাই আজ আল্লাহর রহমতে সেটা পুরন হতে চলেছে। এমন দেশে এখন আর কেউ না খেয়ে জীবনযাপন করে না।

একটু জানিয়ে রাখাই ভালো, ১৯৯৭ সালের ১৯ মে কক্সবাজার জেলা সহ তার পার্শ্ববর্তী বহু এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত হওয়ায় বহু পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছিল। তদানীন্তন সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐ সকল এলাাকাতেই পরিদর্শনে গিয়ে ছিল। তিনি সেই সকল মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখেই অত্যন্ত সহানুভূতিশীল হয়ে পড়েছিল। তাই সেই সব গৃহহীন পরিবার সমূহকেই পুনর্বাসনের তাৎক্ষনিক নির্দেশ দিয়েছিল। তারই পরিপেক্ষিতে ১৯৯৭ সালে “আশ্রয়ণ” নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল।পরে আরও ভাবনায় এনেছে- ‘সবার জন্য বাসস্থান নিশ্চিত করতেই হবে। সুতরাং এই বর্তমান সরকার নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’ তাই শুরুতেই নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির ও নিম্ন আয়ের মানুষদের আবাসন সমস্যা নিরসনকল্পে পরিকল্পিত আবাসিক প্রকল্প গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। দেখা যায় যে, অনেক পুনর্বাসিত ভিক্ষুকরাও সে পুনর্বাসনের পর পরই ঘর পেয়ে আরও স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে। বর্তমান এই সরকারের আমলে প্রতি উপজেলায়- ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের কার্যক্রমে, ১ ‘শ সহ মোট ৭ ‘শ ৯০ জন অসহায় দরিদ্রকে কিংবা ভিক্ষুকে পুনর্বাসিত করেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর কার্যালয় হতে ঘর পেয়েছে। আরোও অনেক দরিদ্র মানুষকে তিনি চিহ্নিত করছে। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায় তাহলো, বর্তমান সরকার অসচ্ছল মানুষ-যাদের জমি আছে ঘর নেই এই ধরণের ব্যক্তিদের তালিকা করে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প আশ্রয়ণ -২ এর আওতায় প্রথম পর্যায়ে সারা দেশেই ১ লাখ ৭৮ হাজার গৃহনির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে।

সমগ্র বাংলাদেশে এমন সরকার বিভিন্ন অর্থায়নেই ১৯৯৭ সাল থেকে এই পর্যন্ত তিনটি ফেজে আশ্রয়ণ প্রকল্প (১৯৯৭ – ২০০২), আশ্রয়ণ প্রকল্প (ফেইজ-২) (২০০২ -২০১০), আশ্রয়ণ- ৩ প্রকল্প (২০১০- ২০১৭) ১,৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ১,৪০,১২৮ টি দরিদ্র পরিবার পুনর্বাসন করা হয়েছে, তন্মধ্যে আশ্রয়ণ– ২ প্রকল্পের মাধ্যমে ৮৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৪,২১৫টি পরিবার পুনর্বাসন করা হয়। বর্ণিত প্রকল্পের সাফল্য ও ধারাবাহিকতায় ২০১০-২০১৭ সংশোধিত মেয়াদে ৫০,০০০ গৃহহীন এবং ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যেই আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প গ্রহণ করেছে এ সরকার। সারাদেশে গ্রামাঞ্চলে ব্যারাক হাউজ এবং বিভাগীয় সদর ও রাজউক, বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন এলাকা, জেলা ও উপজেলা সদর এবং পৌরসভা এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণ করার সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে।

পুনর্বাসিত ভূমিহীন, গৃহহীন, দুর্দশাগ্রস্ত এবং ছিন্নমূল পরিবারের স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামেই ভূমির মালিকানা স্বত্বের দলিল/কবুলিয়ত সম্পাদনসহ রেজিষ্ট্রি এবং নামজারী করে দেয়া হয়। আরও জানা দরকার এই পুনর্বাসিত পরিবারসমূহের জন্য সম্ভাব্য ক্ষেত্রেই বহু

পুকুর এবং গবাদি পশু প্রতিপালনের জন্য সাধারণ জমির ব্যবস্থা, কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ, মসজিদ নির্মাণ, কবর স্থান ব্যবস্থা করা হয়। এমন পুনর্বাসিত পরিবারের সদস্যদের জন্য বিভিন্ন উৎপাদনমুখী ও আয়বর্ধক কর্মকান্ডের জন্য ব্যবহারিক ও কারিগরী প্রশিক্ষণ দানসহ প্রশিক্ষণ শেষে তাদের মধ্যেই ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করা হয়। এই প্রকল্প গ্রামে বসবাসরত উপকার ভোগীদের নাম/স্বামীর নাম তাদের সন্তান সংখ্যা, ঋণ ইত্যাদি তথ্যাদি সংরক্ষণ করবার জন্যেই ডাটাবেইজ প্রণয়ন করা হয়, এই ডাটাবেইজের ঠিকানা আশ্রয়ণ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য মূলক কাজ- ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল, অসহায় দরিদ্র মানুষের পুনর্বাসন, ঋণ প্রদান ও তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা হয়েছে।

এমন এ আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমেই দারিদ্র্য দূরীকরণ আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গৃহীত হয়েছে প্রধান প্রধান কার্যাবলী তাহলো- প্রকল্প বাছাই, ভূমি উন্নয়ন, ঋণ প্রদান, প্রশিক্ষণ প্রদান, ব্যারাক নির্মাণ, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে উপকারভোগী বাছাই, বৃক্ষ রোপণ, ঘাটলা এবং অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ, টিউবওয়েল স্থাপন, ভি জি এফ ( VGF ) প্রদান (ব্যারাকে ওঠার পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যেই দেখভালের) কার্যক্রম।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ধারাবাহিকতায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প

(জুলাই ২০১০- জুন ২০১৭) নামের একটি প্রকল্পের কার্যক্রম আজও বর্তমানে চলমান রয়েছে। এমন এ প্রকল্পে ঘূর্ণি ঝড়, সিডর, আইলা আক্রান্ত এলাকার জন্য পাকা ব্যারাক ছাড়াও অন্যান্য অঞ্চলের জন্যে সেমি-পাকা ব্যারাক ও নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠীর জন্যেই বিভিন্ন কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও রীতিনীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিশেষ ডিজাইনের গৃহ নির্মাণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

খাস জমি, রিজিউম কৃত জমি, দান কৃত জমি এবং সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ক্রয়কৃত জমি চিহ্নিত করে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আশ্রয়ণ প্রকল্পের স্থান নির্বাচন এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ প্রকল্প প্রস্তাব প্রেরণ বা এমন এ আশ্রয়ণ প্রকল্পটি নিজস্ব জেলা প্রশাসকের মাধ্যমেই প্রস্তাবিত প্রকল্পের প্রাক জরিপ যাচাই হয়।

অনুমোদিত প্রাক্কলন এবং নক্সা অনুসারে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক নির্বাচিত স্থান নিচু হলে মাটির কাজ সম্পাদন করে। আবার এ আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাটির কাজের কর্মোত্তর জরিপ যাচাই, ব্যারাক নির্মাণের জন্যেই সশস্ত্র বাহিনীর অনুকূলে অগ্রিম অর্থ বরাদ্দ,

সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক ব্যারাক নির্মাণ এবং উপজেলা প্রশাসনের নিকট হস্তান্তর হয়ে থাকে। এমন সরকার অনুমোদিত নীতিমালা মোতাবেক নিজস্ব উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক উন্মুক্ত পদ্ধতিতে বহু পরিবার গুলো বাছাই হয়।

সবার জন্য বাসস্থান নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। সংক্ষেপে কিছু সংখ্যক এ প্রকল্পের পরিচিতি- উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য মাত্রা:- ৫০ হাজারের মতো ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসন। মূল ডি পি পি অনুমোদিতঃ- ৩১ আগষ্ট, ২০১০। সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদিত: ১৩ আগষ্ট, ২০১৩। প্রকল্পের মেয়াদ: জুলাই ২০১০-জুন ২০১৭। মোট প্রাক্কলিত ব্যয় প্রায় ২,২০,৪০০.১৯ লক্ষ টাকা। অর্থের উৎস বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব তহবিল।তাই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানেই একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প বাস্তবায়িত হলেই বাংলাদেশে আর খোঁজে পাওয়া যাবে না দরিদ্র মানুষ। বর্তমান সরকার আগামীতে যদি সরকার গঠন করতে পারে তাহলে, ২০২১ সালের মধ্যেই এ দেশে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। সুতরাং সত্যি সত্যি তাঁর অনেক স্বপ্ন এবং জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে সততা ও নিষ্ঠার প্রশংসা করতেই হয়। জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই স্বপ্ন এবং ইচ্ছা পুরনেই যেন তিনি কাজ করেন। তাইতো আজকের এ বাংলাদেশ এক সর্ববৃহৎ বাস্তবায়িত দেশ এবং একটি ইতিহাস হয়ে রবে।

লেখক:

নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।

Next Post

আসুন চারপাশটা পরিস্কার করি। রাজশাহীতে পরিচ্ছন্ন দিবস পালিত।

শনি সেপ্টে. ১৫ , ২০১৮
নিজস্ব প্রতিবেদক: চারপাশে ময়লা নাই, এমন একটা দেশ চাই, শ্লোগানে দেশটাকে পরিবর্তন করি দিবস পালিত হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ১১ টার দিকে পরিবর্তন চাই এর উদ্যোগে নগরীর আলপট্টি থেকে শুরু হয়ে পদ্মা গার্ডেন পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। পরিচ্ছন্ন অভিযানের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: হাবিবুর […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links