গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ), প্রতিনিধি :আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আ’লীগ’র সভাপতি- মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলায় আরো ২ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার বিকালে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ- রাশেদা সুলতানা নিহত এমপি লিটনের প্রতিবেশী আব্দুর রাজ্জাক ও জিয়াউর রহমান নামে ২ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এ নিয়ে এ মামলায় নিহত এমপি লিটনের স্ত্রী- সৈয়দা খুরশীদ জাহান স্মৃতি, ছোট বোন ও মামলার বাদী- ফাহমিদা বুলবুল কাকলীসহ মোট ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। মামলাটির স্বাক্ষী হিসেবে তালিকাভূক্ত রয়েছেন ৬০ জন। আদালতে সাক্ষী আব্দুর রাজ্জাক ও জিয়াউর রহমান বলেন, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন তাঁর বাড়ির ড্রয়িং রুমে অবস্থানকালে একদল দুর্বৃত্ত ঐ রুমে ঢুকে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এ খবর পেয়ে তাঁরা এমপি লিটনের বাড়িতে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে লিটনকে গুরুতর আহতাবস্থায় দেখতে পান। পরে তাঁকে (লিটনকে) আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীনাবস্থায় রাতেই তিনি (এমপি লিটন) মারা যান। তাঁরা জানান, আহত লিটনের সাথে তাঁরাও রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে গিয়েছিলেন। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)- অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম শফিক জানান, ঐ ঘটনায় লিটনের ছোট বোন ফাহমিদা বুলবুল কাকলী বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা ৪-৫ জনকে আসামী করে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্তের পর হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন পুলিশ। চার্জশীটে উল্লেখ করা হয়, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন- একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য- অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা (কর্ণেল) ডাঃ আব্দুল কাদের খাঁন। চার্জশীটে হত্যাকান্ডে ৮ জনকে আসামী হিসেবে সনাক্ত করেছেন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীণ সুন্দরগঞ্জ থানার নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক- আবু হায়দার আশরাফুজ্জামান আরিফ। এরমধ্যে সাবেক সাংসদ কাদের খাঁনসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা সকলেই জেল হাজতে রয়েছেন। এ হত্যাকান্ডের অপর সমন্বয়কারী হিসেবে মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত উপজেলা আ’লীগের তৎকালীণ দপ্তর সম্পাদক- চন্দন কুমার রায় ভারতে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করতে পারে নি পুলিশ। তবে, সেখানে অবৈধ প্রবেশের দায়ে গ্রেপ্তার হয়ে এখন সে দেশের কারাগারে থাকা চন্দনকে দেশে ফিরে আনার সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, উক্ত দিনক্ষণে উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের উত্তর সাহাবাজ গ্রামের নিজ ঘরে দুর্বৃত্তদের ছুঁড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে রাত সাড়ে ৮ টায় রমেক হাসপাতালে মারা যান এই সংসদীয় আসনের তৎকালীণ সংসদ সদস্য- মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন।