যাত্রীবাহী বিমান প্রায় তিন বছর ধরে ভারতের একটি বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

আভা ডেস্ক : বাংলাদেশের একটি বেসরকারি যাত্রীবাহী বিমান প্রায় তিন বছর ধরে ভারতের একটি বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বাংলাদেশের ওই বিমানটি ভারতের মাটিতে জরুরী অবতরণ করেছিল ২০১৫ সালে।

তখন থেকেই বিমানটি পার্কিং-এর জায়গা আটকিয়ে রেখেছিল বলে শুক্রবার সেটিকে ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ স্থানান্তরিত করেছে।

ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুরের স্বামী বিবেকানন্দ বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০১৫ সালের ৭ই অগাস্ট মাসকাট থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে বিমানটি জরুরী অবতরণ করতে বাধ্য হয়। ওই এম ডি ৮৩ বিমানের ইঞ্জিনে গুরুতর গণ্ডগোলের জেরে জরুরী অবতরণ করেছিলেন পাইলট।

যাত্রীদের দুদিন পরে অন্য একটি বিমানে করে নিয়ে যাওয়া হলেও ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের বিমানটি তখন থেকেই ‘পার্কিং বে’-তে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

রায়পুর বিমানবন্দরের এয়ারপোর্ট ম্যানেজার রাকেশ সহায় বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, “ঢাকা থেকে ইউনাইটেড বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা এসে বিমানের ইঞ্জিনটি বদল করেছিলেন। কিন্তু তারপরেও ওরা বিমানটি ফেরত নিয়ে যায় নি। এদিকে আমাদের বিমানবন্দরের একটা গুরুত্বপূর্ণ সম্প্রসারণের কাজ শুরু হবে। আমাদের ওই জায়গাটার দরকার। শুক্রবার বিমানটিকে আমরা সরিয়ে দিয়েছি।”

শুক্রবার ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের সামনেই ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দাঁড়িয়ে থাকা বিমানটিকে সরিয়ে দেন।
তিনবছর ধরে কেন পড়ে রয়েছে?

মি. সহায় বলছিলেন, “ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ আমাদের যেটা জানিয়েছে, তা হল বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশন অথরিটির কাছ থেকে তারা বিমানটিকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি এখনও পায় নি। সেজন্যই এখানেই রাখা রয়েছে। তিন বছর ধরে বিমানটি এখানে রেখে দেওয়ার কারণে প্রায় ৬০ লক্ষ ভারতীয় টাকা বিলও হয়েছে তাদের।”
কী বলছে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বাংলাদেশ?

সংস্থাটির ডিরেক্টর ইঞ্জিনিয়ারিং অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার এম সাহাবুদ্দিন আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যেটা বলেছে, সেটাই ঘটনা। আমাদের সিভিল এভিয়েশনের কাছ থেকে অনুমতি পাচ্ছি না বলেই বিমানটি সারিয়ে, ইঞ্জিন বদল করার পরেও সেটিকে ঢাকায় আনতে পারছি না।”

“সি এ এ বি বলছে বিমানটিকে তৃতীয় কোনও দেশে নিয়ে যেতে হবে। এরকম একটা নিয়ম আছে ঠিকই, কিন্তু যেহেতু এটা একটা দুর্ঘটনায় পড়া বিমান, তাই অনুমতি দিতেই পারত সিভিল এভিয়েশন অথরিটি। ঢাকায় এনে বিমানটিকে সার্ভিসিং করা যেত। এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি বিমানটিকে ফেরত আনার,” জানালেন মি. আহমেদ।

এর জন্য যে অর্থ দিতে হবে ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে, সেটা দিতে কোনও আপত্তি নেই বলেই জানান তিনি।
কেন জরুরী অবতরণ করতে হয়েছিল?

বিমানটি কেন ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আর ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের বক্তব্যের মধ্যে কোনও ফারাক নেই।

কিন্তু কোন প্রেক্ষিতে জরুরী অবতরণ করতে হয়েছিল আমেরিকার ম্যাকডোনেল ডগলাস সংস্থার তৈরি ওই এমডি ৮৩ বিমানটিকে?

রায়পুরের স্বামী বিবেকানন্দ বিমানবন্দরের এয়ারপোর্ট ম্যানেজার রাকেশ সহায় বিবিসিকে বলছিলেন, “নাগপুরের কাছাকাছি যখন উড়ছিল বিমানটি, সেই সময়ে এর একটি ইঞ্জিন বসে যায় বা ফেল করে। পাইলট বিমানের মুখ ঘুরিয়ে রায়পুরে জরুরী অবতরণ করতে চান। সঙ্গে সঙ্গেই অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। দুদিন পরে অন্য একটি বিমান এসে যাত্রীদের নিয়ে গিয়েছিল।”

ওদিকে উইং কমান্ডার আহমেদ বলছিলেন, “ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছিল। এটা অস্বাভাবিক কিছু না। আমরা তদন্ত করে দেখেছি যে ওই কোম্পানির তৈরি একই মডেলের অন্য বিমানেও এধরনের ত্রুটি দেখা গেছে। খারাপ হয়ে যাওয়া ইঞ্জিনটা পাল্টে দেওয়া হয়েছে। সেটাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে।”

কিন্তু বিমানটিকে কবে ঢাকায় ফেরত নেওয়া যাবে, সেটাই এখন প্রশ্ন।
বিবিসি বাংলা

Next Post

সন্তোষজনক প্রতিশ্রুতি না পেলে জামায়াত এবার বিএনপির মেয়র বা কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য মাঠে নামবে না।’

রবি জুলাই ২২ , ২০১৮
নিজস্ব প্রতিনিধি : রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসন পেলে সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে সমর্থন দেয়া হবে বিএনপিকে এমন শর্তই দিয়েছে জামায়াত। বিষয়টি নিয়ে দু’দলের মধ্যে ব্যাপক টানাপোড়েন চলছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এক সপ্তাহ রাজশাহীতে অবস্থান শেষে ঢাকায় ফিরলেও জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির টানাপোড়েনের ইতি টেনে যেতে […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links