আভা ডেস্ক : ঈদের পরদিনও রাজধানী ছাড়তে সদরঘাটে ভিড় করেছেন দক্ষিণ জনপদের অনেক যাত্রী। বৃহস্পতিবার ঈদের সরকারি ছুটি শেষ হলেও হাতে আছে শুক্র-শনি দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি। এই সুযোগ কাজে লাগাতে অনেকেই লঞ্চে করে রওনা হয়েছেন বিভিন্ন গন্তব্যে।
যারা নানা কারণে ঈদের আগে গ্রামে যাওয়ার সুযোগ পাননি, তাদের কেউ কেউ স্বজনদের সঙ্গে কয়েকটা দিন কাটাতে লঞ্চে চড়ছেন।
আবার এই সময়টায় ভিড়ের চাপ কম থাকে বলে অনেকে যাচ্ছেন বেড়াতে। কেউ আবার কোরবানির মাংস নিয়ে যাচ্ছেন আত্মীয় স্বজনের বাড়ি।
বিআইডব্লিউটিএর পরিবহন পরিদর্শক (টিআই) মোহাম্মদ সেলিম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় সদর ঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে ১২টি লঞ্চ বিভিন্ন গন্ত্যব্যে ছেড়ে গেছে; সেগুলোতে যাত্রী ছিল কানায় কানায় ভরা। তবে ঢাকায় ফেরা লঞ্চগুলো অনেকটাই ফাঁকা।
মিতালী লঞ্চে কথা হয় আব্দুল হাকিম ও তার স্ত্রী তাহেরা বেগমের সঙ্গে; তাদের গন্তব্য চাঁদপুর।
আব্দুল হাকিম বলেন, “ঢাকায় ছেলে ও নাতিদের সঙ্গে ঈদ করেছি। এখন স্ত্রীকে নিয়ে চাঁদপুরে যাচ্ছি।”
সাভারেরে দারুস সুন্না মাদ্রাসার চার ছাত্র মিতালী লঞ্চে করে চাঁদপুরে যাচ্ছেন। তাদের বাড়ি সদর থানার ইব্রাহিমপুরে।
ঈদের পরে কেন যাচ্ছেন জানতে চাইলে মোহাম্মদ আলী নামে একজন বলেন, “মাদ্রাসার কোরবানির চামড়া কালেকশন করার জন্য ঈদের আগে যেতে পারেননি। তাছাড়া কম বয়সী ছাত্ররা ঈদের আগে ছুটি পেয়েছে। বড়রা ঈদের পরে।”
কেবিনের যাত্রী ফয়সাল স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে চাঁদপুর যাচ্ছেন বৃহস্পতিবার।
তিনি বলেন, “ঢাকার নাখালপাড়া বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করেছি। এখন যাচ্ছি শ্বশুরবাড়ি।”
সোয়ারীঘাটে শ্রমিকের পেশায় থাকা লিয়াকত, নুরু মিয়াসহ ছয়জনকে দেখা গেল চাঁদপুরের লঞ্চ ধরছেন।
নুরু মিয়া জানান, তারা কামরাঙ্গীর চরের কয়লার ঘাট এলাকায় থাকেন। বোঝা টানার কাজ করেন সোয়ারীঘাটে।
লিয়াকত বলেন, “ঈদের সময় গরু জবাই, মাংস কাটার কাজ পায়া যায়। তাই ঈদের পরে বাড়ি যাচ্ছি। টাকা আর মাংস দুটোই পেয়েছি।”
পরিবহন পরিদর্শক সেলিম বলেন, ঢাকার ছাড়ার এই ভিড় বৃহস্পতিবার বিকালেও চলবে। ফিরতি পথের যাত্রীদের চাপ শুরু হবে শনিবার থেকে।
যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে সার্বিক নজরদারি বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে নৌ পুলিশের পুলিশ সুপার মো. আতিকুর রহমান বলেন, “সদরঘাটকে কেন্দ্র করে নদীতে এক সঙ্গে ১৩০ জন নৌপুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। সেই সংখ্যক পুলিশ সদস্য যাত্রীদের ফিরে আসা পর্যন্ত নিয়োজিত থাকবে।”
মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহীম খান বলেন, যাত্রীদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের ২৬৭ জন সদস্য পালাবদল করে দায়িত্ব পালন করছেন সদরঘাটে। এছাড়া পুলিশের ২৪ ও বিআইডব্লিউটিএ এর ৩২ সিসি ক্যামেরা দিয়ে সার্বক্ষণিক এসব এলাকা মনিটরিং করা হচ্ছে।
বিডি নিউজ