আজ ঢাকা পুরোনো কারাগারের ভেতরেই আদালত বসানো হয়েছিল।

আভা ডেস্ক : বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এক দুর্নীতির মামলার বিচারের জন্য আজ ঢাকা পুরোনো কারাগারের ভেতরেই আদালত বসানো হয়েছিল।

কিন্তু খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এর প্রতিবাদ জানিয়ে মামলার শুনানিতেই অংশ নেন নি।

খালেদা জিয়াকে আজ ঐ আদালতে হাজির করা হলে তিনি জানিয়েছেন, অসুস্থ হওয়ার কারণে তার পক্ষে বার বার আদালতে আসা সম্ভব নয়। এই আদালতে ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা হওয়ার পর থেকে প্রায় সাত মাস ধরে খালেদা জিয়া এই পুরোনো কারাগারে বন্দী রয়েছেন।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলছেন, পুরোনো কারাগারে আদালত বসানোর বিষয়টি নিয়ে তারা এখন উচ্চ আদালতে যাবেন।

নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কারাগারের প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকে প্রশাসনিক ভবনের নিচ তলায় ছোট একটি কক্ষে অস্থায়ী আদালতের এজলাস সাজানো হয়েছে জিয়া চ্যারিট্যাবল দুর্নীতির মামলায় শুনানির জন্য।

বুধবার বেলা ১২টার দিকে হুইল চেয়ারে করে খালেদা জিয়াকে সেই আদালতে নেয়া হয়। আইনজীবীরা জানিয়েছেন,খালেদা জিয়ার পরনে ছিল বেগুনি রঙের শাড়ি।

আসামীর কাঠগড়ার সামনে তিনি হুইল চেয়ারেই বসা ছিলেন এবং তাঁর পায়ের উপরের অংশ থেকে নিচ পর্যন্ত সাদা চাদর দিয়ে ঢাকা ছিল।

আদালতে তাঁর আইনজীবীরা যাননি। কিন্তু বিএনপি সমর্থক একজন আইনজীবী গোলাম মোস্তফা খান পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।


মি: খান জানিয়েছেন, হুইল চেয়ারে বসা অবস্থায়ই খালেদা জিয়া আদালতে বক্তব্য দিয়েছেন এবং ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

“খালেদা জিয়া আদালতে বললেন যে, আমি আর এখানে আসতে পারবো না। আমার মেডিকেল রিপোর্টগুলো এখানে জমা আছে। আপনারা দেখেন রিপোর্টে কী আছে, আমার অবস্থাটা কীরকম। আমাকে জোর করে এখানে আনা হয়েছে। আমি আর আসবো না।”

“খালেদা জিয়া আরও বলেছেন, এখানে ন্যায় বিচার নেই। যা ইচ্ছা তাই সাজা দিতে পারেন। যত ইচ্ছা সাজা দিতে পারেন। আমি অসুস্থ। আমি বার বার আদালতে আসতে পারবো না।”

আধা-ঘন্টারও কম সময় চলেছে আদালতের কার্যক্রম।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা না আসায় আদালত ১২ এবং ১৩ই সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করে।

পুরোনো কারাগারকে ঘিরে পুরো নাজিমউদ্দিন রোডে নেয়া হয়েছিল পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা।

পুলিশ এবং কারারক্ষীদের নিরাপত্তা বেষ্টনী পার হয়ে আইনজীবী এবং সাংবাদিকদের ঐ আদালতে যেতে হয়।

আদালতের এই এজলাস থেকে অল্প দূরত্বেই খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছে।
জেলে যাওয়ার আগে খালেদা জিয়া একটি মামলার শুনানীতে অংশ নিতে আদালতে গিয়েছিলেন।

তাঁর একজন আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার অভিযোগ করেছেন, পুরোনো এই কারাগারের ভেতরে কোনো গণতান্ত্রিক সরকারের সময়েও কখনও কারও বিচারের জন্য আদালত বসানো হয়নি।

তিনি বলেছেন, “একটি মামলায় সাজা হওয়ার কারণে খালেদা জিয়াকে সেখানে রাখা হয়েছে, সেজন্য পরিত্যক্ত পুরোনো ঐ কারাগারকে আবার কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সেই কারগারের ভিতরে আদালত বসানোকে আইনের পরিপন্থী বলে আমরা মনে করি। এছাড়া সেখানে আদালত বসানোর নোটিশ আমাদের দেয়া হয়নি। সেজন্য আমরা ঐ আদালতে শুনানিতে যাইনি।”

তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেছেন, “খালেদা জিয়া পুরোনো কারাগারের যে অংশে রয়েছেন, সেই অংশটুকুই শুধু জেল হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে। এছাড়া এ কারাগারে এখন জাদুঘরসহ মানুষের বিনোদনের অনেক ব্যবস্থা রয়েছে, সেগুলো উন্মুক্ত। ফলে ফৌজাদারি বিধি অনুযায়ী চিহ্নিত কারাগারের বাইরে আদালত বসানো হয়েছে। খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের এই নোটিশও পাঠানো হয়েছে।”

এসব বিতর্কে জড়িয়েছেন দু’পক্ষের সিনিয়র আইনজীবীরাও।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা অভিযোগ করছেন, নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিচার কার্যক্রম সরকার দ্রুত শেষ করতে চায়। সেকারণে কারাগারের ভিতরে আদালত বসানো হয়েছে বলে তারা মনে করেন।

খালেদা জিয়ার সিনিয়র আইনজীবীরা বুধবার এক বৈঠক করে এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা বলছেন, কারাগারের ভেতরে আদালত বসানোর সরকারি প্রজ্ঞাপন বা সিদ্ধান্তের ব্যাপারে হাইকোর্টে তারা প্রতিকার চাইবেন।

সরকার বলেছে, মামলাটির শুনানিতে গত ছয় মাসে খালেদা জিয়াকে পুরোনো ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসায় অবস্থিত আদালতে হাজির করা যায়নি। সেকারণে এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

সরকার মনে করছে, এর ফলে শুনানিতে খালেদা জিয়ার হাজির হওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়ার হাজিরা দেয়ার সুবিধা এবং নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আইন অনুযায়ী সেখানে অস্থায়ী আদালত বসানো হয়েছে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাসহ ৩৪টি মামলায় খালেদা জিয়া উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। দু’টি মামলায় এখনও জামিন হয়নি।

এই মামলা দু’টি হচ্ছে কুমিল্লায় বাসে অগ্নিসংযোগ, নাশকতা এবং সেই বাসে মানুষ হত্যার অভিযোগে করা মামলা। বিবিসি

Next Post

আগামী ২০ দিনের মধ্যেই গঠিত হতে পারে নির্বাচনকালীন সরকার

বুধ সেপ্টে. ৫ , ২০১৮
আভা ডেস্ক : আগামী ২০ দিনের মধ্যেই গঠিত হতে পারে নির্বাচনকালীন সরকার, তবে এ সরকারে বিএনপির অংশগ্রহণ থাকবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলররা বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০ দিনের […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links