আমি এখনো মরিনি।

আভা ডেস্ক: আমি এখনো মরিনি। এর আগেও আমাকে আট-নয়বার যারা মেরেছে, তারা ইতর প্রকৃতির। কিন্তু একাত্তর টেলিভিশনের মতো একটা চ্যানেল কীভাবে না জেনে না শুনে এমন খবর প্রচার করতে পারে! কোনোভাবেই আমার মাথায় আসে না। আমার বাসার ফোন নম্বর অনেকের কাছেই আছে। একবার ফোন দিয়ে খোঁজ নিলেই তো হয়।‘ ক্ষোভের সঙ্গে বললেন প্রবীণ অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান।

গতকাল সোমবার মধ্যরাতে হঠাৎ খবর রটে যায়, বাংলাদেশের গুণী অভিনয়শিল্পী এ টি এম শামসুজ্জামান মারা গেছেন। ফেসবুকে থেকে খবরটি টেলিভিশনের পর্দায় ব্রেকিং নিউজ হিসেবেও প্রচারিত হয়। এতে এ টি এম শামসুজ্জামানের ভক্তরা মর্মাহত হন। এদিকে খবর নিয়ে জানা যায়, এ টি এম শামসুজ্জামান সুস্থ আছেন। তাঁর মৃত্যুর খবর যখন রটে যায়, তখন তিনি বাসার সামনে একটি দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন। নিজের মৃত্যুর খবর শোনার পর এ টি এম শামসুজ্জামান বিরক্তি আর ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এ টি এম শামসুজ্জামানের স্ত্রী রুনি জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতে হঠাৎ চারিদিক থেকে ফোন আসা শুরু হয়। সবাই জানতে চাইছে, এ টি এম শামসুজ্জামান সাহেব কখন মারা গেছেন। যাঁরা ফোন করছেন, সবাই বলছেন, টেলিভিশন আর ফেসবুকের মাধ্যমে তাঁরা মৃত্যুর খবর জানতে পেরেছেন। আমরা রীতিমতো অবাক, একটা জলজ্যান্ত মানুষকে এভাবে মেরে ফেলতে পারে! একাত্তর টেলিভিশনের মতো একটা চ্যানেল কীভাবে এমন কাজ করতে পারল, তা আমাদের মাথায় আসছে না। আমাদের বাসার ফোন নম্বর দেশের প্রায় সব পত্রিকা আর টেলিভিশন চ্যানেলে আছে। একবার ফোন করে খোঁজ নিলেও তো তাঁরা পারতেন। আমরা খুব বিস্মিত ও হতবাক হয়েছি। এভাবে চলতে থাকলে তো গণমাধ্যমের ওপর জনগণের আস্থা থাকবে না।’

এ টি এম শামসুজ্জামান অসুস্থ ছিলেন? কেন এমন খবর রটেছে? রুনি জামান বলেন, ‘আমরা জানি না কেন এমন খবর রটানো হয়েছে। তিনি পুরোপুরি সুস্থ। আল্লাহর রহমতে বেশ ভালো আছেন। সারা দিন বাসায় ছিলেন। রাতে যখন এই গুজব ছড়ানো হয়, তখন তিনি দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। বারবার কারা যে এমন কাজ করছে!’

রুনি জামান জানান, রমজান মাসে সাধারণত এ টি এম শামসুজ্জামান সাহেব কোনো শুটিং রাখেন না। বাসায় থাকেন। গতকালও বাসায়ই ছিলেন।’

এ টি এম শামসুজ্জামান বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা, পরিচালক, কাহিনিকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপকার ও গল্পকার। অভিনয়ের জন্য কয়েকবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক।

নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতে এ টি এম শামসুজ্জামান ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার ভোলাকোটের বড়বাড়ি আর ঢাকায় থাকতেন দেবেন্দ্র নাথ দাস লেনে। পড়াশোনা করেছেন ঢাকার পোগোজ স্কুল, কলেজিয়েট স্কুল, রাজশাহীর লোকনাথ হাইস্কুলে। তাঁর বাবা নূরুজ্জামান ছিলেন নামকরা উকিল এবং শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। মা নুরুন্নেসা বেগম। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে শামসুজ্জামান ছিলেন সবার বড়।

এ টি এম শামসুজ্জামানের চলচ্চিত্রজীবনের শুরু ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে। প্রথম কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রের জন্য। ছবির পরিচালক ছিলেন নারায়ণ ঘোষ মিতা, এ ছবির মাধ্যমেই অভিনেতা ফারুকের চলচ্চিত্রে অভিষেক। এ পর্যন্ত শতাধিক চিত্রনাট্য ও কাহিনি লিখেছেন। প্রথম দিকে কৌতুক অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রজীবন শুরু করেন তিনি। অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্র পর্দায় আগমন ১৯৬৫ সালের দিকে। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ চলচ্চিত্রে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আলোচনা আসেন তিনি। ১৯৮৭ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘দায়ী কে?’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘চোরাবালি’ ছবিতেও অভিনয় করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে পার্শ্বচরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মাননা অর্জন করেন।

প্রথম আলো।

Next Post

প্রার্ণহানির পরে রেল কতৃপক্ষ।

মঙ্গল জুন ১২ , ২০১৮
রাণীনগর প্রতিনিধি: দুর্ঘটনা ঘটার পর সবার টনক নড়ে। চলে দর্শন পরিদর্শন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। কিন্তু আর ফিরে আসে না দুর্ঘটনায় হারানো জীবনগুলো। পূরণ হয় না স্বজন হারানো ক্ষতটি। রঙ্গিন স্বপ্নগুলো আর উড়ে না আকাশে-বাতাসে। দুয়ারে কড়া নাড়ছে আসন্ন ঈদের আনন্দ। নিজের স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে ঢাকা থেকে […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links