আপিল শুনানির উপর ঝুলছে ঐশী রহমানের ভাগ্য ।

আভা ডেস্কঃ বহুল আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় তাদের মেয়ে ঐশী রহমানের ভাগ্য নির্ভর করছে আপিল বিভাগের রায়ের ওপর। তার আইনজীবীরা আপিল শুনানির অপেক্ষায় আছেন।  এরআগে,  ঐশী রহমানের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে ২০১৭ সালের ৫ জুন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন হাইকোর্ট।

সাজা কমানোর বিষয়ে হাইকোর্ট তার রায়ে পাঁচটি যুক্তি তুলে ধরেন। যুক্তিগুলো হলো—এক. সুস্পষ্ট উদ্দেশ্য ছাড়া ও মানসিক বিচ্যুতির কারণে ঐশী জোড়াখুনের ঘটনা ঘটান। তিনি অ্যাজমা ও ওভারি সিস্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। দুই.  তার (ঐশী) দাদি ও মামাও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। তিন. ঘটনার সময় তার বয়স ১৯ বছরের কাছাকাছি ছিল। চার. ঐশীর বিরুদ্ধে অতীতে ফৌজদারি অপরাধের কোনো রেকর্ড নেই। পাঁচ. ঘটনার দুই দিন পরই সে স্বেচ্ছায় থানায় আত্মসমর্পণ করেন।

রায়ে বলা হয়, ‘মৃত্যুদণ্ডই একমাত্র দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নয়। এটি কার্যকর করলেই যে সমাজ থেকে অপরাধ দূর হয়ে যাবে, তেমনটি নয়। বরং কম সাজাও অনেক সময় সমাজ থেকে অপরাধ দূর করতে সুস্পষ্টভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’

২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর ঐশী রহমানকে মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়ে রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। রায় প্রকাশের পর যাবজ্জীবন দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে আপিল করেন ঐশী রহমান। অন্যদিকে হাইকোর্টের যাবজ্জীবন রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। আপিল নিম্ন-আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল চেয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষ।

এদিকে, ঐশী রহমানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহবুব হাসান রানা বলেন, ‘২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে রায় প্রকাশের পরই ঐশীর পক্ষে আপিল দায়ের করি। আপিলে ঐশীর বয়স, পারিবারিক-মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকার বিষয়গুলো তুলে ধরেছি। এছাড়া হাইকোর্ট কম সাজা দেওয়ার কারণ হিসেবে যে যুক্তিগুলো দেখিয়েছেন, তা   আপিলে তুলে ধরেছি। আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চের বিচার কার্যক্রম শুরু হলে আপিল শুনানির উদ্যোগ নেবো। আপিলে ন্যায়বিচার পাবো বলে আশা করি।’

আপিল বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের মন্তব্য জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ বলেন, ‘ঐশীর বিরুদ্ধে দেওয়া মৃত্যদণ্ড বহালের পক্ষে আপিলে যুক্তি তুলে ধরবো।’

আপিল শুনানি শুরুর বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, ‘যথাযথ প্রক্রিয়া  অনুসরণ করে উপযুক্ত সময়ে ঐশীর আপিল শুনানি শুরু হবে।’

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট চামেলিবাগের বাসা থেকে পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও  তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন মাহফুজের ভাই মশিউর রহমান ওই ঘটনায় পল্টন থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করেন নিহত পুলিশ কর্মকর্তার মেয়ে ঐশী। এই মামলায় ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল রায় দেন। রায়ে ঐশীকে মৃত্যুদণ্ড ও তার বন্ধু মিজানুর

রহমানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ওই বছরের ৬ ডিসেম্বর খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন ঐশী। ডেথ রেফারেন্স ও ঐশীর আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ৫ জুন হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন। হাইকোর্ট ঐশীর মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ঐশী রহমান বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে আছেন।

 

Next Post

ভারত-চীন উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করব -ট্রাম্প

সোম জুন ২২ , ২০২০
আভা ডেস্কঃ লাদাখ সীমান্ত নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতা করার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। করোনাকালে প্রথম নির্বাচনী প্রচারণায় ওকলাহোমায় যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘এটা খুবই কঠিন পরিস্থিতি। আমরা ভারতের সঙ্গে কথা বলছি, চীনের সঙ্গেও কথা বলছি। তারা সেখানে বড় সমস্যায় পড়েছে।’ ভারত ও […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links