গোদাগাড়ীতে ক্ষতির মুখে টমেটো চাষী ও ব্যবসায়ীরা

মোঃ আবু তাহের গোদাগাড়ী (রাজশাহী) জেলা প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রামনগর গ্রামের মাঝখানে হ্যালিপ্যাড মাঠ। মাঠের চারিদিকে খোলা আকাশের নিচে কয়েকটি জমিতে রোদে শুকানো হচ্ছে টমেটো। কিছু কাঁচা সবুজ রঙের। আবার কিছু হালকা হলুদ বা হালকা লাল রংয়ের। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে চাষকৃত কাঁচা টমেটো কিনে এনে ব্যবসায়ীরা প্রক্রিয়াজাতকরণ করে পাকাচ্ছেন। সবুজ থেকে লাল রংয়ে পরিণত করতে টমেটো রোদে শুকানো হচ্ছে।

আবার কোনো কোনোগুলো স্তুপ করে রেখে খড় দিয়ে ঢেঁকে রাখা হয়েছে। যেগুলোতে প্রায় পুরোপুরি লাল রং ধারণ করবে, সেগুলো আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে বাজারজাত করা হবে। এই টমেটোগুলোই চলে যাবে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এভাবে টমেটো প্রক্রিয়াজতের মাধ্যমে বাজারজাত করতে গোদাগাড়ীর এই হ্যালিপ্যাড এলাকার অন্তত ১০টি স্থানে ব্যবসায়ীরা আস্তানা গেঁড়েছেন। তারা অস্থায়ী বাড়ি করে বা বাড়ি ভাড়া নিয়ে ফাঁকা জমি বর্গা নিয়ে সেখানে কাঁচা টমেটো পাকিয়ে বাজারজাত করছেন।

এভাবে গোদাগাড়ীর অন্তত ৩০টি স্থানে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে এই টমেটো ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। গত প্রায় ১৫ দিন ধরে এবারকার মৌসুমের টমেটো বেচাকেনা শুরু হয়েছে গোদাগাড়ীতে। চলবে আগামী আরও প্রায় দুই মাস। এই দুই মাস টমেটোর চরণভূমি বলে খ্যাত গোদাগাড়ীতে শুধুমাত্র টমেটো বেচা-কেনায় হবে প্রায় দেড়শ কোটি টাকার।

ব্যবসায়ীদের দাবি, এবারও বছরের শুরুতেই টমেটোর দাম অনেক বেশি। বেশি দাম দিয়ে কেনার পর সেগুলো বাজারজাত করতে অনেকটা ঝুঁকি নিতে হয় তাদের। এর মধ্যে রয়েছে ভারতীয় আমদানীকৃত টমেটোর প্রভাব। ফলে উচ্চ হারে দাম দিয়ে টমেটো কিনে সেটি বাজারে গিয়ে ভালো দাম না পাওয়া গেলে শুরুতেই ব্যবসায়ীরা ক্ষতিরমুখে পড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে বলেও জানান তারা। গোদাগাড়ীতে মাঠ থেকে এখন কাঁচা টমেটো বেচা-কেনা হচ্ছে এক হাজার টাকা মণ (৪৫ কেজিতে এক মণ ধরা হয়) দরে। সেই টমেটোতে একবার ‘ইথিফন’ ও ‘ডায়াথিন এম’ জাতীয় ওষুধ স্প্রে করা হয়। এরপর তিনধাপে রোদে শুকিয়ে লাল রং ধারণ করতে সময় লাগে প্রায় ১০দিন। তারপর সেই টমেটো বাজারজাত করতে হয়। এবার এই প্রক্রিয়াটি এখন শুরু হয়েছে। তবে টমেটোর পুরো লাল রং গতকাল পর্যন্ত ধারণ না করায় সেটি বাজারজাত এখনো শুরু হয়নি। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যেই দেশের বাজারে নামতে শুরু করবে গোদাগাড়ীর এই টমেটো।

গোদাগাড়ীতে টমেটো কিনতে যাওয়া ঢাকার ব্যবসায়ী আজহার ও গোদাগাড়ী রামনগর লালবাগ এলাকার আব্দুল জাব্বার জানায়, তারা ছয়জন মিলে এ বছর টমেটো ব্যবসা করতে গেছেন তাঁরা।

গত ১০- ১৫ দিন ধরে তাঁরা কাঁচা টমেটো কিনছেন। শুরুতেই তারা ১৩- ১৫ শ টাকা মণ ধরে টমেটো কিনেছেন। গতকাল সেটি নেমে এসেছে ৫০০ থেকে ৭০০  টাকা দরে নেমেছে। বাজারদর নিয়ে বিপাকে পড়েছে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা।

প্রথম দিকে কেনা টমেটোগুলো কৃষকদের কাছ থেকে কেনার সময়ের দাম ছিল ১৮০০ থেকে ২১০০ পর্যন্ত ।

এখন প্রতিদিন বাজার দর কমে যাচ্ছে। এতে করে তারা মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের হাতে ন্যায্য মূল্য তুলে দিতে পারছেন না।

জানতে চাইলে গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহমেদ বলেন, দেশের অন্যান্য জায়গার তুলনায় গোদাগাড়ীতে টমেটো আগে বাজারে আসে। কৃষকরা সহনশীল মাত্রায় ইথিফন ও ডায়াথিন এম ব্যবহার করছেন। এটা আমরা পরীক্ষা করেছি। এছাড়াও গোদাগাড়ীতে টমেটো বাজার সব সময় মনিটরিং করা হচ্ছে। যেহেতু কৃষক টমেটোর ভাল দাম পাচ্ছে, সেহেতু তারা পরিপক্ব টমেটোই বাজারজাত করছেন। অন্যথায় বাজারে দাম পড়ে যাবে।

Next Post

রাজশাহীতে আশ্রয়ন প্রকল্পের উপকার ভোগীদের মাঝে খাদ্যশস্য ও কম্বল বিতরণ

বৃহস্পতি ডিসে. ৮ , ২০২২
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মুজিববর্ষ উপলক্ষে  রাজশাহী পবা উপজেলার হড়্গ্রাম ইউনিয়নের কাশিয়াডাঙ্গা আশ্রয়ন প্রকল্প পরিদর্শন ও উপকার ভোগীদের মাঝে খাদ্যশস্য ও কম্বল বিতরণ করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী। আজ বৃহস্পতিবার (০৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় পবা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিদর্শন শেষে […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links