৩৭ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি, সোয়ান গ্রুপের নামে মামলা

আভা ডেস্কঃ বিক্রির তথ্য গোপন করে প্রায় ৩৭ কোটি টাকার মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ফাঁকির অভিযোগে সোয়ান গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার গ্রুপটির তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে এই মামলা হয় বলে জানিয়েছেন ভ্যাট নিরীক্ষা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মঈনুল খান।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, সোয়ান গ্রুপ ১৩৬ কোটি টাকার বিক্রির তথ্য গোপন করেছে। তদন্ত করে দেখা গেছে , এতে সরকারের ৩৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দেয়া হয়।

সোয়ান গ্রুপের যে তিনটি প্রতিষ্ঠান ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে, সেগুলো হলো সোয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ লি. (ফোম), সোয়ান কেমিক্যালস লি. ও সোয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ লি. (ম্যাট্রেস)। প্রতিষ্ঠান তিনটি মূলত ফোম, ম্যাট্রেস, কেমিক্যালস ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ করে।

সম্প্রতি সোয়ান গ্রুপ চালান ছাড়া সেবা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরকারের বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে বলে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরে অভিযোগ করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি।

এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থার উপপরিচালক মোহাম্মদ সাজেদুল হকের নেতৃত্বে একটি টিম সোয়ান গ্রুপের প্রধান কার্যালয় গুলশানে অভিযান চালায়।

অভিযানে গোয়েন্দার দল দেখতে পান, প্রতিষ্ঠানটি মাসিক দাখিলপত্রে প্রকৃত বিক্রির তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।

অভিযানে বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালিয়ে এবং প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটারে ধারণ করা তথ্য যাচাই করে বিক্রিসংক্রান্ত দলিল উদ্ধার করা হয়। এসব তথ্য ভ্যাট দলিলের সঙ্গে ব্যাপক অসামঞ্জস্য দেখা যায়।

তদন্তে পাওয়া তথ্যানুসারে, সোয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ লি. (ফোম) ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে বিদায়ী ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ১০৫ কোটি ৬১ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির মাসিক ভ্যাট রিটার্নে ৩১ কোটি ১৬ লাখ টাকার বিক্রির হিসাব দেখায়।

ভ্যাট রিটার্ন ও প্রকৃত বিক্রির পার্থক্য পাওয়া যায় ৭৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। প্রকৃত বিক্রির তথ্য গোপন করায় এ ক্ষেত্রে ১১ কোটি ১৭ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দেয়া হয়েছে। যথাসময়ে ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা না দেয়ায় নিয়ম অনুযায়ী ২ শতাংশ হারে জরিমানা হিসেবে ভ্যাট আসে ৯ কোটি ২১ লাখ ২১ হাজার ৮৯৯ টাকা।

এ ছাড়া সোয়ান কেমিক্যালস লি. ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের নভেম্বরে পর্যন্ত ৪৭ কোটি ৬ লাখ ৩০ হাজার ৩৩৯ টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। অথচ মাসিক ভ্যাট রিটার্নে ২৯ কোটি ১৩ লাখ ১০ হাজার ৯২২ টাকা বিক্রি দেখানো হয়েছে।

রিটার্ন ও প্রকৃত বিক্রয়ের পার্থক্য পাওয়া যায় ১৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। বিক্রির তথ্য গোপন করায় এ ক্ষেত্রে ২ কোটি ৬৯ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে। যথাসময়ে সরকারি কোষাগারে জমা না দেয়ায় ২ শতাংশ হারে প্রযোজ্য ভ্যাট আসে ২ কোটি ২ লাখ ৬৩ হাজার ৫৫৪ টাকা।

এ ছাড়া সোয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ লি. ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৮৬ কোটি ৪১ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। অথচ, মাসিক রিটার্নে ৪২ কোটি ৭৪ লাখ টাকার বিক্রির হিসাব প্রদর্শন করেছে। রিটার্ন ও প্রকৃত বিক্রয়ের পার্থক্য পাওয়া যায় ৪৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। প্রকৃত বিক্রির তথ্য গোপন করায় এ ক্ষেত্রে ৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে।

এই ফাঁকির ওপর ভ্যাট আইন অনুসারে ২ শতাংশ হারে সুদ প্রযোজ্য। ফলে এ ক্ষেত্রে ভ্যাট আসে ৫ কোটি ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৭৫২ টাকা।

তদন্তে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠান তিনটির অপরিশোধিত ভ্যাটের পরিমাণ ২০ কোটি ৪০ লাখ ৬৯ হাজার ৪৯৩ টাকা এবং এবং সুদ বাবদ ভ্যাট আসে ১৬ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার ২০৫ টাকা। সব মিলে ভ্যাট ফাঁকি দেয়া হয় মোট ৩৭ কোটি টাকা।

Next Post

রফিক-সাকিবের পাশে মিরাজ

মঙ্গল জানু. ৪ , ২০২২
আভা ডেস্কঃ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ১৩০ রানের লিড পেয়েছে বাংলাদেশ। এতে ৮৮ বলে ৪৭ রান করেন জাতীয় দলের স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। আর তাতে দারুণ একটি মাইলফলক স্পর্শ করলেন তিনি। তৃতীয় বাংলাদেশি ও বিশ্বের ১৬তম ক্রিকেটার হিসেবে এই অলরাউন্ডার এখন টেস্ট ক্রিকেটে ১ হাজার রান ও ১০০ উইকেটের […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links