স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে কেবিনেট সভায় যোগ না দেওয়ার পরামর্শ ।

আভা ডেস্কঃ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকি বেশি থাকায় তাকে কেবিনেট সভায় যোগ না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কেবিনেট সেক্রেটারি।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকি বেশি থাকায় কেবিনেট সেক্রেটারি দুইবার তাকে কেবিনেট সভায় যোগদান না করার পরামর্শ প্রদান করেন। এমনকি একবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে এক সভা থেকে সভা না করেই চলেও আসতে হয়েছিল। সরকার ঘোষিত সরকারি ছুটিকালীন সময়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব, মহাপরিচালকসহ সকল স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, কর্মচারী কোনো ধরনের ছুটি ভোগ না করে নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত থাকেন। যেহেতু আক্রান্ত জনসংযোগ কর্মকর্তা, সচিব, একান্ত সচিব, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সন্নিকটেই অবস্থান করেন। সুতরাং স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ১ জুন থেকে বাসায় হোম আইসোলেশনে থাকতে হয়েছে। অথচ পত্রিকাটিতে (একটি জাতীয় দৈনিক) হোম আইসোলেশনে থাকা সময়টি স্বাস্থ্যমন্ত্রী অফিস করেন না শিরোনাম করে তুলে ধরা হয়েছে।

“গত ২৫ মে ছিল পবিত্র ঈদুল ফিতর। ‘ঈদের ছুটির পর থেকেই মন্ত্রণালয়ে অনিয়মিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী’-শিরোনামে জাতীয় একটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিবৃতিতে বলেন, প্রকৃত ঘটনাটি হচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা গত ২৭ মে থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত হোম কোয়ারেটিনে ছিলেন। তার পূর্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একান্ত সচিব করোনায় আক্রান্ত থাকাকালে আরেক দফা ১৪ দিনের হোম আইসোলেশনে থাকতে হয়েছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে। তারপর স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিব জনাব আলী নূর সপরিবারে করোনায় আক্রান্ত, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নানের স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদও করোনায় আক্রান্ত হন। সচিবালয়ে বর্তমানে মন্ত্রীর দফতরে ৩ জনসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব, উপসচিব, সহকারী সচিব থেকে অন্যান্য কর্মচারীসহ ৪৫ জন করোনায় আক্রান্ত অবস্থায় রয়েছেন। এরকম অবস্থায় নিয়মিত অফিসে আসার বিপরীতে অনলাইনে নির্দেশনাসমূহ বাস্তবায়নে কাজ করে যাওয়াটাও কম জরুরি নয়।”

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে করোনার এই দুঃসময়ে কাজ করতে কেবল সচিবালয়ে এসে বসে থাকাই মন্ত্রীর একমাত্র কাজ নয়। বরং দেশের কোন হাসপাতালে কী কাজ হচ্ছে, মানুষ হাসপাতাল থেকে বিনা চিকিৎসায় ফিরে যাচ্ছে কিনা, চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা, কোনো মানুষ হাসপাতাল থেকে বিনা চিকিৎসায় হাসপাতাল থেকে ফিরে যায় কিনা এগুলো দেখভাল করে ও খোঁজ নিয়ে যথার্থ উদ্যোগ নেয়াটাই এখন আসল কাজ।”

বৃহস্পতিবার সকালে সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দফতরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক অনির্ধারিত বৈঠকে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী অফিস করেন না’ এই শিরোনামেই গলদ রয়েছে।’
প্রকৃতপক্ষে, হোম আইসোলেশনে থাকা অবস্থাতেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এমনকি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেবল ২৫

মে নয়, গত ৮ মার্চ, ২০২০ দেশে প্রথম করোনা আক্রান্তের আগে থেকেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, সচিব, হাসপাতাল পরিচালক, সিভিল সার্জন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই মতবিনিময় সভা এবং পরবর্তীতে নিয়মিত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনলাইন বৈঠকে দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। দিনের বেশির ভাগ সময়ে প্রায় প্রতিদিনই মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী কখনো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অফিসে গিয়ে এবং কখনো মন্ত্রণালয়ে বসে নিয়মিত আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন এবং এখনো নিচ্ছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে উল্লিখিত সংবাদের প্রতিবেদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে পাল্টা প্রশ্ন করেন, “যদি নিষ্ক্রিয়ই থাকতাম তাহলে কিভাবে মাত্র একটি টেস্টিং ল্যাব থেকে ৬৬টি টেস্টিং ল্যাবে পরিণত হলো, মাত্র ১০০ করোনা পরীক্ষা থেকে বৃদ্ধি করে ১৫ থেকে ১৯ হাজারে উত্তীর্ণ হলো। মাত্র ১৫ দিন সময়ে বসুন্ধরায় ২০০০ বেড, উত্তর সিটি কর্পোরেশন মার্কেট ও উত্তরার দিয়া বাড়িতে মোট প্রায় ৩০০০ বেড, আনোয়ার খান মডার্ণ হাসপাতাল, হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল, শিকদার মেডিকেলের মত বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনা চিকিৎসা ও পরীক্ষা ব্যবস্থা শুরু হলো? সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে করোনা চিকিৎসা দেয়া বাধ্যতামূলক হলো। পাশাপাশি শুধু ঢাকায় থাকা কিছু আইসিইউ সুবিধাকে কিভাবে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে পৌঁছে দিতে সক্ষম হলো। মাত্র ১০ দিনে ২০০০ নতুন চিকিৎসক ও প্রায় ৬ হাজার নতুন নার্স নিয়োগ হলো?”

অন্যদিকে, অন্তত ৭০টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন স্থাপনের কাজ, মেডিকেল কলেজে অনলাইনে পড়ালেখা করা, অনলাইনেই পরীক্ষা ব্যবস্থা শুরু করা,সব হাসপাতালে খালি বেড, চিকিৎসক, নার্স সংখ্যার আপডেট তালিকা প্রকাশিত অবস্থায় দৃষ্টিগোচর করার কাজগুলিও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাতে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এত কিছুর পরও স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যবিধি ঠিকভাবে মেনে চলেছেন। কোনো একটি সরকারি ফাইল একদিনের জন্যেও পেন্ডিং অবস্থায় রাখেননি। প্রতিদিনের সরকারি কর্মকাণ্ড প্রতিদিনই সমাপ্ত করেছেন। অথচ পত্রিকায় প্রকাশিত আজকের এধরনের সংবাদের মাধ্যমে জনমনে সবসময় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিবৃতিতে জানিয়েছেন।

যুগান্তর

 

Next Post

রংপুরে আল্লাহ দলের তিন সদস্য র‌্যাবের হাতে আটক ।

বৃহস্পতি জুন ২৫ , ২০২০
রংপুর প্রতিনিধিঃ রংপুর অঞ্চলে জঙ্গি তৎপরতার অভিযোগে আল্লাহর দলের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে রংপুর র‌্যাব-১৩। তাদের তিনজনকে গাইবান্ধার জেলার পলাশবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এরা হলেন- গাইবান্ধার সাদুল্লাহপুর থানার ধারাই গ্রামের মোহাম্মদ কাশের ছেলে আল আমিন (৩৫), পলাশবাড়ি থানার আন্দুয়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে পিটু সুলতান (৩৬) ও বিশ্রামগাছী গ্রামের […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links