আসন্ন সফরকালে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে বন্দী বিনিময় চুক্তির সম্ভাবনা

আভা ডেস্কঃ মালদ্বীপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন সফরকালে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে বন্দী বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আজ মন্ত্রিসভায় ‘এগ্রিমেন্ট বিটুইন দি গভর্নমেন্ট অব দি পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ এন্ড দি গভর্নমেন্ট অব দি রিপাবলিক অব মালডিভস অন ট্রান্সফার অফ প্রিজনারস’ শীর্ষক একটি চুক্তির খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। তিনি গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি এই বৈঠকে অংশ গ্রহণ করেন।

পরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মালদ্বীপে বাংলাদেশের সাজাপ্রাপ্ত ৪৩ জন এবং আরো ৪০ জন বিচারাধীন অবস্থায় বন্দী আছেন। তবে বাংলাদেশে কোনো মালদ্বীপের নাগরিক কারাবন্দি নেই।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, চুিক্ত অনুযায়ী উভয় দেশের মধ্যে বন্দী বিনিময় করা যাবে।

তিনি আরো জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মালদ্বীপ সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপে ‘কোয়ালিফাইড হেলথ প্রফেশনাল’ গ্রহণের জন্য সংশোধিত একটি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা মালদ্বীপের সঙ্গে আমাদের কোয়ালিফাইড হেলথ প্রফেশনাল গ্রহণের জন্য একটা চুক্তি। চুক্তিটি মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মালদ্বীপ গেলে সেখানে এই চুক্তিটা স্বাক্ষরিত হবে। সেই ক্ষেত্রে আমাদের দেশের মেডিক্যাল প্রফেশনাল ক্যাটাগরির বেশকিছু লোক সেখানে যেতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে একটা এমওইউ ছিল, যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের হেলথ প্রফেশনাল যেতেন। মালদ্বীপ ২০২৪ সাল পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করার এবং এটিকে একটি চুক্তির মধ্যে নিয়ে আসার জন্য আগ্রহী।

তাঁরা কোয়ালিফাইড হেলথ প্রফেশনাল, ক্লিনিক্যাল স্পেশালিস্ট, পাবলিক হেলথ স্পেশালিস্ট, ডেন্টাল সার্জন, নার্সেস অ্যান্ড আদার অক্সিলারি স্টাফ নেবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

মন্ত্রিসভা এছাড়াও মিথ্যা উপাধি, অনুমোদনহীন ওষুধের প্রেসক্রিপশন এবং ডিগ্রির অনুকরণ করলে জেল-জরিমানার বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন, ২০২১’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে ।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, অধ্যাদেশগুলোকে আইনে পরিণত করার জন্য একটা বিধান অনুযায়ী ১৯৮৩ সালের একটি অর্ডিনেন্সকে আইনে পরিণত করা হচ্ছে। এতে ৫০ টি ধারা আছে।

আইনে ঢাকায় একটি আয়ুর্বেদিক বোর্ড থাকার কথা বলা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে যে কোনো স্থানে শাখা করা যাবে। আইন অনুযায়ী একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে, চেয়ারম্যান এবং একজন রেজিস্ট্রার থাকবে। বছর শেষে বোর্ড সার্বিক প্রতিবেদন সরকারকে দেবে।

তিনি বলেন, একটি কাউন্সিল থাকবে মেডিক্যাল কাউন্সিলের মতো। তারা একাডেমিক বিষয়গুলো দেখবে। কাউন্সিল তারাই নির্বাচন করবে। তারা না পারলে সরকার চেয়ারম্যান নির্বাচন করে দেবে। কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবে ৩ বছরের জন্য। কাউন্সিলই চেয়ারম্যান নির্বাচন করবে।

কাউন্সিলে ১৬ ক্যাটাগরির সদস্য থাকবেন। এর মধ্যে ৩ জন সংসদ সদস্য যাদের স্পিকার মনোনয়ন দেবেন, ডিজি হেলথ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডিন, বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ডিন, চট্টগ্রাম রাজশাহী ও খুলনা মেডিক্যাল থেকে মেডিসিন অনুষদের একজন ডিন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের যুগ্মসচিব, অর্থ বিভাগের যুগ্মসচিব, বাংলাদেশ ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক বোর্ডের রেজিস্ট্রার, সরকারি পর্যায়ে ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক কলেজের অধ্যক্ষ ও বেসরকারি পর্যায়ে ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক কলেজের অধ্যক্ষ- এরকম প্রায় ১৯-২০ জন সদস্য থাকবেন।

কাউন্সিলের কাজ হলো- ডিপ্লোমা, স্নাতক, স্নাতোকোত্তর ডিগ্রির রেজিস্ট্রেশন, গবেষণা বা বিশেষ শিক্ষা প্রবর্তন করা সহ অন্যান্য গবেষণা, আর্থিক স্বীকৃতি প্রদান এবং প্রকাশনা।

ইউনানি চিকিৎসকরা ‘ডাক্তার’ টাইটেল ব্যবহার করতে পারবেন কিনা- প্রশ্নে তিনি বলেন, সেটা কাউন্সিল নির্ধারণ করবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনে কিছু সাজার বিধানও রাখা হয়েছে। কোনো সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি মিথ্যা উপাধি ব্যবহার করলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদ- বা ১ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দ-ই হতে পারে।

অনুমোদনহীন ওষুধের প্রেসক্রিপশন দিলেও এক বছরের কারাদ- বা ১ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দ- এবং কোনো সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি ডিগ্রির অনুকরণ করলে ৩ বছরের কারাদ- অথবা ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দ-ে দ-িত হবেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার শর্ত অনুযায়ী চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের বিদেশে স্বীকৃতিতে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল করতে একটি আইনের খসড়াও এদিন মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ডব্লিউএইচও এবং তাদের সংশ্লিষ্ট যত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সংস্থা আছে, তাদের একটা সিদ্ধান্ত আছে যে, ২০২৪ সালের মধ্যে সবাইকে একটা মিনিমাম সিস্টেমের মধ্যে, অ্যাক্রেডিটেশনের মধ্যে আসতে হবে। যদি কোন দেশ সেই অ্যাক্রেডিটেশনের মধ্যে না আসে তাহলে সেই দেশের ডাক্তার কিংবা কোন হেলথ টেকনিক্যাল লোকজন অন্যদেশে রিকোগনাইজড (স্বীকৃত) হবে না। তারা বিদেশে চাকরি করতে যেতে পারবে না। শিক্ষার্থীরা অন্য দেশে গিয়ে শিক্ষাও গ্রহণ করতে পারবে না। ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই শর্ত ছিল, কোভিডের কারণে তা ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

সচিব বলেন, উন্নত দেশে যদি আমাদের মেডিক্যাল শিক্ষা বা পেশাকে স্বীকৃতি দিতে হয় কিংবা দেশে এমবিবিএস করার পর শিক্ষার্থীদের অন্যদেশে উচ্চ শিক্ষা নিতে হয় তবে তাদের একটা অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের আওতায় তাকে স্বীকৃতি নিতে হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই আইনটি নিয়ে আসা হয়েছে। সুত্রঃ বাসস

Next Post

বাংলাদেশ ও ফ্রান্স সর্ম্পক আরো জোরদারে আশাবাদি প্রধানমন্ত্রী

রবি ডিসে. ১৯ , ২০২১
আভা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত নভেম্বরে তার ফ্রান্স সফরের ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন আগামী দিনগুলোতে দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও জোরদারের বিষয়ে তিনি আশাবাদি। শেখ হাসিনা বলেন, গত নভেম্বরে তাঁর ফ্রান্স সফরের আলোচনা এবং ফলাফল নিয়ে তিনি সত্যিই খুব খুশি এবং আগামী দিনগুলোতে এই সম্পর্কের গতি বজায় থাকার বিষয়ে […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links