নিজস্ব প্রতিনিধিঃ অপহরণ হয়ে ১১ দিন আটক রেখে ধর্ষণ হওয়া নারী সুবিচার পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আজ ৩ নভেম্বর বেলা ১১টায় রাজশাহী মডেল প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভুগি নারী। এ সময় ভুক্তভুগি নারীর পিতামাতা সঙ্গে ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলন বলা হয়, গত সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখে ভুক্তভুগি নারী ছন্দা (ছন্দনাম)কে নিজ বাড়ির সামন থেকে প্রতিবেশি খিদ্র লক্ষিপুর গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে খায়রুল ইসলাম জোর পূর্বক তুলে নিয়ে যায়। জোরপূর্বক অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে (খায়রুলের বন্ধুর বাড়িতে) ১১ দিন আটক রেখে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন চালান। এ সময় খায়রুলসহ তার একাধিক বন্ধু তাকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করে। এরপর ১২ সেপ্টেম্বর ভুক্তভুগির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে খায়রুল কৌশলে দূর্গাপুর ধোপা পাড়া গ্রামের রবিউলের বাড়ি নিয়ে যায়। রবিউল সম্পর্কে খায়রুলের মামা। রবিউলের বাড়ি থেকে অসুস্থ অবস্থায় ভুক্তভুগির পরিবার ছন্দাকে উদ্ধার করেন।
পরে চিকিৎসা নিয়ে অসুস্থ অবস্থাতেই দুর্গাপুর থানায় মামলা করতে গেলে দুর্গাপুর থানার ওসি খুরশিদা বানু কনা আপোষ মিমাংশা করে দেওয়া হবে মর্মে জানান। ভুক্তভুগি পরিবার আপোষ মিমাংসার কথায় রাজি না হলে বিষয়টি পরে দেখবো বলে মামলা না নিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। পুলিশের অবহেলায় দীর্ঘদিন এখানে ওখানে ঘুরে অবশেষে ২৭ সেপ্টেম্বর এস পি রাজশাহী অফিসে যায় ভুক্তভুগি পরিবার। সেখানে অতিরিক্ত এস পি মাহমুদুল হাসান বিষয়টি শুনে ওসি দুর্গাপুরকে মামলা নিতে নির্দেশ দেন। সেই সাথে ওসি দুর্গাপূরকে কড়া ভাষায় বলেন, এ রকম ঘটনা যেন না ঘটে। ভুক্তভুগি পরিবার দুর্গাপুর থানায় গেলে সেখানে ওসি রাগ করে বলেন, সিনিয়ার অফিসারে নিকট যাওয়া বিষয়টি ভাল লাগলো না। এরপর তিনি ধর্ষণ মামলা না নিয়ে অপহরণ মামলা গ্রহণ করেন। মামলায় ধর্ষণ সম্পর্কে কিছুই লিখেনি ওসি। ওসি ভুক্তভুগিকে বলেন, ধর্ষণ তো তার থানা এলাকায় হয়নি। ধর্ষণ হয়েছে অন্য এলাকায়। অপরহরণ হয়ে তার থানা এলাকায় আনা হয়েছে। তাই এটি ধর্ষণ মামলা না হয়ে অপহরণ মামলা করতে হবে। এদিকে অপহরণ মামলা নিলেও আজ অবদি কোন আসামী ধরেনি পুলিশ। আসামীরা বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে ভয়ভিতি দিয়ে আসছে ভুক্তভুগি ছন্দাসহ তার পরিবারকে। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে পরিবারটি।
পুলিশের অবহেলাকে দায়ি করছে পরিবারটি । সংবাদ সম্মেলনে পরিবারটি ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক আসামীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। প্রথম থেকে দুর্গাপুর থানার ওসি বিষয়টিকে অবহেলায় দেখছে বলে ছন্দা বলেন, ওসি আসামীদের পক্ষে কাজ করছে। তাই ধর্ষণ মামলা না নিয়ে অপহরণ মামলা নিয়েছে । এ দিকে অপহরণ মামলা নিলেও অজ্ঞাত কারণে আসামী ধরছে না পুলিশ।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখ্যপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) বলেন, আমি বিষয়টি জানি না, তবে খোঁজ নিয়ে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কারো অবহেলা থাকলে বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে। ভুক্তভুগির সঠিক বিচার পেতে পুলিশ সর্বাধিক সহযোগিতা করবে। আসামী না ধরার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলে, মামলা যখন হয়েছে আসামী ধরা হবেই। আসামী ধরার বিষয়ে পুলিশের অবহেলার কোন সুযোগ নাই।