আভা ডেস্কঃ কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই মা-ছেলেকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে অভিযুক্ত ঘাতক মোখলেস। এর আগে আরও তিনজনকে একইভাবে কুপিয়ে জখম করে আসে সে। এদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন। একজন হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন।
খুনের নেশায় মত্ত এই যুবক স্থানীয়দের গণপিটুনিতে নিহত হন। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ধামতি ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের পুকুরিয়াপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- রাধানগর গ্রামের মো. শাহ আলমের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৪০) ও ছেলে আবু হানিফ (১২), নুরুল ইসলামের স্ত্রী নাজমা আক্তার (৪০) ও মা মাজেদা বেগম (৬৫)। এ ছাড়া পাশের ছ্যাচড়া পুকুরিয়া গ্রামের বজলু মিয়ার স্ত্রী জাহানারা বেগমও (৩৮) এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। তবে পুলিশ এখনও তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। এদের মধ্যে তিনজনই ঘটনাস্থলে মারা যান। আর মাজেদা বেগমের মৃত্যু হয় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ সময় ঘাতকের দায়ের কোপে নুরুল ইসলামও গুরুতর জখম হয়েছেন।
আর গণপিটুনিতে নিহত ঘাতকের নাম মোখলেসুর রহমান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন দেবীদ্বার থানার ওসি জহিরুল আনোয়ার। তিনি যুগান্তরকে জানান, অভিযুক্ত ঘাতকের নাম মোখলেসুর রহমান। বয়স ৪০। পেশায় রিকশাচালক। সে মাদকাসক্ত ও মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। সে বাড়িতে ঢুকে চারজনকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে স্থানীয়রা তাকে আটক করেন। এ সময় গণপিটুনিতে তার মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, সকালে মোখলেসুর বাড়িতে এসে ঘর থেকে দা নিয়ে প্রতিবেশী নুরুল ইসলামের বাসায় ঢোকে। ঘরে থাকা নুরুল ইসলামের স্ত্রী নাজমা বেগমকে আচমকা কোপাতে শুরু করে। নুরুল ইসলাম স্ত্রীকে বাঁচাতে এলে তাকেও কুপিয়ে জখম করে মোখলেস। তাদের আর্তচিৎকারে নুরুল ইসলামের মা মাজেদা বেগম এগিয়ে এলে তাকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নাজমার।
এর পর মোখলেস রক্তমাখা দা নিয়ে যায় আরেক প্রতিবেশী শাহ আলমের বাড়িতে। সেখানে শাহ আলমের ছেলে স্কুলছাত্র আবু হানিফকে (১০) কিছু বুঝে ওঠার আগেই জবাই করে হত্যা করে। ছেলেকে বাঁচাতে এলে শাহ আলমের স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকেও কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে মোখলেস।
খবর পেয়ে আশপাশের লোকজন মোখলেসকে আটক করে গণপিটুনি দেন। এতে তার মৃত্যু হয়।
প্রতিবেশীরা নুরুল ইসলাম ও মা মাজেদা বেগমকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসকরা মাজেদা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর জখম নুরুল ইসলাম বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসাধীন।
স্থানীয়দের খবরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড পুলিশ সে বিষয়ে এখনও পরিষ্কার নয়। তবে ঘাতক মাদকাসক্ত ও উগ্র প্রকৃতির ছিল বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
যুগান্তর