মোহনপুরে উচ্ছেদ হওয়া প্রবীণবৃদ্ধের খবর নিলেন এমপি ও এডিসি

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মোহনপুরে এসিল্যান্ড কর্তৃক উচ্ছেদ হওয়া প্রবীণ দম্পতি খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন সংবাদটি প্রকাশিত হওয়ায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার পোল্লাকুড়ি গ্রামে এসিল্যান্ড কর্তৃক উচ্ছেদ হওয়া বাড়ি ও প্রবীণ বয়োবৃদ্ধ দম্পতি’র খোঁজ নিতে ঘটনাস্থলে আসেন ৫৪-রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর সংসদ) সদস্য আয়েন উদ্দিন। শুক্রবার (৪ নভেম্বর) বিকাল ৪ টার দিকে তিনি উপজেলার পোল্লাকুড়ি গ্রামে আসেন এবং উচ্ছেদ হওয়া বয়োবৃদ্ধ কাজেম দম্পতির খোঁজ খবর নেন। এসময় তিনি ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানান এবং তাঁদেরকে পূর্ণবাসনের আশ্বাস প্রদান করেন। ঘটনাস্থলে এমপি’র সাথে উপস্থিত ছিলেন মোহনপুর থানা নবাগত ওসি সেলিম বাদশা, ধুরইল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন।

এরপর শনিবার (৫ নভেম্বর) বিকালে সরোজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিহা ফাতেমাতুজ-জোহ্ রা, এসিল্যান্ড প্রিয়াংকা দাশ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বিপুল কুমার মালাকর, ধুরইল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, হরিহর পুর উপ সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শামিমা আকতার, ভুক্তভোগী ও স্থানীয় বাসিন্দাসহ অন্যান্যরা।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) দেখতে পান ওই একই স্থানে আরেকটি বাড়িও সরকারি জমির উপর নির্মিত আছে যেখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেননি এসিল্যান্ড। ওই বাড়ির মালিককে ডেকে সরকারি অংশের উপর নির্মিত স্থাপনা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি)।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক এ প্রতিবেদকের প্রশ্নের উত্তরে জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ হওয়া দম্পতিকে আপাতত  দুই বান্ডিল টিন দিয়ে সহায়তা করার জন্য ইউএনও কে নির্দেশ দিয়েছেন এবং বলেছেন এস্থানে স্থায়ী কিছু করা যাবেনা। পুরো জমিটা সার্ভে করার ভুক্তভোগী দম্পতির পূর্ণবাসনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

যেহেতু গত ২১ জুলাই জেলা প্রশাসন  মোহনপুর উপজেলাসহ তিনটি উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন ঘোষনা করেছে এবং ভূমিহীন ও গৃহহীন অনলাইন ডাটা বেজে তাদের নাম তালিকায় নাই সে ব্যাপারে তাদের কিভাবে পূর্নবাসন করবেন?

এমন প্রশ্নের উত্তরে এডিসি বলেন, সরকারি অন্য কোন প্রকল্প হতে তাদের সাহায্য করা যায় কিনা সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল স্যার সিদ্ধান্ত নিবেন। এদিকে  ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে স্থানীয় সংসদ আয়েন উদ্দিন কাজেম দম্পতিকে দুই বান্ডিল টিন ও নগদ ছয় হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন তাদের খাদ্য ও ঔষধপত্র দিয়ে সাহায্য করছেন।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) বেলা ১১ টায় উপজেলার ধূরইল ইউনিয়নের পোল্লাকুড়ি গ্রামে ১২৪ নম্বর জেএল ১নম্বর খতিয়ান দাগ নম্বর ২৮৮ শ্রেণী ডহর ২৬ শতাংশের কাত দেড় শতক সরকারি জমিতে গড়ে তোলা প্রবীণ বয়োবৃদ্ধের একটি বাড়ি হতে তাদেরকে এক নোটিশের মাধ্যমে উচ্ছেদ করেছেন। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন মোহনপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রিয়াংকা দাশ। এসময় সাথে ছিলেন থানা পুলিশ ও হরিহরপুর উপ সহকারি ভূমি কর্মকর্তা শামিমা আকতার। অভিযান পরিচালনার কেউ বাধা দিতে চাইলে তাকে তিন মাসের জেল দেওয়া হবে জানান সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রিয়াংকা দাশ। জেল খাটার ভয়ে কেউ বাধা দিতে পারেনি। এসময় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে কাজেম দম্পতি বয়োবৃদ্ধের ঘরের টিন ও বৈদ্যুতিক মিটার খুলে নিয়ে যান এসিল্যান্ড। এ ঘটনায় স্থানীয় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠে এবং সংবাদটি  বিভিন্ন মাধ্যমে গুরুত্বসহ প্রকাশিত হয়।

Next Post

নন্দীগ্রামে ৫১তম জাতীয় সমবায় দিবস পালিত

শনি নভে. ৫ , ২০২২
নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ “বঙ্গবন্ধু’র দর্শন সমবায়ে উন্নয়ন” এই প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে  বগুড়ার নন্দীগ্রামে ৫১তম জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে নন্দীগ্রাম উপজেলা সমবায় কার্যালয়ের আয়োজনে এক বর্নাঢ্য র‍্যালী উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র‍্যালী পরবর্তী উপজেলা অডিটোরিয়ামে নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিফা নুসরাত এর সভাপতিত্বে ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links