মেঘ কেটেছে, বাদশার নৌকার পালে নতুন হাওয়া

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজশাহী-২ আসনে আওয়ামী লীগের একটি অংশের বিরোধিতার মুখে পড়া নৌকার আকাশে অবশেষে মেঘ কেটেছে। দলের একটি বড় অংশ নেমে পড়েছে নৌকার কাণ্ডারি ফজলে হোসেন বাদশার পক্ষে। বিশেষ করে প্রচারণা শেষ হবার আগের দিন বিকেলের জনসভা ঘুরিয়ে দিয়েছে ভোটের সম্ভাব্য গতিপ্রকৃতি। একদিকে নৌকা প্রতীক, অন্যদিকে ব্যক্তি ফজলে হোসেন বাদশাকে নিয়ে নগরীর ভোটারদের মধ্যে ইতিবাচক ধারণার কারণে এই আসনে বেড়েছে নৌকার প্রতি সমর্থন।
আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মী ও প্রগতিশীল বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭৩ সালের পর থেকে প্রায় ৫০ বছর রাজশাহী-২ আসনে সংসদ নির্বাচনে কোনোদিন নৌকা জয়ের মুখ দেখতে পায়নি। পুরো সময়টাতেই এখানে জয়জয়কার ছিলো বিএনপির। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ৫০ বছর পর ফজলে হোসেন বাদশার হাত ধরে প্রথম এই আসনে নৌকা জয় পায়। এরপর থেকে টানা তিনবার তিনি নৌকার কাণ্ডারি হিসেবে সংসদ সদস্য হয়েছেন।
সামরিক শাসনের অবসানের পর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই আসতে পারেননি। সেই নির্বাচনে কমিউনিস্ট লীগের প্রার্থী হিসেবে ফজলে হোসেন বাদশা ৩৪ হাজার ২৬৭ ভোট পেয়ে তৃতীয় হন। ২০০২ সালের সিটি নির্বাচনে বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনুর বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে নামা রাকসুর সাবেক ভিপি বাদশার সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রকাশ্য ঐক্য তৈরি হয়। ওই নির্বাচনে সামান্য ব্যবধানে বাদশা হারলেও অভিযোগ ওঠে, বিএনপি কারচুপির মাধ্যমে ফলাফল বদলে দিয়েছে। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে ১৪ দলীয় জোট গঠিত হলে ২০০৮ সালে ৫০ বছর পর প্রথমবারের মতো বাদশার হাত ধরেই এই আসনে নৌকা বিজয়ী হয়।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, ‘যে মানুষটির হাত ধরে এই আসনে ৫০ বছর পর নৌকা জয়ের মুখ দেখেছে, তাকে ঠেকাতে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসরদের অপপ্রচার থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেইসব অপপ্রচার দিয়ে নৌকার বিজয় ঠেকানো যাবে না।’
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দলটির একজন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ও তার পরিবারের কঠোর চাপের কারণে দলের একটি অংশ স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে থাকলেও তাদেরও বেশিরভাগই নৌকার বিপক্ষে ভোট দিতে চান না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মহানগর আওয়ামী লীগের একজন চিকিৎসক নেতা বলেন, ‘আমাদের কিছু করার নেই। কারণ রাজশাহী একটি বিশেষ পরিবারের হাতে জিম্মি। এখন সেই পরিবারের বিরোধিতা প্রকাশ্যে করার সাহস আমাদের অনেকেরই নেই। যদিও ভেতরে ভেতরে পরিস্থিতি ভিন্ন।’ তার দাবি, এই আসনে নৌকার প্রার্থীর পক্ষেই ভোটারদের রায় যাবে।’
নগরীর বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১৫ বছরে তার মেয়াদে এখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। একাধিক প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ হয়েছে। এমপিওভুক্ত হয়েছে সব প্রতিষ্ঠান। ঢাকা-রাজশাহী সরাসরি ট্রেন চালুর বিষয়টি তিনি সংসদে তুলে ধরে সফল হয়েছেন। এর বাইরে বন্ধ বিমানবন্দর চালুর ক্ষেত্রেও মূল ভূমিকা ছিলো তার। রাজশাহী মহানগরীর অবকাঠামোগত উন্নয়নে সবচেয়ে বড় দুটি রাস্তার কাজও তিনিই বাস্তবায়ন করেছেন। ফলে পরীক্ষিত এই নেতার ব্যাপারে সাধারণ ভোটারদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নৌকার বিপক্ষে একটি বিশেষ মহলের চাপ থাকলেও নির্বাচনের কাছাকাছি সময়ে এসে ভোটারদের মধ্যে সেই দ্বিধা কেটে গেছে।
রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সাবেক সভাপতি রমজান আলী বলেন, ‘রাজশাহীতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনীতিতে নৌকার প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশার অবদান অতুলনীয়। এছাড়া সত্যিকারের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কখনোই নৌকা প্রতীকের বাইরে যেতে পারেন না।’

Next Post

রাজশাহী-২: নির্বাচনী আচারণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে রাসিকের ২১ নং কাউন্সিলর আটক

রবি জানু. ৭ , ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজশাহী-২ সদর আসনে ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ একাধিক নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিজাম উল আজিমকে আটক করেছে যৌথ বাহিনীর একটি দল। নির্বাচন উপলক্ষে মোতায়েনকৃত যৌথবাহিনীর একটি দল গভীর রাতে তাকে হাতেনাতে আটক করে। যৌথ বাহিনীর একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। জানা যায়, […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links