আভা ডেস্ক : মৃত্যুর আগে স্মৃতিশক্তি অনেকটাই লোপ পেয়েছিল। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতেন। অভাব ছিল তার নিত্যসঙ্গী। ওষুধ কেনার পয়সাও ছিল না। ফুটবলাঙ্গনের ‘ওস্তাদ’ খ্যাত ওয়াজেদ গাজী। কারও কাছে ‘ওস্তাদ’ কারও কাছে ‘গাজী ভাই’। এ দুই নামের আড়ালে ‘ওয়াজেদ’ নামটাই যেন হারিয়ে গেছে। ২০১৬ সালের মার্চে গুরুতর অসুস্থ হয়ে আরামবাগ ক্লাবে পড়েছিলেন। দু’দিন পর এক ফুটবলার ওয়াজেদ গাজীর নাতিকে ফোন করে তার নানার অবস্থা জানান। পরে ক্লাব থেকে মাইক্রোবাস ভাড়া করে ওস্তাদকে পাঠিয়ে দেয়া হয় যশোরে তার বড় ছেলে হাসান গাজী দুলুর কাছে। দিনদশেক পর দুলু বাবাকে দিয়ে আসেন একমাত্র বোনের বাসায়। তারপর থেকে মেয়ের বাসায় আশ্রয় হয়েছিল অসংখ্য ফুটবলার তৈরির কারিগর ওয়াজেদ গাজীর। ২০১৫ সালে স্ত্রীকে হারিয়ে মুষড়ে পড়েছিলেন। তারও আগে অসুস্থ থাকার সময় পত্নীপুকুরের হালদা রোডের বাড়িটি বিক্রি করতে হয়। কপর্দকশূন্য ওয়াজেদ গাজীর খোঁজ নেয়ার কেউ ছিল না। ফুটবলার, কোচ ওয়াজেদ গাজী খেলার মাঠকে ভালোবেসে সারা জীবন ক্লাব পাড়াতেই কাটিয়ে দিয়েছিলেন। ২০১২ সালের শুরুতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে দিনপনেরো পর আবার মাঠে ঠিকই ফিরে এসেছিলেন। ২০১৩ সালে বিজেএমসি কিংস কাপে খেলতে ভুটান সফরে গিয়েছিলেন। শত বারণ সত্ত্বেও অসুস্থ গাজীকে দলের বাইরে রাখা সম্ভব হয়নি তখন। ২৩০০ মিটার উচ্চতার থিম্পুতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পাঁচতলা টিম হোটেলের সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা করায় আবার হাসপাতালে যেতে হয়েছিল। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ওয়াজেদ গাজী স্বপ্ন দেখেছিলেন মাঠে ফেরার। কামনা করেছিলেন মাঠেই যেন তার মৃত্যু হয়।
যুগান্তর