মুজিববর্ষে বাড়তি ব্যয় না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

আভা ডেস্কঃ জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে মুজিববর্ষের কর্মসূচি গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ‘অহেতুক’ নতুন কর্মসূচি না নিয়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে নিজেদের বাজেট থেকে মানুষের কল্যাণ ও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে এমন কর্মসূচি নেয়ার নির্দেশনা দেন।

সোমবার নিজ কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এমন নির্দেশনা দেন। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘হাওরাঞ্চল সুনামগঞ্জে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে আইনের খসড়া এবং জাতীয় কৃষি সম্প্রসারণ নীতি-২০২০ অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।’

মুজিববর্ষ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘উনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, আমরা প্রিসাইসলি বলে দিয়েছি যে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রত্যেকটা মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তার একটা নোটেবল প্রোগ্রামকে মুজিববর্ষের প্রোগ্রাম হিসেবে ঘোষণা করবে তার নরমাল বাজেট থেকে।

যদি এক্সেপশনাল কোনো কাজ থাকে তার জন্য এক্সট্রা টাকা চিন্তা করা যেতে পারে। কিন্তু বড় বড় বাজেট দিয়ে নতুন কাজ করার দরকার নেই। কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে প্রোগ্রাম নিতে বলা হয়েছে।’

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনে গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীকে সভাপতি করে একটি জাতীয় কমিটি এবং জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামকে সভাপতি করে একটি বাস্তবায়ন কমিটি করে সরকার। এছাড়া বিষয়ভিত্তিক আটটি উপকমিটিও গঠন করা হয়।

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ১০ জানুয়ারি তেজগাঁওয়ে পুরাতন বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের ক্ষণগণনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুজিববর্ষের লোগো উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষ পালনে যেন বাড়াবাড়ি না করা হয় সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে আগেই সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। তবে কিছু কিছু জায়গায় মুজিববর্ষের কর্মসূচি পালনের নামে চাঁদাবাজি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

কিভাবে মুজিববর্ষের কর্মসূচি ঘোষণা করা যায়, সেই উদাহরণও তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, ‘অর্থ বিভাগ মুজিববর্ষ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে প্রোগ্রাম নিল ডিসেম্বরের মধ্যে ছয় লাখ পেনশনারের বাড়িতে বসে পেনশন দিয়ে দেবে। এ প্রোগ্রামটা তারা মুজিববর্ষের প্রোগ্রাম হিসেবে ঘোষণা করেছে।

কোনো কোনো প্রোগ্রাম করতে গিয়ে যদি ফান্ড লাগে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিল্পী আনবেন, এটার জন্য পেমেন্ট করতে হবে। স্টেজ হবে এজন্য আলাদা টাকা দেয়া হবে না, পিডব্লিউডি তার মেইনটেন্যান্স বাজেট থেকে করে দেবে। পেমেন্টের দরকার হলে এএফডি তার বাজেট থেকে করে দেবে, এজন্য আলাদা কোনো টাকা দেয়া হবে না।’

মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর অনির্ধারিত আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মুজিববর্ষে সবাইকে নতুন কিছু করার দরকার নেই। যে প্রোগ্রামটা মানুষের কল্যাণে বা দেশের উন্নয়নে কন্ট্রিবিউট করতে পারি ওটা মুজিববর্ষের সঙ্গে মোর সিনোনিমাস, ওই জাতীয় প্রোগ্রাম, নরমাল যে প্রোগ্রামটা আছে সেটাকে আরও ইফেকটিভ করে দেন।

২০২১ সালের ১৭ মার্চের আগে পদ্মা সেতুর ফিজিক্যাল কাজ শেষ করে দেব, এটাকে মুজিববর্ষের গ্রোগ্রাম হিসেবে ঘোষণা করলাম। এজন্য টাকা লাগবে কিন্তু ওই টাকা তো ওই প্রজেক্টে ধরাই আছে। কাজটা হয়তো আরও ৩ মাস হতো, এটাকে বেশি এফোর্ট দিয়ে মার্চ মাসের মধ্যে করার চেষ্টা করব।

২০১৮ সালের জুলাইয়ে সরকার জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ উদযাপনে ২০২০-২১ সালকে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করে। আর তার জন্ম তারিখ অর্থাৎ ১৭ মার্চ থেকে শুরু হয়ে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত চলবে মুজিববর্ষের কর্মকাণ্ড। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেন শেখ মুজিবুর রহমান। কালক্রমে তার হাত ধরেই বিশ্ব মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে স্থান করে নেয় বাংলাদেশ।

সুনামগঞ্জে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে : হাওরাঞ্চল সুনামগঞ্জে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে আইনের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটা প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ। কনসেপ্টটা উনার কাছ থেকে এসেছে যে, এটা খুব রিমোট এরিয়া।

রিমোট এরিয়াতেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থাকা দরকার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ) সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইনটি নিয়ে এসেছে। এর আগে ৩ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভা বৈঠকে খসড়া আইনটি নীতিগতভাবে অনুমোদন দেয়া হয়।

জাতীয় কৃষি সম্প্রসারণ নীতি অনুমোদন : জাতীয় কৃষি সম্প্রসারণ নীতি-২০২০ অনুমোদন হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এ নীতির মূল লক্ষ্য হচ্ছে সব শ্রেণির কৃষক ও উদ্যোক্তাদের চাহিদাভিত্তিক প্রযুক্তি ও তথ্য সেবা প্রদানের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঘাত সহনশীল, পরিবেশবান্ধব, নিরাপদ, টেকসই ও পুষ্টিসমৃদ্ধ লাভজনক ফসল উৎপাদন নিশ্চিত করা। নীতিতে ৬টি অধ্যায় রয়েছে।

এগুলোর মধ্যে রয়েছে- পটভূমি, ফসল খাতের মূল প্রতিবন্ধকতা, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, কৃষি সম্প্রসারণের ধারণা ও বৈশিষ্ট্য, কৌশলগত সম্প্রসারণ পরিকল্পনা এবং উপসংহার। কৃষি সম্প্রসারণ সেবার বর্তমান অবস্থা, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য এবং পরিকল্পনাগুলো নীতিমালায় বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

যুগান্তর

Next Post

মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় রাসিক মেয়র লিটনকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে শ্রমিক নেতারা ।

মঙ্গল মার্চ ৩ , ২০২০
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে দ্বিতীয়বারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটনকে অভিনন্দন ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। মঙ্গলবার দুপুরে নগর ভবন চত্বরে মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links