আভা ডেস্কঃ দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে মাদক,জুয়া, ধর্ষন অন্যত্তম আলোচিত বিষয়। কিন্তু মাদক নির্মূলে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অন্যান্যা থানা সরব থাকলেও নিশ্চুপ মতিহার থানা। কিন্তু কেন ? মাদক অধ্যষিত এই অঞ্চলের থানায় মাসের পর মাস উদ্ধার নেই বড় মাদকের চালান । তাহলে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে- মতিহার থানা কি মাদকমুক্ত? না কোনভাবেই নয়।
রাজশাহী মাদকের গডফাদাররা এই এলাকাতেই বসবাস করেন। তার নজীর রাজশাহী মহানগর ডিবির হাতে ক্রসফায়ারে নিহত আলো। আলো পরকালে চলে গেছেন ঠিকই কিন্তু রেখে গেছেন তার ব্যবসার উত্তরসূরীদের। কিন্তু পুলিশ মাদক কারবারীদের পাচ্ছেনা কেন? সম্প্রতি মতিহার থানার এএসআই ফিরোজের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীসহ মাদক কারবারীদের সাথে সক্ষ্যতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি এলাকার উঠতি যুবকদের মাদক মামলায় ফাঁসানোর কথা বলেও হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা।কেউ কেউ বাড়ির পোষা খাসি বিক্রি করে আবার কেউবা বাড়ীর টিভি বিক্রি করেও এই এএসআই ফিরোজকে টাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন।
সম্প্রতি রাজশাহী মতিহার এলাকার একজন সুমন নামের কিশোরকে মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে তার কাছে চাঁদা আদায় করার চেষ্টা করছিলেন এএসআই ফিরোজ। তাকে রাস্তায় আটকিয়েও রাখেন। অবশ্য এই ঘটনার চাঁদাবাজী সংক্রান্ত একটি অডিও রেকর্ডিং সাংবাদিকদের হাতে এসে পৌঁছেছে।
এএসআই ফিরোজের অডিও রেকর্ডিং এ যা আছে ঐ রেকর্ডিং এ শোনা যায়, সুমন নামের এক কিশোর এএসআই ফিরোজকে গ্রেফতারের হাত থেকে বাঁচার জন্য গত ০২/০৩/২০২১ তারিখে রাত ২.৩০ মিনিটে ফোন দিয়ে কথিত এক সোর্সের মাধ্যমে টাকা দিতে চাইলে এএসআই ফিরোজ বলেন – আমি সরাসরি টাকা নিতে পছন্দ করি। । সব কিছুতেই ডাইরেক্ট পছন্দ করি। এরপর এএসআই ফিরোজ আবারো বলেন- তুই ফোনে টাকা পয়সার কথা বলিস না। এর মাত্র কয়েক ঘন্টা আগেও অর্থাৎ ০১/০৩/২০২১ তারিখে রাত ১০.৫৪ মিনিটেও এএসআই ফিরোজ সুমন নামের ঐ কিশোরকে ফোন দিয়ে বলেন – টাকা না দিলে তোকে হেরোইন মামলা দিয়ে চালান দেয়া হবে।
এদিকে সার্বিক বিষয়টি জানার পর সাংবাদিকরা ভিডিও রেকর্ডিং চালু করে সুমন নামের ঐ কিশোরকে এএসআই ফিরোজের সাথে কথা বলতে বললে – এএসআই ফিরোজ মোবাইলেই টাকা দাবি করে বসেন।
তবে রাজশাহী নগরীর মতিহার এলাকার বেশ কয়েকটি সূত্র জানায়, রাজশাহী মতিহার থানায় এএসআই ফিরোজ প্রায় ১ বছরের উপরে অবস্থান করছেন। তাই মাদক অধ্যুষিত এই মতিহার এলাকার কম- বেশী সকল মাদক ব্যবসায়ীর সাথেই তার গোপন সম্পর্ক রয়েছে। শুধু তাই নয় এক মাদক ব্যবসায়ীর টাকা আরেক মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আদায় করারো ইতিহাস গড়েছেন এই এএসআই ফিরোজ।
এদিকে রাজশাহী মতিহার থানা এলাকার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দাসহ রাবি ও রুয়েট ক্যাম্পাসের ছাত্র- ছাত্রীরা।সম্প্রতি ঘটেছে কয়েকটি ছিনতাইয়ের মত ঘটনাও।সেই সাথে চুরিও এখন মতিহার থানা এলাকার নিত্ত-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফার্মেসি বিভাগে শিক্ষক এহসান চৌধুরী বলেন- পুলিশ ব্যাস্ত শুধু মাদক নিয়ে চুরি,ছিনতাই রোধে নেই কোন কার্যকারী পদক্ষেপ।কারন মাদক উদ্ধার করলেই পুরস্কার পান পুলিশ সদস্যরা কিন্তু চুরি কিংবা ছিনতাইয়ের জন্য পুরস্কার পাননা বলেই আগ্রহ কম থাকে পুলিশ সদস্যদের।
এ বিষয়ে পরবর্তীতে এএসআই ফিরোজের সাথে সংবাদ বিষয়ে সাংবাদিকরা দেখা করতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের সাফ জানিয়ে দেন – সংবাদ প্রকাশ করে আমার কিছুই করতে পারবেননা। আমি নিচ থেকে উপর পর্যন্ত মেইনটেইন করি।
তবে সম্প্রতি রাজশাহী মহানগরীতে জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক ৯ পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতারপূর্বক বরখাস্ত করেন।শুধু তাই নয় অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগে রাজশাহী মহানগর ডিবির ৪১ পুলিশ সদস্যকে রাতারাতি বদলীর আদেশ দিয়েও রাজশাহী মেট্রো পুলিশে অন্যত্তম নজির স্থাপন করেন এই পুলিশ কমিশনার।
এদিকে রাজশাহী মতিহার থানা এলাকার স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ পুলিশের এহেন কাজে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিকের জোর নজরদারী ও হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। নতুবা পুলিশের গঠনমূলক কাজে পুলিশই এক সময় বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন সংশ্লীষ্ট সচেতন মহল। তথ্য সুত্রঃ উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন