ভোগান্তি’র অপর নাম রাজশাহী আঞ্চলিক শিক্ষা ভবন

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ভোগান্তি’র অপর নাম রাজশাহী আঞ্চলিক শিক্ষা ভবন। গাদাগাদা অভিযোগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ভোগান্তির শিকার শিক্ষকরা। নানা অনিয়ম আর দূর্নীতিতে ছেয়ে গেছে দপ্তরটি। এরই মধ্যে দপ্তরটির পরিচালক ও সহকারী পরিচালককে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেছেন একজন ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ।

ভোগান্তি'র

লিগ্যাল নোটিশের বিষয়ে জানতে গিয়ে ভুক্তভোগী কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, এই দপ্তরটিতে ভোগান্তির শেষ নাই। করোনাকালীন প্রণোদনা পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী শিক্ষকরা। ফাইল ছাড়তে লাগে মোটা অংকের উৎকোচ।

এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার জামবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন ভোগান্তির চরম বিড়ম্বনা শেষে উকিলের মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ মারফত জবাব চেয়েছেন। লিগ্যাল নোটিশে জবাব চাওয়া দুই কর্মকর্তা হলেন, রাজশাহী অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (কলেজ) এর সহকারী পরিচালক ড. আবু রেজা আজাদ ও পরিচালক ড. মোঃ কামাল হোসেন।

লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে- যথারীতি নিময় মাফিক জামবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শূন্য পদে গত ২৫-০১-২০১৮ ইং তারিখে দৈনিক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়।

সেই নিয়োগে ১০-৬-২০১৮ ইং তারিখে অধ্যক্ষ পদে শাহাবুদ্দিন চূড়ান্তভাবে অনুমোদন পান।

গত ৮-১০-২০১৮ ইং তারিখ বিধি মোতাবেক তা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃক পুর্বানুমতি পায়। এরপর কলেজ কতৃপক্ষ ৯-১০-২০১৮ ইং তারিখে শাহাবুদ্দিন কে অধ্যক্ষের নিয়োগপত্র দেন। পূর্বের কলেজ থেকে ১০-১০-২০১৮ ইং তারিখে দায়মুক্তি ছাড়পত্র নিয়ে ১১-১০-২০১৮ ইং তারিখে জামবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন। উক্ত নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী সংগঠিত হয়েছে। ইতিমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ ” বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ প্রনয়ণ করেন যাহা বিগত ১২-৬-১৮ ইং তারিখে। উক্ত নতুন বিধির ১১.১৭ নং অনুচ্ছেদে এই নীতিমালা বর্ণিত প্যার্টনভুক্ত শূন্যপদ এমপিও ভুক্ত হতে পারবেন” উল্লেখ করে বিধান রাখা হয়। বিগত ১৩-১-২০২১ ইং তারিখের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (যার স্মারক নং ৩৭.০২.০০০০.১০৭.৩১.০০২.২০.৩৭) এর মাধ্যমে জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ জারির পূর্বে নিয়োগের কার্যক্রম শুরু হয়ে ১২-৬-২০১৮ তারিখের পরে অবশিষ্ট কার্যক্রম সম্পূন্ন হয় এমন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারী এমপিও ভুক্ত করার জন্য স্ব স্ব অঞ্চলকে নির্দেশ প্রদান করেন। সর্বশেষ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১ গত ২৮ শে মার্চ, ২০২১ প্রকাশিত হয়। এমপিও নীতিমালা-২০২১ এর ধারা ১১.২৭ এর আলোকে অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন সংশ্লিষ্ট কাগজ পত্রাদিসহ গত ৪-৪-২০২১ তারিখে অধ্যক্ষ শুন্য পদে এমপিও ভুক্তির জন্য অনলাইনসহ পরিচালক বরাবর আবেদন করিলে তা রিজেক্ট করে দেন। কোন কারণ ছাড়াই কেন তা রিজেক্ট করলেন এবিষয়ে পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ কামাল হোসেন ও সহকারী পরিচালক ড. আবু রেজা আজাদকে নোটিশ প্রদান করেন  তিনি।

নোটিশে আরো উল্লেখ আছে যে, উভয় (পরিচালক ও সহকারী পরিচালক)  পরস্পর যোগসাজসে গত ১০ -৫-২১ ইং তারিখে সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ ছাড়াই আবেদনটি রিজেক্ট করেন। রিজেক্টের যে সকল কারণ উল্লেখ করা হয় তার সঠিক তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে নয়। তবুও অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন এই সম্পর্কিত কারণের ব্যাখা ও যথাযথ কাগজপত্রাদি দিয়ে পূণরায় আবেদন করেন। কিন্তু সেগুলো পর্যালোচনা না করেই পরিচালক ও সহকারী পরিচালক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তা আবার রিজেক্ট করেন। পরিচালক ও সহকারী পরিচালক ভুল ব্যাখা দিয়ে রিজেক্ট কপিতে তুলে ধরেন। রিজেক্ট কপিতে যোগদানের তারিখ ১১-৬-২০১৮ বলে লিখা হয়, অথচ শাহাবুদ্দিন যোগদান করেন ১১-১০-২০১৮ ইং তারিখে। এদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কতৃক নিয়োগ অনুমোদন হয় ০৮-১০-১৮ ইং তারিখে অথচ রিজেক্ট কপিতে ১৭-১০-১৮ উল্লেখ করে রিজেক্ট করা হয়। যা উক্ত দপ্তরটির পরিচালক ও সহকারী পরিচালকের চরম অদক্ষতা।

গত ১০-১০-১৮ ইং তারিখের পরিচালকের চাহিদা মোতাবেক দায়মুক্তি ও ছাড়পত্র দেওয়া সত্বেও জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ এর ১১.১৭ নং অনুচ্ছেদ ও জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ এর ১১.২৭ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন এমপিও পাইতে হকদার হওয়া সত্বেও পরিচালক ও সহকারী পরিচালক ২০২১ এমপিও নীতিমালা ১২ (ক) অনুচ্ছেদ না থাকা সত্বেও উল্লেখ করে তার এমপিও ভুক্তিটি রিজেক্ট করেন। যা অদক্ষতা ও দ্বায়িত্ব জ্ঞানহীনতার চরম বহিঃপ্রকাশ।

উল্লেখ্য যে,,মাউশির পরিষ্কার নির্দেশনা থাকা সত্বেও একমাত্র হয়রানির উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনা আবারও চাহিয়াছেন যাহা জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা সমূহের পরিপন্থী।

অভিযোগ কারী অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন বলেন, পরিচালকের চাহিদা মোতাবেক প্রয়োজনীয় কাগজাদি দেওয়া সত্বেও তাহা উপেক্ষা ও অবজ্ঞা করিয়া সম্পুর্ণ বিদ্বেষ মুলক ও বে আইনীভাবে আমাকে এমপিও ভুক্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন না করিয়া রিজেক্ট করেন। যাহা পরিচালকের ক্ষমতার অপব্যবহার মাত্র।

অপরদিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পরিচালক ও সহকারী পরিচালক পরিচালক অফিসে নেই। সহকারী পরিচালক ড. আবু রেজা আজাদের অফিসে তালা দেওয়া। অপরদিকে পরিচালকের অফিস খোলা কিন্তু অফিসে পিয়ন ছাড়া তিনি নেই।

একাধিক বার পরিচালক প্রফেসর ড. কামাল হোসেনকে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি। অফিস পিয়নকে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা পরিচালকের বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।

বিশ্বস্ত সুত্র নিশ্চিত করে বলেন পরিচালক ঠিকমত অফিস করেন না।

অফিসের নিচে আসতেই সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কয়েকজন শিক্ষক এগিয়ে এসে বলেন, ভাই এই দপ্তরটির নানা অনিয়ম দুর্নীতি আখড়া হয়ে উঠেছে। এখানে টাকা ছাড়া কোন ফাইল পাস হয় না। চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় শিক্ষকদের।

ঐ সময় পবা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন দু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া করোনা কালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা এখনো পাইনি আমরা। একই অবস্থা তারাও অভিযোগ দিতে এসেছে।

Next Post

কাল থেকে কালান্তরে জ্বলবে এ শোকের আগুন- অর্থমন্ত্রী

রবি আগস্ট ২২ , ২০২১
আভা ডেস্কঃ কাল থেকে কালান্তরে জ্বলবে এ শোকের আগুন বললেন ’অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।  তিনি বলেন, ‘আগস্ট বাঙালির জীবনে বেদনা আর শোকের দুর্বিষহ স্মৃতির মাস। ঘাতকদের অস্ত্রের সামনে ভীত-সন্ত্রস্ত বাংলাদেশ বিহ্বল হয়ে পড়েছিল শোকে আর অভাবিত ঘটনার আকস্মিকতায়। রোববার (২২ আগস্ট) সকালে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links