আভা ডেস্ক : চার দিনের ভারত সফর শেষে দেশে ফিরেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ভারত সরকারের আমন্ত্রণে ২২ জুলাই তিনি দিল্লি যান। সেখান থেকে তিনি বুধবার বিকালে দেশে ফেরেন। এ সফরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন দলটির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সুনীল শুভরায় ও মেজর (অব.) খালেদ আখতার।
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ভারত সফর নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে নানা আলোচনা-পর্যালোচনা। এ সফরে ভারতের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে তার বৈঠক এ আলোচনা-পর্যালোচনাকে আরও উসকে দিয়েছে। বিষয়টি খোলাসা করতে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৯ জুলাই দলের শীর্ষ পর্যায়ের চার নেতাকে সঙ্গে নিয়ে ভারত সফর করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ওই বছরের এপ্রিল মাসে জন্মস্থান ভারতের কুচবিহার এবং এরও আগে ২০১৬ সালের ১৮ জুন চার দিনের সফরে দিল্লি সফর করেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। ওই সফরকে ব্যক্তিগত বলা হলেও রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব, লোকসভার ডেপুটি স্পিকার, কংগ্রেসের সহসভাপতি রাহুল গান্ধী, সাবেক সেনাপ্রধান ও বিবেকানন্দ ফাউন্ডেশনের পরিচালক জেনারেল (অব.) নির্মল চন্দ্র ভিজ, রাজ্যসভার ভাইস চেয়ারম্যানসহ আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন এরশাদ।
এবারের সফরের প্রথম দিনই ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির সাবেক সভাপতি রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। পরদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টার এ বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আরও বেশ ক’জন গুরুত্বপূর্ণ নেতা-মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। আগামী নির্বাচনের আগে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দিল্লি সফর অনেকটাই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেন জাতীয় পার্টির নেতারা। তারা বলেন, বাংলাদেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা ও গণতন্ত্র বজায় রাখার ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টির যে ভূমিকা এ সফরে ভারত কার্যত তারই স্বীকৃতি দিয়েছে। এ সফরের কারণে দলটির নেতাকর্মীদের মনোবলও চাঙ্গা। তারা মনে করেন, ভোটের রাজনীতিতে এ সফর প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে সাধারণ মানুষের জাতীয় পার্টির প্রতি আস্থা আরও বাড়বে। জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার যুগান্তরকে বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ়। তারা বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। আমরাও বাংলাদেশে সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ সফরে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ যুগান্তরকে বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের আগে পার্টি চেয়ারম্যানের দিল্লি সফর খুবই গুরুত্ব বহন করে। ভারত আমাদের প্রতিবেশী বৃহৎ রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্রের সঙ্গে জাতীয় পার্টির সুসম্পর্ক রয়েছে- সফরের মধ্য দিয়ে এই বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে।’
যুগান্তর