বাগমারা এসিল্যান্ডের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে শিক্ষকের অপকৌশল

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ “রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় শিক্ষকের মেরে হাত ভেঙেছে এসিল্যান্ড” এমন গুজব ছড়িয়ে অপপ্রচার করেছে একটি মহল। এমন প্রচারের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে নামে মিডিয়ার অনুসন্ধানী টিম। বেড়িয়ে আসে আসল ঘটনা। এসিল্যান্ডের লাঠির আঘাতে নয় বরং পালাতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে হাত ভাঙ্গে ঐ শিক্ষকের। এমন তথ্য উঠে এসেছে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে।

সরেজমিনে গিয়ে তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১ জুলাই দেশ জুড়ে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে উর্ধ্বতনের নির্দেশে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান, বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ সহ একটি টহল টিম নিয়ে বের হন।  বিকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন এবং পরিদর্শন শেষে শিকদারী বাজারে পৌছান। এরপর পুলিশ হুইসেল (বাঁশি) দিলে লোকজন বিভিন্ন দিকে পালাতে থাকে। এক পর্যায়ে ঐ শিক্ষকের মুখে মাক্স না থাকায়  তিনিও দৌড়ে পালিয়ে সালেহা ইমারত গার্লস স্কুলের দিকে দৌড় দেয়। দৌড়ের এক পর্যায়ে পাঁ পিছলে পড়ে যায়। এতে বেশ আঘাত পায়, এবং পরে জানতে পারে তার হাতে ফ্যাকচার হয়েছে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কিছু স্বার্থান্বেষী  মহল অসৎ উদ্দেশ্যে অসত্য তথ্য দিয়ে অপপ্রচার করে  ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। মুলত মাটি সংশ্লিষ্ট দালাল চক্র এই অপপ্রচার লিপ্ত হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে আব্দুল আজিজ শিক্ষা টিভির ভার্চুয়াল  মিটিং এ অভিযোগ করে বলেন,আমি ডায়বেটিস এর রোগী আমাকে ইনসুলিন নিয়ে চলতে হয়। আর দুই বার হাটঁতে হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আমি ১ জুলাই বিকাল ৫ টা ৩০মিনিটের কিছু দুর হাঁটাহাঁটির পর বাড়ির কেচি গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি। তখন এসিল্যান্ড পুলিশের কাছ থেকে লাঠি নিয়ে আমার হাতে আঘাত করলে আমার হাত ভেঙ্গে যায়। পরে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য ভবানীগঞ্জ বাজারে গিয়ে পরীক্ষা করে জানতে পারি হাতের  হাড় ভেঙে গেছে। তবে শিক্ষা টিভির লাইভে এসে যে সাক্ষাৎকার দেন, তাতে কিছু উত্তর সবার মনে ঘোর পাক খাচ্ছে। শিক্ষক আজিজ বলেন, এসিল্যান্ড লাঠি হাতে তেড়ে আসেন, পরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে পুলিশের হাতে থাকা লাঠি কেড়ে নিয়ে শিক্ষক আজিজের হাতে বাড়ি মারে বলে তিনি বলেন। আসলে ভূমি কমিশনার কখনো হাতে লাঠি নিয়ে জনসাধারণ কে তাড়া করেন না। তিনি হুকুম দিলে পুলিশ লাঠি চার্জ করতে বাধ্য। তাহলে এসিল্যান্ডকেই কেন লাঠি হাতে নিয়ে পিটাতে হবে?

ঘটনার দিনে এসিল্যান্ড থানা পুলিশ সাথে নিয়ে লকডাউন নিষেধাক্কার তদারকি/ পরিদর্শন করছিলেন। তার হাতে লাঠি থাকার প্রশ্নই উঠে না।

মিটিং এ তিনি আরো বলেন যে তিনি ২০ বছর ধরে শিক্ষকতা করেন অথচ সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২০১৩ সাথে স্থাপিত। ২০ বছর ধরে চাকুরী করেন সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

এবিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক আজিজ সাংবাদিকের সামনে কোন কথা বলতে রাজি হননি।

সত্য ঘটনা জানতে, অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায় আসল সত্যটা । স্থানীয়দের কেউ হাতে আঘাতের বিষয় নিশ্চিত তথ্য দিতে পারেনি।  তবে ঘটনার প্রত্যাক্ষদোষী ব্যক্তি বলেন পুলিশের গাড়ি দেখে পালানোর সময় শিক্ষক আজিজ পড়ে গিয়ে হাতে চোট পেয়েছে।

প্রত্যাক্ষদোষীরা জানান, লকডাউনের প্রথম দিন শিকদারী বাজারে প্রশাসনের উপস্থিত টের পেয়ে জমায়েতকৃত জনগন দিক বিদিক ছুটে পালাতে থাকে পরে জানতে পারলাম বির্তকিত সেই শিক্ষক আব্দুল আজিজের হাত ভেঙ্গে গেছে।

বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের পদধারি এক নেতা বলেন,১ লা জুলাই বৃহস্পতিবার আমি শিকদারী বাজারে আমার দোকানে বসে ছিলাম। আগে পুলিশের গাড়ি আসে এবং পরে এসিল্যান্ড এর গাড়ি আসে। এসময় লোকজন দিকবিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে।এরপর এসিল্যান্ড এসে আমার দোকানে ঢুকে আমাকে জিজ্ঞেস করে লকডাউনের সময় দোকান খুলে রেখেছেন কেনো?আমি তখন বলি এটা আমার দোকান এটাই আমার বাসা। তখন তিনি চলে যান। তবে সব সময় মাস্ক পড়ে থাকতে বলেন।

এ ঘটনাকে প্রভাবিত করে ফাঁয়দা হাসিলের চেষ্টায় একটি মহল সুপরিকল্পিত ভাবে ছড়িয়ে দিচ্ছে। তবে বাগমারা সচেতন মহল মনে করেন, সামান্য একটি ঘটনা, এবিষয়ে নিয়ে বাড়াবাড়ির কোন প্রশ্ন উঠে না। যা স্থানীয় প্রশাসনকে প্রশ্নবৃদ্ধ করাই এই কথিত শিক্ষক ও তার সহযোগীদের মুল উদ্দেশ্য।

উল্লেখ্য যে, বাগমারা বেশিদিন কোন সহকারী কমিশনার (ভূমি) থাকতে পারে না। এখানে বেশি সময় ভারপ্রাপ্ত হিসাবে ইউএনও দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। বেশিদিন না থাকার কারণ ভূমি সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী দালাল চক্র। মাহমুদুল হাসান যোগদানের পর থেকে দালাল সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেওয়া হয়।

অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে বাগমারা এসিল্যান্ডের দরবারে হাজির মিডিয়াকর্মীরা। বিষয়টি নিয়ে এসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসানের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেখানে আমার পুলিশ ফোর্স সঙ্গে আছে সেখানে আমার হাতে লাঠি!  এটা কি বিশ্বাস যোগ্য? আমার কাছে অপরাধ যোগ্য কোন কাজ হলে আমি আইনিভাবে জরিমানা বা দন্ড দিবো, এটাই স্বাভাবিক। তবে আমি এখানে আসার পর থেকে সাদাকালো অনেক উদ্দেশ্য বন্ধ করেছি। উন্নয়ন মূলক কাজ করছি। এটাই হয়তো কেউ মানতে পারছে না। আমাকে হটানোর জন্য একটি মহল কাজ করছে বলে আমার মনে হয়। শিক্ষকের হাত ভাঙ্গার বিষয়ে একটি  কথা বলবো, সেটা হলো শিক্ষকের হাঁড় ভেঙেছে এক জায়গায়, যার প্রমান এক্সরে রিপোর্ট এবং ফিল্ম। সেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে একটি জায়গায় ভাঙ্গা। এখন প্রশ্ন হলো যদি লাঠির বাড়িতে ভাঙ্গে তাহলে ঐ জায়গায় কয়েকটি জায়গায় ভাঙ্গার কথা, অথচ একটি জায়গায় ভাঙ্গা। তাহলে স্পষ্ট যে তার হাত লাঠির আঘাতে নয়, পড়ে গিয়ে ভেঙ্গেছে।

এ বিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অর্থোপেডিক্স ডাক্তার বলেন, কারো যখন ডাইবেটিকস হয় তখন অটোমেটিক দেহের হাঁড় নরম বা কমজোরি হয়। আমি ঐ শিক্ষকের এক্সরে রিপোর্ট দেখেছি সেখানে একটি জায়গায় ভাঙ্গা।  যদি লাঠির আঘাতে ভাঙ্গে তাহলে ঐ জায়গায় কুচি বা কয়েকটি জায়গায় ফ্যাকচার হওয়ার কথা। কিন্তু তা নয়। আমার মনে হয়েছে ঐটা পড়ে গিয়ে ভেঙ্গেছে।

বিষয়টি নিয়ে সর্বশেষ বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাক আহমেদের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। পুলিশকে দেখে মাস্কবিহীনরা দিক বিদিক ছুটতে থাকে। এ সময় ঐ শিক্ষকও পালায়। লাঠি দিয়ে মারার মত কোন ঘটনা ঘটেনি। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

Next Post

অবাধ তথ্য প্রবাহ গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার অপরিহার্য শর্ত - জিএম কাদের

শনি জুলাই ১০ , ২০২১
আভা ডেস্কঃ জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, মহামারি করোনাকালে শুধু সিভিল সার্জন ছাড়া ঢাকা জেলার কোন হাসপাতাল থেকে তথ্য পাবে না গণমাধ্যম কর্মীরা,  এটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বেমানান। অবাধ তথ্য প্রবাহ গনতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার অপরিহার্য শর্ত। আজ এক বিবৃতিতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links