আভা ডেস্ক : সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকার টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন ঠিকাদাররা। তিনিসহ অফিসের কয়েকজনের দুর্নীতির কারণে ঠিকাদাররা কর্মবঞ্চিত হয়েছেন দাবি করে অবিলম্বে নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম, সহকারী প্রকৌশলী সরোয়ার হোসেন, এস্টিমেটর অমল রায় এবং কম্পিউটার অপারেটর ইমরানের প্রত্যাহার দাবি করেছেন তারা। রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন সাতক্ষীরার ঠিকাদাররা। তাদের পক্ষে ঠিকাদার খন্দকার আলি হায়দার লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। এ সময় ঠিকাদার মো. রুহুল আমিন, সৈয়দ হারিজ হোসেন, মো. শাহেদুজ্জামান, অসীম কুমার দাস, বাদল, আবদুল হালিম, কাজল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঠিকাদাররা জানান, সম্প্রতি খুলনা সাতক্ষীরা বাগেরহাট প্রকল্পের তিনটি আইডি এবং অগ্রাধিকারমূলক পানি সরবরাহ প্রকল্পের ৮টি টেন্ডার আহ্বান করা হয়। তারা বলেন, ঠিকাদার হিসেবে এসব আইডির মূল্য রেট জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে খুলনায় প্রকল্প পরিচালক (পিডি) অফিসে যোগাযোগ করার কথা বলেন। যোগাযোগ করা হলে সেখান থেকেও একই কথা বলা হয়। তারা বলেন মূল্য রেট না পেয়ে তারা নিজেদের মতো করে দরপত্র জমা দেন। টেন্ডার ওপেনিংয়ের পর দেখা যায়, নির্বাহী প্রকৌশলী তার খয়ের খাঁ দুই-তিনজন ঠিকাদারের রেট ১০% নিুদরে মিলিয়ে দিয়েছেন। প্রশ্ন রেখে তারা বলেন, সাতক্ষীরার ঠিকাদাররা রেট না পেলেও নির্বাহী প্রকৌশলীর প্রিয়ভাজন লোকজন কিভাবে তা পেলেন। এ কাজে মোটা টাকার লেনদেন হয়েছে অভিযোগ করে তারা বলেন, এর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম ছাড়াও সরোয়ার হোসেন, অমল রায়, ইমরানসহ অফিসের কয়েকজন। তারা অভিযোগ করে বলেন, কম্পিউটার অপারেটর ইমরানের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা শতকরা ১০ টাকা হিসাবে অবৈধ টাকা নিয়ে কার্যাদেশ দিয়ে আসছেন। অভিযোগে তারা আরও বলেন, গত ৫ ফেব্রুয়ারি খুলনা সাতক্ষীরা বাগেরহাট প্রকল্পে পাঁচটি টেন্ডার আইডিতে ১২ জন ঠিকাদার অংশগ্রহণ করেন। ওই পাঁচটি টেন্ডারের বিপরীতে ৩০ লাখ টাকা ঘুষ আদায় করে দু’তিনজন ঠিকাদারকে সাত কোটি টাকার কার্যাদেশ দিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী। এর মধ্যে চারটি আইডির কাজ তার নিজের মনোনীত ঠিকাদারকে দিয়েছেন। অভিযোগ করে ঠিকাদাররা বলেন, প্রিয়ভাজন ঠিকাদারদের সঙ্গে নির্বাহী প্রকৌশলীর গোপন ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে। আরেকটি টেন্ডারের পাইপলাইন কাজ মোটা টাকার বিনিময়ে তিনি ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্সকে দিয়েছেন।
ঠিকাদাররা আরও বলেন, টেন্ডার ওপেন করা হলেও তিনি তা সর্বসাধারণের অগোচরে রাখার চেষ্টা করে থাকেন। এর ফলে বঞ্চিত ঠিকাদাররা কে কত রেট দিলেন কিংবা কে কাজ পাচ্ছেন না পাচ্ছেন, তা জানতে পারেন না।
অবিলম্বে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম, সহকারী মো. সরোয়ার হোসেন, এস্টিমেটর অমল রায় ও কম্পিউটার অপারেটর ইমরানকে দুর্নীতির দায়ে সাসপেন্ড এবং তাদের প্রত্যাহারের দাবি জানান ঠিকাদাররা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম বলেন, যা কিছু হয়েছে সবই বিধি মোতাবেক হয়েছে। দুর্নীতির অভিযাগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ছোট ছোট ঠিকাদাররা অনেক সময় কাজ পান না। এতেই তারা সংক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পিডব্লিউডিএর সিডিউল মোতাবেক বাজার অনুযায়ী দরপত্র আহ্বানের নিয়ম রয়েছে। ফলে কোন ঠিকাদার কোন দর দেবেন না দেবেন, তা তার নিজস্ব বিষয়। তিনি আরও বলেন, ‘আমি কাজের অনুমোদন দিতে পারি না। সুপারিশ করি, অনুমোদন দেন ঢাকার প্রকল্প পরিচালক।’
যুগান্তর