হঠাৎ শুনবে আমার ঘটে গেছে প্রাণহানী, যেমন করে সাগর-রুনী আর ঐ যে সূবর্না নদীর ঘটে গেছে জীবন হানী
পেশায় আমি একজন সাংবাদিক : মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতীক, অপেক্ষায় আছি কোনো এক নির্মম মৃত্যুর জন্য অথবা মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা। তবুও ক্ষণে ক্ষণে, দিনে দিনে করে যাবো প্রতিবাদ অন্যায় অবিচার জুলুমের বিরুদ্ধে।
কথা বলার স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য বাঙ্গালী (মানুষ) আন্দোলন সংগ্রাম করেছে ১৯৫২ সালে। জীবন দিয়েছে কথা বলার স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য। কথা বলার দাবী আদায় করেও স্বাধীনতা পায়নি পূর্ব বাংলার বাঙ্গালী। জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন আর পশ্চিমাদের অত্যাচারে জর্জরিত হয়েছে বাঙ্গালী। তাও স্বাধীনতার দেখা পায়নি পূর্ব বাংলার পরাধীন বাঙ্গালীরা। অবশেষে ১৯৭১ পশ্চিমাদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য অস্ত্র হাতে তুলে নিতে ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। লাখো লাখো জনতা ঐক্যের ডাকে সাড়া দিয়ে নিজেদের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য নিজেদের জীবন বাজি রেখে ঝাপিয়ে পড়েছিল স্বাধীনতা যুদ্ধে। ৩০লক্ষ জীবন পশ্চিমাদের হাতে শহীদ হয়ে আর লাখো লাখো মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অবশেষে পশ্চিমাদের হাত থেকে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে ১৯৯৭ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় ছিনিয়ে এনে আমাদের দিয়েছিলেন বাংলাদেশ নামক এই রাষ্ট্র। তখন এই লজ্জিত আমি বাঙ্গালীর জন্মও হয়নি। বাবার বয়স তখন ৯ বছর। আর আমি লজ্জিত বাঙ্গালীর জন্ম হয়েছে ১৯৯৪ সালের পহেলা জানুয়ারি। মায়ের মুখে শুনেছি ৫২এর আন্দোলন এ ছিনিয়ে আনা বাংলা ভাষা। তাই আমিও শিখেছি বাংলা ভাষা। শিক্ষক আর বড়দের কাছ থেকে ধীরে ধীরে জানা হয়েছিল উপরে উল্লেখিত ভাষা আর স্বাধীনতা অতঃপর বিজয়ের লাভের ঘটনাবলী। যখন বয়সের সাথে বিবেক ও বুদ্ধিমত্তা জাগ্রত হয়ে বড় হতে চললাম তখন থেকে ভাষা, স্বাধীনতা, বিজয় সবকিছুই যেন আমার কাছে ঝাপসা হতে লাগলো। আজ বিজয় অর্জনের ৪৭ পরও সবকিছু ঝাপসা হয়ে রয়েছে আমি মূর্খ আর লজ্জিত এক বাঙ্গালীর কাছে। স্বাধীনতা অর্জন করতে গিয়ে লাখো লাখো জীবন চলে গেছে দিয়ে গেছে এক খন্ড ভূমি আর কিছু নয়। যদি তাই না হতো তাহলো কেন স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের সেই বঙ্গবন্ধু বলে আখ্যায়িত শেখ মুজিবুর রহমান পরিবারকে। তা তো বিজয়ের হাজার বছর পর নয়? হাতে গুনা কয়েকটি বছর পরেই। এগুলো কি সাজানো গল্প কেন শুধু প্রশ্ন আসে?? পর্যায়ক্রমে রাষ্ট্র পরিচালনায় চলে আসে সরকার নামক প্রতীকী দলগুলো। আমার কথা গুলো রাজনৌতিক পরিক্রমা তুলে ধরার জন্য নয়। কারো আলোচনা বা সমালোচনা করার কোন ইচ্ছে বা আখাংকা কোনটিই আমার নেই। মূল কথায় চলে আসি সময় সংক্ষিপ্ত কখন কোথায় কিভাবে আমার না হয় আপনার প্রাণ চলে যাবে নতুবা কেউ জানতেও পারবেনা আপনার প্রাণহীন দেহ কোথায় হারিয়ে গেছে। যেমন করে সাংবাদিক দম্পতী সাগর-রুনী, তনু, আর কত শত হাজারো জানা অজানা নামে বেনামে এই যে দুদিন পূর্বে নারী সাংবাদিক পাবনার আনন্দ টিভির জেলা প্রতিনিধি সুবর্ণা আক্তার নদীর জীবন। নিজ বাসার সামনে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। ভূলে গেছেন নাকি মনে আছে? নিশ্চয়ই মনে আছে যেমন সাগর-রুনীর নির্মম খুনের ঘটনা। যারা করেছিল খুন তাদের বিচার তো দূরের কথা এখনো আমি মূর্খ বাঙ্গালী জানতেও পারিনি কে বা কারা খুন করেছিল সাংবাদিক দম্পতী সাগর-রুনীকে। আপনারা জানেন কি? তাও জানি না জানলে হয়তো প্রকাশ হতো কোন খবরের কাগজে না হয় বর্তমান জুগের অনলাইন আর টিভি চ্যানেল গুলোতে। তবে যাই হোক প্রতিবাদ হয়েছে, আন্দোলন হয়েছে বিচারের দাবীতে হয়েছে কত আয়োজন। কিন্তু তাও আজ অবধি বিচার তো দূরের কথা সনাক্ত হয়নি চিন্হিতও হয়নি আলোচিত হত্যা হত্যাকান্ডের রহস্য। সূবর্ণা আক্তার নদী পেশায় সাগর-রুনীর মতই সাংবাদিক। হত্যার পর থেকে আমার জানামতে হত্যার কারন ও হত্যাকারীরা গ্রেপ্তার হয়নি। কিন্তু এই পেশার (সাংবাদিক) সহ দেশের বিবেকে জাগ্রত বিভিন্ন পেশার মানুষেরা তারা সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে সূবর্ণা নদী হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবী জানিয়ে চলেছে। ইতিমধ্যে মানববন্ধন হয়েছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। সংবাদ আর নিন্দার ঝড় বইছে খবরের কাগজে, টিভি চ্যানেল আর অনলাইন গণমাধ্যমে আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তো লেখালেখি তো চলছেই। যারা লেখছে তারাও এই সাংবাদিকতা পেশার লোক বলেন আর ফেইসবুকার বলেন বিবেকবানরাই তীব্র নিন্দা আর বিচারের দাবি করছেন আমিও তাদেরই মতো একজন। যে কিনা শুধু বিচার নয় জানতে চাই সাগর-রুনী হত্যা আর সুবর্ণা নদীসহ যত হত্যা আর নামে বেনামে হয়েছে গুম আর খুন এসবের মূল রহস্য। জানতে বড় ইচ্ছে হয় সাগর-রুনী যেমন ছিল সাংবাদিক ঠিক তেমনি সূবর্ণা আক্তার নদীও সাংবাদিক আর যারা এই হত্যাযজ্ঞের রহস্য উদঘাটন ও বিচারের দাবীতে অবিরাম আন্দোলন আর লেখেই চলেছেন হোক পত্রিকা, অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তারা সবাই সাংবাদিক আর পকৃত মানুষ। আর যারা উচ্চ লেভের সাংবাদিক আর সাংবাদিক সংগঠনের শীর্ষ নেতারা এসব হত্যাকান্ড নিয়ে নিরব নিশ্চুপ হয়ে বসে আছেন তাদের ধিক্কার জানাই। আর মূর্খ (মানুষ) যার নামের পূর্বে যোগ্যতা যদিও না থাকে তাও সাংবাদিক লেখা রয়েছে তাই আমি লজ্জিত আমি বাঙ্গালী তবে হ্যা তোমাদের মতো মত নামধারী সাংবাদিক হতে চাই না। বিচার চাই সাংবাদিক সাগর-রুনী,আর সদ্য নির্মম হত্যার শিকার সাংবাদিক সূবর্ণা নদী হত্যার বিচার ও শাস্তির দাবী জানাচ্ছি এবং সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিচারের জন্য লেখালেখি সহ রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারীদের চিন্হিত করে বিচার না করা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহব্বান করছি।